skip to Main Content

কুন্তলকাহন I সেভেন ওয়ান্ডার

বছরজুড়ে চুলচর্চার পণ্যগুলোর উপাদান তালিকায় চোখে পড়বে এসব নাম। তাই কার্যকারিতা আগেভাগে জানলেই না কাজে লাগানো যাবে সঠিক উপায়ে

২০২৩ সালটা শুধু শুরু ছিল। চুলের যত্নে নিত্যনতুন সামগ্রীর সঙ্গে পরিচিত হয়ে ওঠার জন্য। এবার হবে প্লে, পজ আর রিপিটের খেলা। ২০২৪-এ চুলের যত্নে যোগ হচ্ছে নিত্যনতুন উপাদান। তবে কি ২০২৩ এ যা করা হলো, সব বিফলে গেল? মোটেই না, বরং তার সঙ্গে যুক্ত হতে যাচ্ছে আরও কার্যকর উপাদান; যা চুলে ফিরিয়ে আনবে প্রাণ, দেবে সুস্থতা। গত বছর যেমন চুলের যত্নে সবার নজর কেড়েছে হায়ালুরনিক অ্যাসিড। চুলের স্বাভাবিক আর্দ্রতা ধরে রেখে উজ্জ্বল ভাব ফিরিয়ে আনে বলে সবাই যেন চোখ মুদে ভরসা করে গেছেন এই উপাদানে। এ বছর চুলের যত্নে আরও হাইড্রেটিং ইনগ্রেডিয়েন্ট যোগ হতে যাচ্ছে তালিকায়।
অ্যালোভেরা জুস
অ্যালোভেরা মানেই আরামদায়ক অনুভূতি। অ্যালোভেরা জুসকে গণ্য করা হয় রোদে পোড়া ত্বকের কার্যকর ওষুধ হিসেবে। অর্থাৎ চুলের ক্ষতির কারণ যদি হয়ে থাকে সূর্য্যি মামা, তবে বুড়ো আঙুল দেখানোর এখনই সময়। চুলের সার্বিক সৌন্দর্য রক্ষায় অ্যালোভেরা ব্যবহার করা যায় যেকোনোভাবেই। হোক তা চুল ধোয়ার কাজে, কিংবা হতে পারে চুলে ন্যাচারাল হেয়ার কন্ডিশনিং হিসেবে। কোনো হেয়ারপ্যাকের সঙ্গে মিশিয়ে মাস্ক তৈরিতে অ্যালোভেরা জুসের তুলনা হয় না।
চুলের ভলিউম বাড়াতে, ড্যামেজ ঠিক করতে এবং স্ক্যাল্পের সমস্যায় অ্যালোভেরা জুস ব্যবহার করা যেতে পারে ইচ্ছেমতো। কেমিক্যাল শ্যাম্পুতে বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান থাকায় এখন অনেকে প্রাকৃতিকভাবে চুল পরিষ্কার করতে বেছে নিচ্ছেন এই জুস। এটি স্ক্যাল্পের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর করে খুশকি দূরীকরণে সাহায্য করে। চুলের ধরন যা-ই হোক, অ্যালোভেরাতে সেনসিটিভিটি না থাকলে যে কেউ নির্দ্বিধায় বেছে নিতে পারে দারুণ এই প্রাকৃতিক উপাদান।
ইভনিং প্রিমরোজ অয়েল
চুলের যত্নে হেয়ার অয়েলগুলো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে গেল দু-তিন বছর। একসময় হেয়ার অয়েলকে অকেজো বললেও হেয়ার এক্সপার্টরা এখন বলছেন ভিন্ন কথা। চুলকে সুস্থ রাখতে এবং চুলের গোড়ায় সঠিক পুষ্টি পৌঁছে দিতে অ্যাপ্লাই করা যেতে পারে ইভনিং প্রিমরোজ অয়েল। এতে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড গোড়া শক্ত করে চুলকে আরও ঘন করে। চুলের শুষ্কতা দূর করতে চাইলে নিঃসন্দেহে বেছে নেওয়া যেতে পারে এই অনন্য উপাদান। এ ছাড়া হেয়ার মাস্ক, কন্ডিশনার, শ্যাম্পুতেও ইনগ্রেডিয়েন্ট হিসেবে এ বছর ইভনিং প্রিমরোজ অয়েলের জনপ্রিয়তা বাড়বে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
হর্সটেইল এক্সট্রাক্ট
না না, ঘোড়ার লেজ নিয়ে কথা হচ্ছে না! হর্সটেইল এক্সট্রাক্ট আসলে একটি ছোট চারা গাছের অংশ। চুলকে মজবুত করতে এবং থিকনেস বাড়াতে এটি হতে পারে এক অসাধারণ অপশন। স্ক্যাল্পের সুস্থতায় এর প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বেড়েই চলছে। এতে থাকা সিলিকা চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া কোলাজেন চুলের সার্বিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে। স্ক্যাল্প ট্রিটমেন্ট, হেয়ার সেরাম এবং শ্যাম্পুতেও পাওয়া যাচ্ছে হর্সটেইল এক্সট্রাক্ট।
ট্রায়োলিন
হেয়ার কেয়ার ইন্ডাস্ট্রিতে বেশ কিছুদিন ধরে ট্রায়োলিনের নাম উঠে এসেছে। ব্রাজিলিয়ান অয়েল হিসেবে চুলের যত্নে সবার কাছেই এখন গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে এটি। বড় বড় হেয়ার কেয়ার ব্র্যান্ড যেমন সুপারজিরো, অ্যাপিভিটা, রেভল্যুশন হেয়ার ইত্যাদিতে ট্রায়োলিন ব্যবহার করা হচ্ছে নিশ্চিন্তে। চুল ভাঙা, ফাটা রোধে ম্যাজিকের মতো কাজ করে। চুলকে মজবুত ও চুলের গোড়া শক্ত করে। ভঙ্গুরতার হাত থেকে বাঁচায়। স্ক্যাল্পেও পুষ্টি পৌঁছে দেয়।
স্কোয়ালেন
এটি আসলে ন্যাচারাল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ত্বকের যত্নে ভেগান এই উপাদানের প্রয়োগ হয়ে আসছে বহু বছর ধরে। চুলের যত্নে আবার জনপ্রিয় হয়ে উঠবে এ বছর। হারিয়ে যাওয়া আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে অথবা ময়শ্চার ধরে রাখতে এটি জাদুকরী; ড্রাই স্ক্যাল্প এবং ফ্রিজি হেয়ারের জন্যও ভালো কাজ করে। লাইটওয়েট এবং নন-গ্রিজি হওয়ায় খুব সহজে চুলের সঙ্গে মানিয়ে যায়। চিপচিপে আর ভারী করে ফেলে না। চুলের হাইড্রেটর হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে স্কোয়ালেন অয়েল। কোঁকড়া ও উষ্কখুষ্ক ভাব দূর করে কোমল, ম্যানেজেবল আর উজ্জ্বল করতে এটি হতে পারে নতুন হেয়ারফ্রেন্ডলি অপশন।
পেপটাইড
রক্তসঞ্চালনকে প্রাকৃতিকভাবে স্বাভাবিক রাখতে কাজ করে পেপটাইড। দুই বছর ধরে স্কিন ত্বকযত্নের পণ্যে দেখা মিলেছে এ উপাদানের। এ বছর চুলের যত্নে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। চুলকে তাপ আর সূর্যের ক্ষতি থেকে সুরক্ষিত রাখার পাশাপাশি পুনরুজ্জীবিত করতে পেপটাইড বেশ ভালো ভূমিকা রাখে। শ্যাম্পু, কন্ডিশনার এবং বিভিন্ন ট্রিটমেন্টেও পেপটাইডের ব্যবহার করা হচ্ছে নিশ্চিন্তে। মাথার ত্বকের সুস্থতা নিশ্চিত করে চুলকে প্রাণবন্ত রাখতে কাজ করে এটি। হেয়ার কেয়ারে ২০২৪ সালে শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে এ পেপটাইড।
প্রোবায়োটিক
হেলথ কেয়ার, স্কিন কেয়ার, হেয়ার কেয়ার-প্রোবায়োটিকের গুণের যেন কোনো শেষ নেই। শুধু ইনজেকটেবল সাপ্লিমেন্ট হিসেবেই নয়, এর ব্যবহার আছে সবখানেই। চুলের তেল উৎপাদনের মাত্রা এবং পিএইচের ভারসাম্য বজায় রাখতে প্রোবায়োটিক অত্যন্ত কার্যকর। মাথার ত্বকের সার্বিক সুস্থতা রক্ষায় এর কার্যকারিতা অনেক।
এ ছাড়া চুলের যত্নে হেলদি ডায়েট এবং ধরন বুঝে হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করা জরুরি। কারণ, হেলদি গাট মানেই হেলদি হেয়ার। সঙ্গে কোন উপাদান চুলের সঙ্গে মানানসই, তা বুঝে ব্যবহার করতে টেস্ট অ্যান্ড ট্রায়াল করে দেখা যেতে পারে।

 বিদিশা শরাফ
মডেল: তানজিদা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: তানভীর খান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top