এই শহর এই সময় I রঙিন রাজধানী
নতুন বছরের প্রথম মাসে রাজধানীজুড়ে বসেছিল নানা আয়োজন। রঙিন হয়ে উঠেছিল শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি অঙ্গন। এর মধ্যে দেশের সবচেয়ে বড় চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হয় ২০ জানুয়ারি। চলে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের এবার বসেছিল দ্বাবিংশতম আসর।
‘বেটার ফিল্ম, বেটার অডিয়েন্স, অ্যান্ড বেটার সোসাইটি’ থিম নিয়ে। আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকা, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এবং জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে। রেইনবো ফিল্ম সোসাইটির তত্ত্বাবধানে। তাতে ত্রিশটি দেশের আড়াই শতাধিক চলচ্চিত্র উপভোগের সুযোগ মেলে নগরবাসীর। এবারের আয়োজনের বিশেষ আকর্ষণ ছিল প্রখ্যাত ইরানি চলচ্চিত্রকার মাজিদ মাজিদি, ভারতীয় অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর এবং তার স্বদেশি গায়ক, অভিনেতা ও চলচ্চিত্রকার অঞ্জন দত্তের নেওয়া মাস্টার ক্লাস। এ ছাড়া বিভিন্ন সেমিনার এবং ওয়ার্কশপের ছিল ব্যবস্থা। আয়োজনে ২২টির বেশি ক্যাটাগরিতে দেওয়া হয় পুরস্কার।
এর আগে, ১৪ ও ১৫ জানুয়ারি ঘুড়ি উৎসবে মেতে ওঠেন পুরান ঢাকাবাসী। ‘সাকরাইন উৎসব’ নামে এটি অধিক খ্যাত। ইতিহাস বলে, এটি মূলত পৌষসংক্রান্তি ঘুড়ি উৎসব। শীত মৌসুমের বার্ষিক উদ্যাপন ঘুড়ি উড়িয়ে করা হয়। সংস্কৃত শব্দ ‘সংক্রান্তি’র ঢাকাইয়া অপভ্রংশে ‘সাকরাইন’। একসময় এই উৎসব সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে ছড়িয়ে পড়েছে সর্বস্তরে। সব বয়সী মানুষ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম এতে স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নেয়। এবারও ব্যতিক্রম ঘটেনি। রাজধানীর অন্যান্য অঞ্চল থেকেই শুধু নয়, দেশের নানা প্রান্ত থেকে অনেকে ছুটে এসেছিলেন পুরান ঢাকায়। দুই দিন সকাল থেকে ছাদে ছাদে ছড়িয়ে পড়ে ঘুড়ি ওড়ানোর দারুণ উন্মাদনা। চলে ঘুড়ি কাটাকাটি খেলা। সন্ধ্যা নামতেই আতশবাজির ঝলকানি। পাশাপাশি বরাবরের মতো আড্ডাবাজি, গানবাজনা, খাওয়াদাওয়ার ধুম তো ছিলই!
১৭ জানুয়ারি। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তন সেজেছিল চীনা সংস্কৃতির আদলে। জাঁকজমক আয়োজনে মুহূর্তেই যেন একখণ্ড চীন হাজির হয়েছিল ঢাকাবাসীর সামনে। অনুষ্ঠানের ভাষা, আবহ এবং সাংস্কৃতিক আয়োজনের সিংহভাগই ছিল চীনা। বলছি ‘ভয়েসেস অব স্প্রিং: গোল্ডেন ড্রিমস’-এর কথা। চীনের নতুন বর্ষ উদ্যাপন এবং চীন ও বাংলাদেশের বন্ধুত্বের নজির হিসেবে এই আয়োজন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও চীন দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে। তাতে চীনা শিল্পীদের অ্যাক্রোবেটিক পরিবেশনার সঙ্গে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছিল বাংলাদেশি শিল্পীদের লোকনৃত্য।
ফিলিস্তিনে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে, নাট্যদল প্রাচ্যনাটের থিয়েট্রিক্যাল প্রোডাকশন ‘গাজা মনোলগস, দ্য ল্যান্ড অব স্যাড অরেঞ্জেস’ পরিবেশিত হয় আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে। ১৯ জানুয়ারি। তাতে বিভিন্ন পরিবেশনার পাশাপাশি, ফিলিস্তিনি সাহিত্যিক গাসান কানাফানির গল্পগ্রন্থ ‘দ্য ল্যান্ড অব স্যাড অরেঞ্জেস’ থেকে নির্বাচিত অংশ পাঠ করেন নাট্যদলটির শিল্পীরা। ফুটে ওঠে সহিংসতার ভয়াবহ চিত্র এবং জীবন বাঁচানোর করুণ আর্তনাদ।
লাইফস্টাইল ডেস্ক
ছবি: সংগ্রহ