skip to Main Content

ফরহিম I অন্তরঙ্গ আলাপ

যার জরুরত রোজকার। কখনো সামান্যতেই স্বস্তি, কখনো না হয় চলুক বিশেষ প্যাম্পারিং সেশন। সংকোচে সমস্যা বরং বাড়বে

একদমই ব্যক্তিগত বিষয়। অনেকের কাছে লজ্জারও। তাই এ নিয়ে বলতে, জানতে হাজার রকম অস্বস্তি। কিন্তু এর যোগ রয়েছে পুরো শরীরের সুস্থতার সঙ্গে। ম্যানম্যাটারস নামের একটি ডিজিটাল ক্লিনিকের মাধ্যমে জানা যায়, ইন্টিমেট এরিয়ার সুস্থতা প্রভাবিত করে শরীর এবং যৌন সম্পর্ক। তাই এড়িয়ে যাওয়া মোটেই উচিত নয়!
যত্নে থাকুক ত্বক
পুরুষের ত্বক মেয়েদের তুলনায় পুরু ও মোটা। ঘাম গ্রন্থির পরিমাণও বেশি হয়; বিশেষ করে ইন্টিমেট এরিয়ায়। পুরো শরীরের এই গুরুত্বপূর্ণ অংশের ত্বক পরিষ্কার রাখা, টোনিং ও ময়শ্চারাইজিং করার বিষয়ে সচেতন হলে প্রাথমিকভাবে হাইজিন নিশ্চিত করা সম্ভব।
প্রাণরসের আধিক্যে
ছেলেদের দেহে টেস্টোস্টেরন হরমোনের উপস্থিতি বেশি হওয়ায় মেয়েদের দেহের চেয়ে বেশি ঘাম নিঃসৃত হয়। প্রতিদিনের স্নান সহজ সমাধান হতে পারে ঘাম পরিষ্কার করার জন্য। পরিষ্কার পানির সংস্পর্শে জীবাণু সংক্রমণে বাধা তৈরি হলে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা কমে আসতে পারে। সারা দিন শেষে উষ্ণ কিংবা শীতল পানিতে গোসল ঘাম ধুয়ে ফেলার সঙ্গে সঙ্গে মনকেও করবে শান্ত।
কয়েকটি উপসর্গের মাধ্যমে ইন্টিমেট হাইজিনে কোনো ঘাটতি আছে কি না, তা বোঝা যায়। যেমন দুর্গন্ধ, চুলকানো, অতিরিক্ত ঘাম, র‌্যাশ ও পিম্পল। একটি যথাযথ গ্রুমিং রুটিনের মাধ্যমে ইন্টিমেট হাইজিন নিশ্চিত করা সম্ভব। এর মধ্যে প্রথমে খেয়াল রাখতে হবে ঘাম নিয়ন্ত্রণের দিকে। অতিরিক্ত ঘামের কারণে জীবাণু জমে অস্বস্তিকর গন্ধ তৈরি হয়। কটিসন্ধি, যা প্রচলিত ভাষায় কুঁচকি হিসেবে পরিচিত, সেখানে ঘর্মগ্রন্থি বেশি থাকায় তুলনামূলক বেশি ঘাম হয়। আবার সরাসরি বাতাসের সংস্পর্শে আসে না বলে সহজে ঘাম শুকাতে পারে না। হাইজিন রুটিন নিয়মিত হলে এই অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যার সমাধান সম্ভব।
কাট কাট, ছাঁট ছাঁট
নিয়ম করে ট্রিমিংয়ের প্রয়োজন তো আছেই। ম্যানস্কেপিংকে কোনোভাবেই এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। বিলো দ্য বেল্টের ট্রিমিং নিয়মিত রুটিনে রাখলেই মিলবে সমাধান। এখানে ধরাবাঁধা নিয়মের চেয়ে বেশি প্রয়োজন নিজের শরীরকে বুঝতে পারা। হেয়ার গ্রোথ বুঝে সময় নিয়ে ট্রিমিং সারতে হবে। তবে এর আগে ত্বককে প্রস্তুত করে নেওয়া চাই। না, সে জন্য রাজযজ্ঞের প্রয়োজন নেই। সমাধান পাওয়া যাবে স্নানঘরেই। শর্ট হট শাওয়ার নিতে নিতে এক্সফোলিয়েটিং করে নেওয়া সম্ভব হলে ত্বক থেকে মৃতকোষ সহজে পরিষ্কার হবে। এর ফলে পোরসগুলো খুলে যাবে। ইন্টিমেট এরিয়ায় রেজর ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ, সরাসরি ব্লেডের মতো কোনো কিছুর সংস্পর্শে ত্বকের লোমকূপগুলোতে শক্ত বাম্প তৈরি হতে পারে। এর ফলে ত্বকে অস্বস্তি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। পরিচ্ছন্ন প্রক্রিয়ার শেষ ধাপে স্নানে সমাধান। পরিষ্কার তোয়ালের আরাম-আরাম স্পর্শে সমাপ্তি। কোথাও যেন পানি জমে না থাকে।
আর্দ্রতার মায়ায়
নিয়মিত ময়শ্চারাইজিং প্রোডাক্ট ব্যবহারে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। খসখসে হয় না। বিশেষ করে শেভিং মেথডে যেতে চাইলে, তার আগে ফেনা তৈরি করে—এমন কিছু ব্যবহার জরুরি। শেভিং ক্রিমের প্রলেপ ত্বককে রুক্ষ হওয়া থেকে কিছুটা হলেও সুরক্ষা দেবে। মাইল্ড বডি লোশন ব্যবহারেও উপকার পাওয়া যায়। আর হেয়ার রিমুভাল শেষে সফট বডি ময়শ্চারাইজার মাস্ট। এতে ইচিং কিছুটা কমে আসতে পারে।
রোজকার রুটিন
ইন্টিমেট এরিয়া পরিষ্কার করা আবশ্যক। পানি আর সাবানেই সই; কিন্তু এ ক্ষেত্রে ক্ষারের উপস্থিতি নিয়ে ভাবতে হবে। সাবান, শাওয়ার জেল—যা-ই ব্যবহার করা হোক না কেন, ক্ষারের মাত্রা কতটুকু, সে বিষয়ে জেনে নেওয়া জরুরি। কারণ, মাত্রা বেশি হলে ত্বকের পি এইচ কমে যেতে পারে; যা রুক্ষতার অন্যতম কারণ। জেন্টল ইন্টিমেট ওয়াশ ব্যবহারের মাধ্যমে প্রাইভেট এরিয়া পরিষ্কার করে নেওয়া হতে পারে একটি সমাধান। তা সম্ভব না হলে ক্ষারের পরিমাণ কম এমন শাওয়ার জেল অথবা সোপ ব্যবহার করা যেতে পারে।
পোশাকের বেড়াজালে
ত্বকের সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থান করে পোশাক। আর প্রাইভেট পার্টসের ক্ষেত্রে এটি হচ্ছে আন্ডারওয়্যার। তাই এই ক্লদিং আইটেমের ক্ষেত্রে সচেতনতা জরুরি। বেশি দিন ব্যবহার যেমন উচিত নয়; তেমনি মানের বিষয়ে নিশ্চিত না হয়ে কিনে নেওয়া ঠিক হবে না। কেনার আগে বুঝতে হবে ফ্যাব্রিকের ধরন। সুতিতেই পাওয়া যাবে স্বস্তি; শোষণ করবে ঘাম, বাতাস প্রবাহও সম্ভব হবে। তাই সুতি-ই সই। সিনথেটিক ব্যবহার না করলেই ভালো। সিম লাইনের ফিনিশিং দেখতে হবে মনোযোগ দিয়ে। মসৃণ সেলাই না হলে অস্বস্তি তৈরি হবে।
ফল-জল
ইন্টিমেট হাইজিনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে খাদ্যাভ্যাস। টকজাতীয় ফল, যেমন কমলা ও লেবু ঘামের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। আবার, পালংশাকও খাওয়া যেতে পারে। পর্যাপ্ত পানি, নিয়ম করে গ্রিন টি খেলে মিলতে পারে সমাধান।
নিকট নিশ্বাসে
অন্তরঙ্গ সময়ের পরে শুধুই নিজেকে দেওয়া যেতে পারে কিছু সময়। ইন্টিমেট এরিয়া যত্নের সঙ্গে পরিষ্কার করে নিলে এড়ানো যাবে অনাকাঙ্ক্ষিত সংক্রমণ। নয়তো সুখ থেকে অসুখ হতে পারে; যা মোটেই স্বস্তিকর হবে না। শরীর ও মন—কোনোটার জন্যই নয়। ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধিতে সুচারু হলে তার প্রভাব ব্যক্তিত্বেও পড়বে! আত্মবিশ্বাস নিয়ে প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটানো যাবে।

 সারাহ্ দীনা
মডেল: হাসিন
মেকওভার: জুম্মান হোসাইন
ফ্যাশন ডিরেকশন ও ছবি: রনি রেজাউল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top