ইভেন্ট I টাইমলেস ম্যাগনিফিসেন্স অব দ্য বাংলাদেশি বেনারসি
বেনারসি বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী বুননকৌশল। রেশম সুতায় তৈরি শাড়িতে নান্দনিক নকশার সুন্দরতা প্রকাশিত হয় হস্ততাঁতে। শিল্পীর দক্ষতায় এক একটি শাড়ি হয়ে ওঠে আর্টওয়ার্ক। এই শিল্প নিয়ে দ্য মসলিনের উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছিল দশ দিনব্যাপী একটি প্রদর্শনীর। স্থান রাজধানীর হোটেল লো মেরিডিয়েন। উদ্দেশ্য, বেনারসিকে বিশ্বদরবারে পৌঁছে দেওয়া। এ বিষয়ে দ্য মসলিনের ফাউন্ডার, ডিরেক্টর এবং সিইও তাসনুভা ইসলাম বলেন, ‘বেনারসি বাংলাদেশের ঐতিহ্য। আর আমাদের এ প্রদর্শনী শুধু একটি সাধারণ আয়োজন নয়, বরং আমাদের ঐতিহ্যের উদ্যাপন। বেনারসি বুনে চলেছেন যে শিল্পীরা, তাদের সৃজনশীলতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন।’
আয়োজনের উদ্বোধন হয় ২৮ ফেব্রুয়ারি। বিশেষ সম্মাননা জানানো হয় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বেনারসি তাঁতশিল্পী শামিম আক্তার ও মোহাম্মদ রফিককে। উপস্থিত ছিলেন তাঁতশিল্পের সঙ্গে জড়িত গুণী ও বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা। এ ছাড়া ডাচ, মরক্কো, ব্রাজিল, ফিলিস্তিনসহ বিভিন্ন দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ফ্যাশন ও ব্যবসাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতি আয়োজনকে আরও সমৃদ্ধ করে।
বেনারসি শাড়ি এবং তা থেকে তৈরি বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শিত হয়েছিল উৎসবটিতে। একই সঙ্গে সরাসরি তাঁতির বুননের মুনশিয়ানা দেখার সুযোগ ছিল। শুরুর দিনে বেনারসির ঐতিহ্য নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি পুরোনো দিনের বেনারসি প্রদর্শিত হয়। এর মধ্য দিয়ে অতীতের বেনারসির নকশা সম্পর্কে উপস্থিত অতিথিরা জানতে পারেন।
একটি বিশেষ সেমিনার ছিল আয়োজনের অংশ। ‘মিরপুর বেনারসির সুদিন ফেরাতে পারলে তবেই কাজে আসবে জিআই মর্যাদা’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফ্যাশন, বিউটি ও লাইফস্টাইল-বিষয়ক অগ্রজ সাংবাদিক শেখ সাইফুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার চন্দ্র শেখর সাহা, বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী, মিরপুর বেনারসিপল্লির আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত তাঁতশিল্পী মোহাম্মদ রফিক ও আবদুর রশিদ।
একই ছাদের নিচে বেনারসির নানান রূপ মুগ্ধ করেছে উপস্থিত দর্শকদের। বারো হাত শাড়ি ড্রেপিংয়ের বাইরেও বেনারসি ব্যবহারে তৈরি পোশাক ছিল অন্যতম আকর্ষণ। ফুটওয়্যারে বেনারসি ক্রেতা আকর্ষণ করেছে। হোম ওয়্যারের প্রতি আগ্রহ দেখা গেছে। দেশের মানুষ তো বটেই, ভিনদেশিরাও আগ্রহ নিয়ে এসব পণ্য দেখেছেন। কেনাকাটা করেছেন। উপস্থিত তাঁতিরা তাদের কাজের বিভিন্ন দিক নিয়ে ক্রেতার সঙ্গে আলাপে ছিলেন স্বতঃস্ফূর্ত। ফরমায়েশি বেনারসির প্রতিও আগ্রহী হয়েছেন অনেকে। জেনে নিয়েছেন কীভাবে চাহিদা অনুযায়ী বেনারসি বুনে দিতে পারবেন দক্ষ তাঁতিরা। বয়নশিল্পী-ক্রেতা-বিক্রেতার এই মিলনমেলা বেনারসির প্রতি দেশের মানুষকে আরও আগ্রহী করতে ভূমিকা রাখতে পারে, যা বেনারসিকে বিশ্বদরবারে জায়গা করে নিতে সাহায্য করবে।
ফ্যাশন ডেস্ক
ছবি: দ্য মসলিন-এর সৌজন্যে