ফিচার I বিভ্রাটে ভরসা
বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে বাঁচবার ফুলপ্রুফ বন্দোবস্ত। সংগ্রহে থাকা মাত্র কয়েকটি উপাদানের সাহায্যে। আরও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে স্টাইলিং সারার জন্য
কাভারেজ-সংক্রান্ত সমস্যা কিংবা নিয়ন্ত্রণের অসাধ্য অন্তর্বাস—এমন হাজারো অনাকাঙ্ক্ষিত ফ্যাশন ম্যালফাংশন পুরো লুকের বারোটা বাজিয়ে দিতে পারে অনায়াসে। সঙ্গে আত্মবিশ্বাসেরও। এ ক্ষেত্রে একদম বেসিক কিছু ওয়্যারড্রোব এসেনশিয়ালে বিনিয়োগের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। কারণ, নিপল পেস্টি, ফ্যাশন টেপের মতো আইটেমগুলো পোশাককে পুরো দিন তার জায়গা ধরে রাখার নিশ্চয়তা দেয়। স্টাইলিং সেরে নেওয়া যায় বাড়তি দুশ্চিন্তা বাদেই। তাই এমন ফ্যাশন এসেনশিয়ালের তালিকা করে রাখা চাই আগেভাগেই।
সাইকেলিং শর্ট
ফ্লায়িং স্কার্ট। দ্য আইকনিক মেরিলিন মনরো মোমেন্ট। রুপালি পর্দায় কিংবা ছবিতে চমৎকার দেখালেও বাস্তবে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দিতে পারে যে কাউকে। তাই ফ্লোয়ি পোশাকে এমন উপস মোমেন্ট এড়াতে সংগ্রহে থাকতে পারে সাইকেলিং শর্ট। শুধু কি তাই, গেল বছর ট্রেন্ড চার্টের শীর্ষে উঠে আসে এই ফ্যাশন পিস। তবে জনপ্রিয়তার শুরুটা আরও আগে। নব্বইয়ের দশকে। প্রিন্সেস অব ওয়েলস লেডি ডায়ানার বদৌলতে। ১৯৯১ তে শ্যানেলের স্প্রিং/সামার শোর মঞ্চে ঝড় তোলে সাইকেলিং শর্ট। হাঁটুর একটু ওপরে শেষ হয়ে যাওয়া, হাই ওয়েস্টেড এই স্পোর্টি এসেনশিয়াল নটেড শার্ট দিয়ে পরে র্যাম্প কাঁপিয়েছিলেন মডেলরা। বাকিটা তো ইতিহাস। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ফ্যাশন ম্যালফাংশন থেকে বাঁচিয়ে দিতে পারে ট্রেন্ডি এই পিস। ঝোড়ো বাতাসে পোশাক যখন বেসামাল, তখন যদি বটমে লেয়ার করে পরা থাকে সাইকেলিং শর্ট, আর ভয় কিসের! ফ্লোয়ি ড্রেসের ক্ষেত্রেই এর জরুরত পড়ে বেশি।
ফ্যাশন টেপ
বুব টেপ। লঞ্জারে টেপ বা বডি টেপ নামেও পরিচিত। সেলিব্রিটিদের খুব পছন্দের এ জিনিস, ক্লোজেটের দারুণ কাজের অনুষঙ্গ। গেম চেঞ্জার বললেও ভুল হবে না। প্রতিদিন ব্যবহারের সবচেয়ে আরামদায়ক ব্রা যদি এর কার্যকারিতায় এতটুকু কমপ্রোমাইজ না করেই অনেকটা অদৃশ্যের মতো হয়ে যায়, তাহলে যে অনুভূতি হবে, বডি টেপ ব্যবহারের অনুভব অনেকটা একই রকম। এ ছাড়া কোনো ধরনের অস্বস্তি ছাড়া লো ব্যাক, প্লাঞ্জিং নেকলাইনের পোশাক পরে নেওয়ার জন্য ব্রা-এর দারুণ বিকল্প এটি। সেলিব্রিটি ওয়্যারড্রোবের মাস্ট হ্যাভ আ আইটেম; ব্রেস্টকে জায়গামতো ধরে রাখার জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। নেকলাইনের এদিক-সেদিক সরে যাওয়া রুখতেও দারুণ কার্যকর। এ ছাড়া ফ্যাশন টেপ পরে নিলে ব্রা স্ট্যাপের ইতিউতি উঁকির আশঙ্কা এড়ানো যায় অনায়াসে। এমনকি কাটআউটযুক্ত পোশাকের রিস্ক ফ্যাক্টর কমিয়ে আনতে এটি হতে পারে দারুণ এক ইনভেস্টমেন্ট।
সিলিকন পেস্টি আর অ্যাডহেসিভ ব্রা
ব্রালেস হয়ে ঘুরে বেড়ানোর স্বাধীনতা উপভোগ করতে চাইলে সংগ্রহে রাখতেই হবে এগুলো। স্ট্র্যাপলেস, ব্যাকলেস পোশাকের সঙ্গে তো বটেই, ছোট ছোট ক্রপ টপ আর সুইমওয়্যারের সঙ্গেও এগুলোর সঙ্গত বড় ধরনের ওয়্যারড্রোব ম্যালফাংশনের হাত থেকে বাঁচিয়ে দিতে পারে। এক্সপেরিমেন্টাল সব নেকলাইন পোশাকের সঙ্গে সিলিকন পেস্টি আর অ্যাডহেসিভ ব্রা একদম জুতসই সাপোর্ট দেয়। সঙ্গে স্তনযুগলকেও দেয় যথাযথ আচ্ছাদন। এগুলোর অপশনও রয়েছে মেলা। যেমন নিপল কাভার। যেকোনো ধরনের জটিল পোশাক, একদম স্বচ্ছ কিংবা স্ট্র্যাপলেস, লো-কাট কিংবা ব্যাকলেস—সবের সঙ্গেই পরে নেওয়া যায়। এ ছাড়া বানি শেপড পুশ আপ পেস্টি, ইনভিজিবল ব্রেস্ট-লিফটিং সিলিকন পেস্টি, অ্যাডহেসিভ সিলিকন পোর্টাল ব্রেস্ট লিফট, ক্লিভেজ বুস্টিং লিফটারও মিলবে বাজারে। ক্লিভেজ বুস্টারের আকারে মিলবে ভিন্নতা। কোনোটা উয়িং শেপড, কোনটা সার্কেল শেপড তো কোনোটা ড্রস্টিং সমেত। স্টিকি ট্যাবও থাকতে পারে তালিকায়, আন্ডারওয়্যার অথবা প্লাঞ্জ ব্রা শেপে।
ডিপ প্লাঞ্জ ব্রা
কাভারেজ তো দেবেই, সঙ্গে দেবে যথাযথ সাপোর্ট আর লিফট, ব্রা-এর অস্বস্তিকর উঁকিঝুঁকি ছাড়াই। আর কী চাই! প্লাঞ্জিং অথবা লো কাট নেকলাইনের সঙ্গে পরার উপযোগী এ ব্রাগুলো সাধারণ আন্ডারওয়্যারযুক্ত অ্যাঙ্গেলড কাপের এবং প্যাডেড। এগুলো পরার পর বড় বাস্টলাইনের ইলিউশন তৈরি হয়; দেয় ন্যাচারাল লিফটেড লুক।
অ্যাডহেসিভ থং
দৃশ্যমান প্যান্টিলাইন পুরো লুকের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে? অ্যাডহেসিভ থং হতে পারে সমাধান। আঠালো স্ট্রিপের মাধ্যমে দেহে আটকে যায়; দেয় বেয়ারলি-দেয়ার অনুভূতি। সিমলেস এই আন্ডারওয়্যারগুলো নানা উপাদানে তৈরি হয়ে থাকে; যেমন নাইলন, স্প্যানডেক্স, কটন, লেস, সিল্ক, মাইক্রোফাইবারে। কোনো কোনোটায় থাকে সিলিকনের প্যাডিং। আরও ভালো কাভারেজ দেওয়ার জন্য। তবে কেনার সময় সচেতনতা জরুরি। এতে পরা ও খোলার কাজ সহজে সেরে নেওয়া যাবে।
ন্যুড স্লিপ
শিয়ার ড্রেস ট্রেন্ডে যাদের মন মজেছে, তাদের জন্য মাস্ট হ্যাভ ওয়্যারড্রোব এসেনশিয়াল। নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় এই ক্লদিং পিস মূলত পরা হয় স্বচ্ছ, হালকা পোশাকের নিচে; সি-থ্রু যেন না হয় তা নিশ্চিত করতে। এটি পরার ফলে বাড়তি কাভারেজ মেলে। সেই সঙ্গে পোশাকের শিলুয়েটকে মসৃণ দেখাতে সহায়তা করে, আন্ডারওয়্যারের লাইন দৃশ্যমান হওয়া থেকে বাঁচায়। ওয়্যারড্রোব ম্যালফাংশন প্রতিরোধ করে। তবে স্লিপ পরার আগে সেটার ফিটিং যেন ঠিক হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। সামঞ্জস্য থাকতে হবে পোশাকের রঙের সঙ্গে। আর খেয়াল রাখা চাই স্লিপে যেন কুঁচকে যাওয়া ভাব কিংবা কোনো ভাঁজ না থাকে।
ফ্যাশন ডেস্ক
মডেল: পারিনাজ
মেকওভার: পারসোনা
ওয়্যারড্রোব: কুহু প্লামন্দন
ছবি: কৌশিক ইকবাল