নখদর্পণ I বিস্ময় বলয়
ম্যানিকিউরের এমন ট্রেন্ড অবাক করাই বটে। সৃজনীসৃষ্ট। চেনা ছকের বাইরে এক্সক্লুসিভ লুক তৈরিতে দুর্দান্ত। নখ থেকে চোখ সরবে—সে সাধ্যি কার
পিল-অফ নেইলপলিশ, নেইল স্টিকার বা স্টিক-অনের পর নখ সাজানোর নতুন এ পদ্ধতি মাতাচ্ছে সৌন্দর্যবিশ্ব। ঠিক যেমনটা চাই তেমন করেই নকশা করে নেওয়া যাবে। সরাসরি সংস্পর্শ এবং জটিল কোনো প্রক্রিয়া ছাড়াই। শুধু নিজের পছন্দের ডিজাইন আর শেপ বাছাই করে নিলেই।
রহস্যটা কী
আদতে একধরনের আংটি, যেটি নখে পরা হয়। সুনিপুণভাবে ডিজাইন করা হয়, যেন খুব সহজে নখে আটকে থাকে। সারা দিনের ব্যস্ত হাত দুটোতে সৌন্দর্য সঞ্চারে দারুণ অপশন এটি। পরিচিত অজু নেইল রিং হিসেবেও। মুসলিম নারীদের রেগুলার নেইলপলিশ পরে অজু সারতে বাধা আছে। কারণ, পানি পলিশের স্তর ভেদ করে নখে পৌঁছাতে পারে না। এ ধরনের নেইল রিং সে ক্ষেত্রে চমৎকার সমাধান। অ্যাডজাস্টেবল এবং পুনরায় ব্যবহার করা যায় বলে অজু করার আগে খুলে নেওয়া যায়। নামাজ পড়ার পর আবার পরে নিলেই চলে। স্টেইনলেস স্টিল, অ্যালয়। সিলভার দিয়ে তৈরি হয় এসব রিং। কোনোটা মিনিমালিস্টিক ডিজাইনে তো কোনোটা অনেক কারুকার্যে পরিপূর্ণ।
পরে নেওয়ার পদ্ধতি
সঠিকভাবে এই নেইল রিং পরে নেওয়ার প্রথম শর্ত, যথাযথ সাইজ বাছাই। ফিট পারফেক্ট হলে স্টাইলিংও হবে সুন্দর। পরেও নিতে হবে সঠিকভাবে। নখের ওপর রিং এমনভাবে বসাতে হবে, যেন স্টিক-অন নেইল পুরে নেওয়ার অংশের সঙ্গে নেইল বেডের অ্যালাইনমেন্ট সঠিক হয়। তারপর শুধু রিংয়ে গ্লু স্টিকার দিয়ে স্টিক-অন নেইল সেঁটে নিতে হবে। ব্যস।
টেকসইও বটে
ঘরের কাজ হোক কিংবা বাইরের, রোগবালাইয়ে হোক কিংবা দুর্ঘটনায়—নখ নিয়ে নারীদের বিড়ম্বনার শেষ নেই। যতই নিয়ম মেনে ম্যানিকিউর করা হোক না কেন, নখগুলো যেন খুব সহজে প্রাণহীন হয়ে যায়। অনেকের আবার নখ বড় হতে সময় লাগে। কারও কারও নখ অতিরিক্ত ভঙ্গুর হওয়ায় নখে স্টাইলিং নিয়ে প্রতিনিয়ত সমস্যায় পড়তে হয়। এসব সমস্যার সমাধানে স্টাইলিশ আর সাসটেইনেবল সল্যুশন নেইল রিং।
ঝক্কিহীন
নেইলপলিশ আর নেইল স্টিকার স্টাইলিস্ট দেখালেও দুটোই ব্যবহারের কিছুদিন পর আগের মতো উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে পারে না। পানি আর তেলের সংস্পর্শে এলে তো কথাই নেই। নেইল পেইন্টের কালার বদলে যেতেও সময় লাগে না একদম। নেইল স্টিকারের ক্ষেত্রে এটা খুব দৃষ্টিকটু দেখায়। কোথাও একটু আছে আবার কোথাও একটু গায়েব। এ ক্ষেত্রে নেইল রিং আবার খুবই উপযোগী। নেইল রিং থেকে স্টিক-অন নেইল সহজে রিমুভ করা যায়। নকশা পাল্টে নেওয়া যায় অনায়াসে। এই নখের সৌন্দর্যের দীর্ঘস্থায়িত্ব রক্ষা হয়।
ব্যবহার উপযোগী
নেইল রিং আসলে কার জন্য? নখ সাজাতে ভালোবাসেন এমন সব নারীর জন্য। তবে হ্যাঁ, যারা ঘন ঘন নখের সাজে এক্সপেরিমেন্ট করতে ভালোবাসেন, তাদের আসলে নেইল রিং এড়িয়ে যাওয়াই শ্রেয়। কিন্তু যারা নখে আভিজাত্য আর ফ্যাশনের ছোঁয়া একসঙ্গে আনতে চান, তারা নিঃসন্দেহে বেছে নিতে পারেন নেইল রিং। কুইক ফিক্স হিসেবেও জুড়ি নেই এর।
ধরা যাক, হঠাৎ কোনো একটা ইভেন্টে নখ সাজানোর সময় নেই একেবারে। তাড়াহুড়ো করে নেইলপলিশ দেওয়ার ঝুঁকিও নিতে চাচ্ছেন না, তারা বেছে নিতে পারেন নেইল রিং। আর যারা নিয়মিত নামাজ পড়েন, তাদের জন্য তো লাইফ সেভার। নেইল পেইন্ট, নেইলপলিশ বা স্টিক-অনের বদলে স্টাইলিশ কিন্তু হ্যান্ডি এই নেইল রিং। অজু করার সময় খুলে নেওয়া যাবে, আবার নামাজ শেষে ঠিক আগের মতো ব্যবহার সম্ভব।
শুধুই কি সাজ
নেইল রিং যে শুধু সাজের অনুষঙ্গ, তা কিন্তু নয়; বরং নখে প্রয়োজনীয় সুরক্ষাও দিতে পারে। ভঙ্গুর বা সহজে বড় হয় না, এমন নখে দেয় একটা এক্সট্রা লেয়ার অব প্রোটেকশন। অ্যাডজাস্টেবল হওয়ায় যেকোনো ধরনের নখেই মানিয়ে যায়। ইকো-ফ্রেন্ডলি বলে নখের কোনো ক্ষতি করে না। অনেকের নেইল পেইন্ট বা নেইলপলিশ ব্যবহারে নখে সমস্যা দেখা দেয়, তাদের জন্য নেইল রিং এনে দিতে পারে স্বস্তি। এ ছাড়া যেকোনো সময় রিমুভ করা যায়, তাই যারা নেইলপলিশ ব্যবহার করতে পারেন না, তাদের জন্যও এটি হতে পারে ব্যবহার উপযোগী। আবার স্পেশাল কোনো ইভেন্টে যেতে বা নখে একটা প্রিমিয়াম লুক চাইলে নেইল রিং এখন বেশ ট্রেন্ডি।
বিউটি ডেস্ক
ছবি: সংগ্রহ