skip to Main Content

ফিচার I কোথায় মিলায় ফিলার

নন-সার্জিক্যাল কসমেটিক প্রসিডিউর। চাহিদা অনুযায়ী মুখের আকৃতিতে আকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনে। জনপ্রিয়তার রহস্য এটাই। কিন্তু নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে ফিলার হারায় উপযোগিতা। হারানোর পর শেষ দৃশ্যে কী ঘটে? তার খোঁজে সারাহ্ দীনা

ফিলারের উদ্দেশ্য ত্বকে সজীবতার উজ্জীবন। মুখমণ্ডলের নির্দিষ্ট কিছু অংশ যেমন থুতনি, চোখের নিচের অংশ, ঠোঁট—এই স্থানগুলোতে মূলত ফিলার ব্যবহার করা হয়। যেগুলো তৈরি হয় নানা রাসায়নিক পদার্থে। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় ইনজেকশনের মাধ্যমে ফিলার নির্দিষ্ট অংশে পৌঁছে দিয়ে। মুখমণ্ডলের যেখানে পরিবর্তন আনতে চাচ্ছেন ব্যবহারকারী, ঠিক সেখানেই। মূলত সিরিঞ্জ ব্যবহারে। কিন্তু এই ফিলার চিরস্থায়ী নয়। ঠিক কতটা সময় টিকবে, সেটি নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের ওপর:
 ফিলারের উপাদান
 ফিলারের ঘনত্ব
 ফিলার বিপাক ক্রিয়া
 ট্রিটমেন্ট এরিয়া
ফিলারের জন্য সাধারণত ব্যবহার করা হয় হায়ালুরনিক অ্যাসিড, হাইড্রক্সিঅ্যাপেটাইট, পলি এল ল্যাকটিক অ্যাসিড, পিএমএমএ। লাইফস্প্যান কেমন হবে, তার সঙ্গে সঙ্গে ফিলার কীভাবে কার্যকারিতা হারাবে—এসব অনেক ক্ষেত্রে নির্ভর করে ব্যবহৃত রাসায়নিকের ওপরে। কিছু ফিলার প্রাকৃতিকভাবে দ্রবীভূত হওয়ার ক্ষমতা রাখে। আবার এমন কিছু সিনথেটিক ফিলার সম্পর্কে জানা যায়, যেগুলো নিজ থেকে দ্রবীভূত হয় না। ফিলার দেহের যে স্থানেই ব্যবহৃত হোক না কেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর তার ক্ষমতা শেষ হয়ে আসে। এ সময় ফিলার কুঞ্চিত হয়, ছোট হয়ে আসে। এরপরে কী হয়, সেই প্রশ্নের উত্তর জানা যায় চিকিৎসক ওয়েইসারের কাছে। তিনি অ্যালিউর নামের একটি বিউটি পোর্টালে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, একবার ফিলার ব্যবহারের পর সেটিকে দেহ থেকে শতভাগ দূর করা সম্ভব হয় না বলেই চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রমাণ আছে। ফিলারের প্রতিটি বিন্দু শরীর থেকে মুক্ত করা সম্ভব নয়। একই তথ্য পাওয়া যায় বিশ্বের আরও বহু অ্যাসথেটিক চিকিৎসকের মন্তব্যে। বেশির ভাগেরই মত, মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে ফিলারের উপযোগিতা কমে আসে। কিন্তু তা দেহ থেকে ভ্যানিশ হয়ে যায় না।
বেভারলি হিলসের বোর্ড সার্টিফায়েড কসমেটিক সার্জন গ্যারি মোটিকির মন্তব্য পাওয়া যায় অন্তর্জালে। তিনি লিপ ফিলারের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, কোনো ব্যক্তির ঠোঁটে যখন বারবার ফিলার ব্যবহার করা হয়, অনেক সময় শক্তি হারিয়ে সেগুলোর স্থানচ্যুতি ঘটে। এরপরে ঠোঁটের ওপরের দিকে জমা হয়ে গোঁফের আকৃতি নেয়। একে ফিলার মুসতাচ বলে।
ফিলারের টাইমলাইন মোতাবেক শেষ সময়ে ফিলার ক্ষমতা হারায়। সংকুচিত হয়। ফলাফল স্থানচ্যুতি। কিন্তু নিজ থেকে সম্পূর্ণভাবে দ্রবীভূত না হলে ঘুরে বেড়ায় ব্যবহারকারীর চামড়ার নিচে; যা আদতে অস্বস্তিকরই বটে।
দেহে ইনজেকটেড ফিলার অকার্যকর হওয়ার পরেও তা হাতের স্পর্শে অনুভূত হতে পারে। কারণ, এটি ত্বকে শতভাগ দ্রবীভূত না-ও হতে পারে। আবার হাতের ছোঁয়ায় বুঝতে না পারলেও এমআরআই কিংবা আলট্রাসাউন্ডের মতো আধুনিক চিকিৎসায় দেখা দিতে পারে। এতে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ পাওয়া যায় চিকিৎসকদের মন্তব্যে। একই সঙ্গে ফিলারের অবশিষ্ট অংশের বৈশিষ্ট্যে পরিবর্তন আসতে পারে। স্থান পরিবর্তিত হতে পারে। দ্রবীভূতও হতে পারে। তবে নো-ফিলার ডেসটিনেশনে পৌঁছাতে সময় লাগবে। তাই আতঙ্কিত না হয়ে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ গ্রহণ জরুরি।
হায়ালুরনিক অ্যাসিডের ফিলার দ্রবীভূত করার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার উদ্দেশ্যে ফিলার ডিসলভার হতে পারে সমাধান। এই প্রক্রিয়ায় হায়ালুরনাইডস অ্যাসিড সে জন্যই ব্যবহার করা হয়। কোনো সমস্যা ছাড়াই এই মেথডে ফিলার ফ্রি হওয়ার উদাহরণ অনেক। তাই একে নিরাপদ বলা যায়। হায়ালুরনাইডস অ্যাসিড দ্রবণীয় প্রোটিন এনজাইম। সিরিঞ্জের মাধ্যমে হায়ালুরনিক অ্যাসিড মাইগ্রেটেড ফিলার অবধি পৌঁছে দেওয়া হয়। এতে ফিলার হিসেবে ব্যবহৃত এই অ্যাসিডের রাসায়নিক বন্ধন ভেঙে যায়। ফিলার তার শক্তি সম্পূর্ণভাবে হারায়। এই ভাঙনের কারণে একরাশ মলিকুল তৈরি হয়; কিন্তু এগুলো ত্বকে জমে থাকে না। ব্যবহারকারীর ত্বক নিজের মতো করে সেগুলোকে শোষণ করে নেয়। কারণ, ত্বকের জন্য এই অ্যাসিড ক্ষতিকর নয়। ফিলার ডিসলভার খুব দ্রুততার সঙ্গে কাজ সম্পন্ন করে। ১ থেকে ৭ দিনের মধ্যে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
ফিলার ডিসলভারের রিস্ক একটাই, সেটা হচ্ছে অ্যালার্জি। যদিও সবার এ সমস্যা হবে—এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে শঙ্কা রয়েছে বলে ধারণা চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের। তাই প্যাচ টেস্ট আবশ্যক।

ছবি: সংগ্রহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top