সঙ্গানুষঙ্গ I ম্যাক্সি ম্যানিয়া
এ বছরে কান সাজাতে আধিক্যে কোনো অসুবিধা নেই। নিয়ম ভাঙার সেরা সুযোগ কিন্তু। একই সঙ্গে সাহসিকতাও যাচাই হয়ে যাবে
ম্যাক্সি পিয়ার্সিংয়ের প্লেসমেন্টের ক্ষেত্রে কানের কোন অংশ এ বছর জনপ্রিয়? সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে তা বুঝে নেওয়ার সুযোগ মিলছে আগেভাগেই। অনুপ্রেরণার প্রভাবক জনপ্রিয় তারকা, ইনফ্লুয়েন্সার আর পিয়ার্সাররা। পুরোনো পদ্ধতিগুলোর পাশাপাশি পিয়ার্সিংয়ে প্রাণ জোগাচ্ছে অপ্রচলিত সব কৌশল।
স্নেকবাইট
পাশাপাশি তো বটেই, একদম কাছাকাছি দুটো পিয়ার্সিংয়ের প্লেসমেন্ট। সাপের ছোবলে দাঁতের চিহ্নটা যেমন হয়, ঠিক তেমন। নামকরণেই তা পস্ট! ম্যাক্সি পিয়ার্সিং টেকনিকগুলোর মধ্যে এর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। একই রকম দুটো ইয়াররিং ছাড়াও মিসম্যাচড জুয়েলারি পরে নিলেও দারুণ দেখাবে এ ক্ষেত্রে। স্টাড কিংবা হুপটাই বেশি মানায় এমন পিয়ার্সিংয়ে। একই রকম ডিজাইনের ইয়াররিংয়ে তৈরি হবে আইডেন্টিক্যাল লুক। মিসম্যাচিংয়েও মন্দ দেখাবে না। ভাইবের ওপর নির্ভর করবে পুরোটা। পিয়ার্সিং দুটো পাশাপাশি হওয়ায় বাড়তি ব্যথা আর সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। তাই দেখভাল ভালোভাবে করা জরুরি। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মানতে হবে। কয়েক সপ্তাহ পিয়ার্সিং করা কানের দিকে পাশ ফিরে না শোয়াই ভালো। কানে আগেভাগেই একটা পিয়ার্স করা? আরেকটা ছিদ্র করে নেওয়াই যায় কাছাকাছি। স্নেকবাইটের মতো দেখাতে।
ট্রেগাস
খুব সচরাচর দেখা যায় না এ ধরনের পিয়ার্সিং। মুখের একদম কাছাকাছি হওয়াটাই মূলত আন্ডারস্টেটেড হওয়ার কারণ। তবে এ বছর জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলে ধারণা পিয়ার্সারদের। কানের মাঝের অংশের অপেক্ষাকৃত মোটা কার্টিলেজে করা হয় এই ছিদ্র। ব্যথা বেশি হয়। সারতেও দীর্ঘ সময় লাগে। ব্যক্তিভেদে বছরখানেক। নিয়মিত পরিষ্কার করার পাশাপাশি, পিয়ার্সিংয়ে হাত দেওয়া একদম মানা। তবে ফল চমকপ্রদ। লুকে কুল ভাইব তৈরিতে চমৎকার। সিঙ্গেল, মিলিমালিস্টিক স্টাইলিংয়ের সঙ্গে জমাটি। আবার কানভর্তি দুলের সঙ্গেও খুব সুন্দর দেখায়।
কঞ্চ
স্টেটমেন্ট পিয়ার্সিং পছন্দ? সেরা অপশন কানের ভেতরকার কার্টিলেজের এই অংশ। কঞ্চ মূলত হুপ পরার জন্য উপযুক্ত জায়গা। কাফ স্টাইলেরগুলোই সবচেয়ে ভালো দেখায়। তবে ছিদ্র করার সময় স্টাড ব্যবহারের পরামর্শ পিয়ার্সারদের। সংক্রমণ রোধে। সেই সঙ্গে তাড়াতাড়ি সেরে ওঠার জন্য। পিয়ার্সিং বাম্পের মতো সমস্যাও এড়ানো যাবে এভাবে। নব্বই প্রাণিত এ স্টাইলিং ট্রেন্ড সারতে একটু বেশি সময় লাগলেও লুকে অন্যতর আবেদন যোগ করতে যথেষ্ট। তবে সাহসে না কুলালে পছন্দসই ডিজাইনের ফেক ইয়ারকাফই ভরসা। কানে আরও কয়টা মোটা হুপের সঙ্গে এর যোগ সাজে চমক বাড়াবে।
ডেইথ
মূলত জুয়িশ কালচার থেকে উদ্ভূত পিয়ার্সিং প্রথা। কয়েক বছর ধরে এর জনপ্রিয়তা ঊর্ধ্বমুখী। করা হয় কানের ভেতরকার কার্টিলেজে। কঞ্চের মতো এ অংশেও হুপ ইয়াররিং ভালো দেখায়। শুধু তা-ই নয়, সহজে পরিষ্কার করতে এবং দ্রুত সেরে উঠতেও সহায়তা করে। তবে হুপ যেন খুব বেশি বড় কিংবা ভারী না হয়। ছিদ্র করার সময় ব্যথা অনেকের কাছে মাত্রাতিরিক্ত মনে হতে পারে। সারার সময়টা নির্ভর করবে ব্যক্তির ওপর। ছয় থেকে নয় মাস সময় লাগবে। নিয়মিত স্টেরয়েল স্যালাইন দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে সংক্রমণ রুখতে। মেনে চলতে হবে পিয়ার্সারের পরামর্শ। মাইগ্রেন উপশমে এর কার্যকারিতা নিয়ে মতভেদ মিলেছে। তবে এর সৌন্দর্য নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই।
ফ্লোটিং কার্টিলেজ
যারা ছোট ছোট স্টোন স্টাড পরতে পছন্দ করেন, তাদের জন্য শো অফের দারুণ সুযোগ। খানিকটা জায়গা পাওয়া যায় বলে ক্যানভাস সাজানো যায় পছন্দমতো। দুটি, তিনটি, এমনকি চারটি ছিদ্রও করা যায় এ ক্ষেত্রে। সহ্য করার সক্ষমতার ওপর নির্ভর করে। মোস্ট পপুলার নন-লোব পিয়ার্সিং হিসেবে এর সুখ্যাতি রয়েছে। স্টেটমেন্ট লুক তৈরির জন্য। কিউরেটেড লুকের জন্য বল স্টাড আর নানা আকারের ক্রিস্টালের মিশেল ভালো দেখাবে।
স্ট্যাকড লোব
সাহসে কুলাচ্ছে না? তাই বলে স্টাইলিং হবে না—তা কেন! কার্টিলেজ টেরিটরি বাদেও ম্যাক্সি পিয়ার্সিং ট্রেন্ড উপভোগ সম্ভব। সে উপায়ই বাতলেছেন বিশ্বখ্যাত পিয়ার্সাররা। একের অধিক ছিদ্র করে নিতে হবে কানের লতিজুড়ে। হতে পারে সমান দূরত্বে, নিয়মমাফিক লাইন মেনে। অগোছালো ক্লাস্টার পিয়ার্সিংও মন্দ দেখায় না এমন স্টাইলিংয়ে। তবে মাথায় রাখতে হবে, ব্যক্তিভেদে কানের লতির আকার আর মাপ ভিন্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক। তাই জায়গা বুঝে তবেই বন্দোবস্ত করা চাই। আরেকটা বিষয়। কানের লতিতে পিয়ার্সিংয়ের সময় ব্যথা তুলনামূলকভাবে কম লাগে। তাই বলে হুজুগে একসঙ্গে অনেকগুলো ছিদ্র করে ফেলা যাবে না আবার। আস্তে আস্তে পুরো লুক ক্রিয়েট করাই ভালো।
মিড অ্যান্ড ফরোয়ার্ড হেলিক্স
নতুন পিয়ার্সিং করালেও সাহসের যাদের কমতি নেই, তাদের শুরুটা হতে পারে মিড হেলিক্স থেকে। লতি আর আপার কার্টিলেজের মাঝের এ অংশ সেফ প্লের জন্য দুর্দান্ত। পরে নেওয়া যায় পছন্দসই যেকোনো স্টাইলের ইয়াররিং। পিয়ার্সিংয়ের অন্য অপশনগুলোর থেকে সংক্রমণের শঙ্কাও কম। যারা আরেকটু বেশি সাহসী, তাদের জন্য ফরোয়ার্ড হেলিক্স। সিঙ্গেল অথবা মাল্টিপল পিয়ার্সিং করা যায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে, কার্টিলেজ পূর্ণ জায়গা এটি। ব্যথা হবে তুলনামূলকভাবে বেশি।
ফ্যাশন ডেস্ক
মডেল: শ্রাবণী
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: কৌশিক ইকবাল