skip to Main Content

নখদর্পণ I আর্দ্রতায় অনাসৃষ্টি

ভঙ্গুরতার পাশাপাশি বাড়তে পারে ছত্রাক সংক্রমণের শঙ্কা। তাই বাড়তি মনোযোগ দেওয়া চাই নখের দুর্বলতা রোধে। নিয়মগুলো জানা আছে তো?

বৃষ্টিতে নানাভাবেই নখ ভিজে যেতে পারে। ইচ্ছা, অনিচ্ছা—দুয়েই। ভিজে যাওয়ার ভয়ে আড়াল করে দাঁড়ালেও বৃষ্টি ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছায় হাত বাড়িয়ে দেন অনেকে। আবার বৃষ্টি থেকে নিজেকে আড়াল করতে হাত দিয়েই মুখ ঢাকতে হয়। সবেতেই নখ স্পর্শ করে বৃষ্টি। এ আর নতুন কি!
বর্ষার সময়ে যে শুধু আকাশ ভেঙে বৃষ্টি আসে, তা নয়। এর সঙ্গে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণও বাড়ে। এমন আবহাওয়া নখের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। দুর্বল হয়ে পড়ে। আর নখ যেহেতু বিভিন্ন রকম জায়গার সংস্পর্শে আসে, তাই সহজেই আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এতে নখ ভাঙে। আবার এ সময় ফাঙ্গাল ইনফেকশনও বাড়ে। নখ সৌন্দর্য তো হারায়ই, ক্ষতিগ্রস্তও হয়। যে ক্ষতি হতে পারে দীর্ঘস্থায়ী।
কাট-ছাঁট
নখ লম্বায় বড় থাকলে পানিতে হাত ভেজালে এবং বাতাসের আর্দ্রতার স্পর্শে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিতে পারে। আক্রান্ত হতে পারে নখ। ভেঙে গিয়ে হারাতে পারে সৌন্দর্য। সমস্যাটি চেনা। অনেকে বর্ষাকালে নখের ভঙ্গুরতা নিয়ে ভুগে থাকেন। এ থেকে মুক্তি পেতে কেটে নিতে হবে। কত দিন পর পর কাটতে হবে, তা বুঝতে চোখ রাখতে হবে নখের বৃদ্ধিতে। প্রত্যেকের নখ ভিন্ন ভিন্ন দৈর্ঘ্যে বাড়ে। তা বুঝে মাসে এক থেকে দুবার নখ ট্রিম করে নেওয়া যেতে পারে।
তবে নখ ট্রিম অথবা পরিষ্কার করার উদ্দেশ্যে কোনোভাবেই খুব ধারালো কিছু ব্যবহার করা যাবে না। মনে রাখা চাই, নেইল বেড এতে মাংস থেকে আলগা হয়ে যেতে পারে, যা ব্যথা উদ্রেক করার পাশাপাশি জীবাণুতেও আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা বাড়ায়। এভাবে নেইল বেড এবং নেইলের মাঝখানের অংশ জীবাণু আক্রান্ত হলে দীর্ঘ সময় ভুগতে হতে পারে।
বেইস কোট বেসিক
নেইল সারফেসে বেইজ কোটের প্রলেপ দেওয়া যেতে পারে। এর ওপর রঙিন নেইলপলিশের ছোঁয়া মন্দ দেখাবে না। চাইলে শুধু বেইস কোটই সই। তাতে নখের স্বাস্থ্য ঠিক থাকবে। আবার রক্ষা হবে সৌন্দর্যও। বেইজ কোটিং নখকে সরাসরি পানির স্পর্শে দুর্বল হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। নেইলপলিশের ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান থেকেও দূরে রাখে। বর্ষায় নখে বেইস কোট ব্যবহারে সমাধান মিলবে একসঙ্গে দুটি সমস্যার। বৃষ্টির পানির স্পর্শে ক্ষতি হবে না; আবার নখ রাঙানোর প্রসাধনের টক্সিক কেমিক্যাল থেকেও নখকে রক্ষা করা যাবে।
শুষ্ক সুস্থ
হাত ও পায়ের নখ ভিজে গেলে যত দ্রুত সম্ভব মুছে নেওয়া জরুরি। বর্ষণমুখর দিনে হাতে যেমন বৃষ্টির ছাট লাগতে পারে, তেমনি পায়ের নখও ভিজতে পারে জমে থাকা পানিতে। পায়ের নখের আশপাশে যদি মৃতকোষ জমতে থাকে, তাহলে তার সঙ্গে ময়লা পানিতে থাকা জীবাণু মিশে সংক্রমণ হতে পারে। ফল—ত্বকের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা।
পানিনিরোধ
হাত ভেজাতে হবে এমন কাজের সময়ে হাতে প্লাস্টিক গ্লাভস পরে নেওয়া যায়। তাহলে নখ ভিজবে না। সাবান ব্যবহার করার ফলে যেসব ক্ষতিকর রাসায়নিকের সংস্পর্শে যাওয়ার শঙ্কা থাকে, সেগুলো থেকেও রক্ষা পাবে।
স্নিগ্ধ
নখ বিভিন্ন কারণে ময়লা আকর্ষণ করে; যা আবার নখের ভেতরের অংশে জমতে শুরু করে। যা শুধু বিশ্রীই দেখায় না, ক্ষতিরও কারণ বটে। এখান থেকেই তৈরি হতে পারে ব্যাকটেরিয়া, যা নখকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। পানিতে ভিজলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়ার ভয় থাকে।
অ্যান্টিফাঙ্গাল পাউডার
রেইনি ডে স্কিন কেয়ার রুটিনে যোগ করা যেতে পারে অ্যান্টিফাঙ্গাল পাউডার। পায়ের নখে যেহেতু ছত্রাক আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা বেশি, তাই এই অংশে দিনে অন্তত একবার ব্যবহার করা যেতে পারে। ট্যালকম পাউডার, ডিওডোরেন্ট স্প্রে ব্যবহার করলেও একই ধরনের সমাধান মিলবে।
তেলে নখ তাজা
নখের যত্বে ব্যবহার করা যেতে পারে নারকেল তেল, অলিভ অয়েল এবং জোজোবা অয়েল। নেইল সারফেসে ব্যবহার করা হলে নখের প্রাকৃতিক আর্দ্রতার কোনো ক্ষতি হবে না। নখ বরং শক্ত হবে। আবার, পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা কিছুটা হলেও কমবে। নখে তেলের প্রলেপ দেওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো সময় রাত। কারণ, এ সময়ে হাত পানির সংস্পর্শে সবচেয়ে কম আসে। দীর্ঘ সময় নখ বিশ্রাম নিতে পারে এবং তেলের যত্ব উপভোগের সুযোগ পায়।
রাসায়নিক থেকে রক্ষায়
নখে ব্যবহৃত প্রসাধনের উপাদানে ক্ষতিকর কোনো রাসায়নিকের উপস্থিতি আছে কি না, তা জেনে নেওয়ার চেষ্টা করা যেতে পারে। কয়েকটি উপাদানকে নখের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বলে জানা যায়। যেগুলো এড়িয়ে গেলে নখ ভালো থাকবে। এই তালিকায় আছে ফরমালডিহাইড, ডিবুটাইল ফ্যাটালেট। এই রাসায়নিকগুলোর উপস্থিতি থাকলে সেই প্রসাধন ব্যবহার না করাই ভালো। কোমল প্রকৃতির পণ্য ব্যবহারে নখের স্বাস্থ্য রক্ষা হবে। নেইলপলিশের ক্ষেত্রে ব্রিদেবল অথবা ওয়াটারবেইসড গুণসম্পন্ন প্রোডাক্ট বেছে নেওয়া যেতে পারে। এতে নখের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা যেমন ঠিক থাকবে, তেমনি ছত্রাকের মাধ্যমে আক্রান্ত হওয়া কমে আসবে।
ডায়েট ডিটেইল
সুস্থ নখের জন্য মনোযোগ দেওয়া চাই খাবারের তালিকায়। কোন কোন খাবার নখের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, তা জেনে নিতে হবে। তারপরে মিল প্ল্যানে সেসব যোগ করা মঙ্গল। সবুজ শাকসবজি, ডিম, বাদাম ও মাছ নিত্যদিনের খাবারের তালিকায় থাকলে নখ নিয়ে ভাবনা কমবে।
ম্যানি-প্যাডি
নখের যত্ব হিসেবে ম্যানিকিওর ও পেডিকিওর বেশ আগে থেকেই পরিচিতি পেয়েছে। কয়েক বছর ধরে এই যত্বকে প্রয়োজন হিসেবে গণ্য করছেন নেইল এক্সপার্টরা। নখ সঠিকভাবে পরিষ্কার করার মাধ্যমে অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। নিয়মিত ম্যানিকিওর, পেডিকিওর করা হলে হাত-পায়ের ভালো থাকা নিশ্চিত হবে।

 সারাহ্ দীনা
ছবি: সংগ্রহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top