ফোকাস I অক্ষত ওষ্ঠ
ঠোঁটের বিভিন্ন সমস্যা সারাইয়ে সেরা। সহজলভ্য এবং সাশ্রয়ী বাজেটে। সুবিধার জন্য বিস্তারিত বয়ানে
ঠোঁট। দেহের সবচেয়ে নাজুক অংশ। শীতের শুষ্কতার ক্ষতিকর প্রভাব প্রথমে এতেই পড়ে। যার তীব্রতা শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় বেশি। ফলে ঠোঁট দ্রুত অনার্দ্র ও খসখসে হয়ে পড়ে। ফেটে যায়। দেখায় ফ্যাকাশে, বর্ণহীন। কোনো তেলগ্রন্থি ও ঘর্মগ্রন্থি নেই বলে রোদের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করার নিজস্ব কোনো ক্ষমতাও নেই ঠোঁটের।
সে জন্য শীতের এ সময়টায় এর প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হয়। শুষ্ক হয়ে পড়লেই সহজ ও কার্যকর সমাধান লিপজেল আর লিপবামের ব্যবহার। তবে কেবল এতেই ঠোঁটের যত্ন শেষ হয়ে যায় না এ সময়। ফাটা, খসখসে ভাব থাকলে প্রথমে তা পরিষ্কার করে নেওয়া জরুরি। এ ক্ষেত্রে একটি জীবাণুমুক্ত টুথব্রাশ দিয়ে ধীরে ধীরে ঠোঁটের ওপরে ব্রাশ করে নিতে হবে। এতে মরা চামড়া ঝরে যাবে। তারপর মুছে শুকনো করে মাখাতে হবে ঠোঁটযত্নের এ উপাদানগুলো। এ ছাড়া শীতে ফেশিয়াল ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধোয়ার আগে ঠোঁটে এর প্রলেপ দেওয়ার অভ্যাস করে নেওয়া গেলে ভালো। কারণ, বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যালযুক্ত ক্লিনজারগুলো ঠোঁট আরও শুষ্ক করে দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে লিপজেল আর লিপবামের ব্যবহার সুনিশ্চিত করবে কোমলতা।
আবার অনেকের জিভ দিয়ে বারবার ঠোঁট ভেজানোর অভ্যাস থাকে। এতে ঠোঁট আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই অভ্যাস একেবারে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। অনেকের ঠোঁটের ফাটা অংশ খোঁটানোর অভ্যাস থাকে। সেটাও ঠিক নয়। এতে ঠোঁটের ফাটা ভাব বেড়ে যেতে থাকে। ক্ষতের সৃষ্টি হয়, রক্ত পড়ে। সে ক্ষেত্রে ফাটা অংশ নিয়ে নাড়াচাড়া না করে বরং লিপজেল আর বামের প্রলেপ দিয়ে দিলে ভালো। নিয়মিত ব্যবহারে ক্ষত সেরে যায়। রাতে শোয়ার আগে ময়শ্চারাইজিং লোশনের সঙ্গে সামান্য পানি মিশিয়ে মুখ ও ঠোঁটে মাখতে হবে। তারপর দিতে হবে লিপজেল অথবা লিপবাম। বেছে নেওয়া যেতে পারে পছন্দের ফ্লেবারযুক্ত। আর তাতে যদি থাকে কোকোয়া বাটার আর মিনারেল অয়েল, তাহলে তো কথাই নয়। সুগন্ধিযুক্ত পণ্যগুলো ঠোঁটে ব্যবহারের জন্য দারুণ। ঠোঁট কোমল রাখার সঙ্গে লুকেও দেবে চমক। সহজেই ব্যাগে বহনযোগ্য। তাই যেকোনো জায়গায় নেওয়া যায় অনায়াসে। ব্যবহারও করা যায় যখন-তখন। আর ঠোঁট ফাটা সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়াটাই সমীচীন। কারণ, এমন অবস্থায় সংক্রমণ ও রক্তপাতের শঙ্কা বেশি। অন্যদিকে যেকোনো প্রসাধনী বিপর্যস্ত ঠোঁটের জন্য একেবারে অনিরাপদ।
শীতের মৌসুমে স্বাভাবিক ঠোঁটে অবশ্যই বেছে নিতে হবে ময়শ্চারাইজিং লিপস্টিক। ম্যাট লিপস্টিক এ সময় একেবারে উপযুক্ত নয়। এর বদলে বেছে নেওয়া যেতে পারে সেমি ম্যাট ফর্মুলারগুলো। গ্লসও মন্দ দেখাবে না। ঠোঁটেও দেবে স্বস্তি। পরিচর্যার পাশাপাশি নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে টকজাতীয় ফল, যেমন লেবু, আমলকী, জাম্বুরা, সবুজ আপেল। এগুলো ঠোঁটের নরম ত্বককে সতেজ রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। শীতের শুষ্কতাকে হারিয়ে ঠোঁট হাসে বিজয়ের হাসি। সব সময়।