skip to Main Content

ফোকাস I অ্যালোভেরায় আস্থা

প্রাচীন যুগের মিসরীয়রা অ্যালোভেরাকে বলত ‘অমরত্বের গাছ’। কারণ, তাদের বিশ্বাস ছিল, আশ্চর্য এ ভেষজ মানুষকে চিরঞ্জীব করে তুলতে পারে। যার সামান্য একটু নির্যাস ত্বকে ছোঁয়ালে জ্বালাপোড়া, কাটা এমনকি ছোটখাটো ইনফেকশনও সেরে যায়, তার প্রতি আস্থা না রেখেই-বা উপায় কী!
শুধু ইতিহাসেই-বা কেন, এ যুগেও অ্যালোভেরার গুণ নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা ও প্রশংসা রয়েছে। ৯৫ শতাংশ পানিসমেত এই ভেষজের উপকারিতার যে শেষ নেই। প্রথমত, অ্যালোভেরার পাতার নির্যাস বা জেলে আর্দ্রতার পরিমাণ প্রচুর, যা শুষ্ক ত্বককে ফিরিয়ে দেয় তার প্রয়োজনীয় কোমলতা। ত্বক দেখায় উজ্জ্বল আর পরিপুষ্ট। এর অ্যালকালাইন প্রোপার্টি ত্বকের পিএইচ ব্যালান্স অক্ষুণ্ন রাখে। ফলে শীতের কারণে ত্বকের নিষ্প্রাণ ভাবও কমে আসে। এমনকি শুষ্ক ত্বকের র‌্যাশও সেরে ওঠে সহজে। কমে যায় জ্বালাপোড়ার অস্বস্তি। অ্যালোভেরায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আর রয়েছে বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন ই-এর মতো সব গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এগুলো ত্বককে ভেতর থেকে প্রাণশক্তি জোগায় এবং সুস্থ রাখতে বড় ভূমিকা পালন করে। শুধু তা-ই নয়, ত্বকের কোষের স্বাভাবিক গঠন বজায় রাখে। তাই ত্বকে আর্দ্রতার ভারসাম্যে কোনো রকম ঘাটতি হতে দেয় না। শীতের নানান সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতেও কার্যকর এই ভেষজ। শুষ্কতার কারণে সৃষ্ট বলিরেখা কোনোভাবেই ত্বকে বসতে দেয় না অ্যালোভেরা। অনেকের ধারণা, শীতে সূর্য থেকে প্রতিরোধের প্রয়োজন নেই। এটা একদমই ভুল। শীতেও ত্বকে চলে ট্যানিং, ফ্রেকলস ইত্যাদির দৌরাত্ম্য। আর এ থেকে রক্ষায়ও অ্যালোভেরা দারুণ সমাধান। এতে থাকা অ্যাক্সিম ও জিবেরেলিন নামের দুটি হরমোন সূর্যরশ্মির ফলে ত্বকে দেখা দেওয়া সানট্যানের মোকাবিলা করে কার্যকরভাবে। কোমলতার সঙ্গে। আর সৌন্দর্যবিশ্বের একদম সাম্প্রতিক মত হচ্ছে, সরাসরি ব্যবহার না করে অ্যালোভেরাযুক্ত কোনো পণ্য যদি ব্যবহার করা যায়, ত্বক আরও বেশি পুষ্টি পায়। তাই জাদুকরী এ ভেষজের নির্যাসে তৈরি বডি লোশন ব্যবহার করা যেতেই পারে এবারের শীতে।
কেয়া বাত কোকোয়া
প্রাচীনকাল থেকেই কোকোয়া পরিচিত ‘ম্যাজিক বিন’ হিসেবে। সুস্বাস্থ্য থেকে সৌন্দর্য—সবেতেই এর কার্যকারিতা এক শ-তে এক শ। এ থেকে তৈরি পাউডার কিংবা বাটার—সবই ব্যবহারের উপযোগী আপাদমস্তক রূপচর্চায়। কোকোয়া বাটার মূলত থেওব্রোমা অয়েল, যা এর বিন থেকে সংগ্রহ করা হয়। প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ এ বাটার ত্বককে ফ্রি র‌্যাডিক্যালে সৃষ্ট ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এ ছাড়া পিগমেন্টেশন সারাতে সাহায্য করে। নিয়ন্ত্রণে রাখে অতিরিক্ত মেলানিন নিঃসরণের হার। ফলে ত্বক দেখায় নমনীয় ও উজ্জ্বল। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা পেতেও কোকোয়া বাটারের কার্যকারিতা কম নয়। যারা অর্গানিক সানস্ক্রিনে স্বচ্ছন্দ, তাদের জন্য সেরা অপশন এটি। এতে রয়েছে পলিফেনল। যা ডিটক্সিফাইয়ার হিসেবে ত্বকের দূষণ দূর করতে সক্ষম। বলিরেখা দূর করার সঙ্গে সঙ্গে এটা ত্বকের মসৃণতা বাড়ায়। রাখে ব্রণমুক্ত। যাদের ফাটা দাগের সমস্যা রয়েছে, তারা নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন কোকোয়া বাটার। এটা দাগ হালকা করে দেবে। ত্বকের কোলাজেন স্তর ঠিক রাখতে সাহায্য করবে। ফলে চেহারায় আসবে তারুণ্যের দীপ্তি। এতে থাকা অয়েলিক, পালমিটিক আর স্টিয়ারিক অ্যাসিডের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলোর সব কটিই ফ্যাটি অ্যাসিড। এগুলোর নিয়মিত ব্যবহার সহজে বুড়িয়ে যেতে দেয় না। নিয়মিত ব্যবহারে পরিপুষ্ট দেখায় বছরের পর বছর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top