skip to Main Content

বহুরূপী I সন্দেশ স্বরূপ

দুর্গাপূজা ও সন্দেশ—দুটোই বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। পূজা মানেই আনন্দ, উৎসব; সঙ্গে নানা ধরনের সুস্বাদু খাবার। এর মধ্যে সন্দেশ একটি জনপ্রিয় মিষ্টান্ন, যা এই উৎসবে বিশেষভাবে সমাদৃত।
নারকেল সন্দেশ জনপ্রিয় বাঙালি মিষ্টান্ন, যা মূলত নারকেল, চিনি ও দুধ দিয়ে তৈরি। সাধারণত উৎসব ও বিশেষ অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয়। বানানোর জন্য প্রথমে নারকেল কুরিয়ে নিতে হয়; তারপর দুধ, চিনি ও অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে একটি পুর তৈরি করা হয়। এই পুরকে পছন্দসই আকারে গড়ে সন্দেশ তৈরি করা হয়।
গুড়ের সন্দেশ খেজুর বা আখের গুড় দিয়ে তৈরি। সাধারণত দুধের ছানার সমাহারে এবং গুড়ের কারণে পায় একটি ভিন্ন স্বাদ ও রং। বিভিন্ন উৎসবে, পার্বণে ও বিশেষ অনুষ্ঠানে এই মিষ্টান্ন পরিবেশন করা হয়। এটি একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে জনপ্রিয়। বানাতে ছানা, গুড়, এলাচি এবং কখনো কখনো নারকেল ব্যবহার করা হয়। গুড়ের কারণে এটি একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্পও বটে। এর স্বাদ ও গন্ধ অতুলনীয়।
ক্ষীর সাধারণত দুধ জ্বাল দিয়ে তৈরি করা হয়, যা ঘন হয়ে ক্ষীরের আকার নেয়। তা দিয়েই তৈরি হয় ক্ষীরের সন্দেশ। প্রথমে ক্ষীর তৈরি করে তাতে চিনি ও অন্যান্য উপকরণ যোগ করা হয়। এরপর এই মিশ্রণকে ভালোভাবে নেড়েচেড়ে দেওয়া হয় একটি নির্দিষ্ট আকার। এই সন্দেশ সাধারণত নরম এবং হালকা মিষ্টি হয়।
নলেন গুড়ের সন্দেশ শীতকালের জনপ্রিয় একটি মিষ্টান্ন। সাধারণত ছানা, চিনি ও খেজুরের গুড় (নলেন গুড়) মিশিয়ে তৈরি। স্বাদ ও গন্ধে অতুলনীয়। এটি দেখতে বাদামি বা হালকা গোলাপি রঙের। এই সন্দেশ হালকা গরম অথবা ঠান্ডা পরিবেশন করা হয়।
ঐতিহ্যবাহী সন্দেশের সঙ্গে চকলেট মিশিয়ে তৈরি করা হয় চকলেট সন্দেশ। সাধারণত ছানা, চিনি ও কোকো পাউডার বা গলানো চকলেটে তৈরি। স্বাদ ঐতিহ্যবাহী সন্দেশের চেয়ে একটু ভিন্ন। চকলেটের কারণে এটি আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।
কমলাভোগ সন্দেশ পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় মিষ্টান্ন। তৈরি করা হয় ছানা, চিনি ও কমলার রস যোগে। দেখতে অনেকটা হলুদ রসগোল্লার মতো হলেও স্বাদে ও গড়নে ভিন্ন। স্বাদ হালকা মিষ্টি ও কমলার সুগন্ধযুক্ত। কেউ কেউ এতে জাফরানও ব্যবহার করেন।
বাটারস্কচ সন্দেশ মূলত ছানা, চিনি, বাটারস্কচ ফ্লেভার ও বাদাম দিয়ে তৈরি। এর প্রস্তুত প্রণালি বেশ সহজ এবং অল্প সময়ে তৈরি করা যায়। এই সন্দেশ মুখে দিলেই মিলিয়ে যায়।
দই সন্দেশ একটি জনপ্রিয় বাংলা মিষ্টান্ন। সাধারণত ছানা (পনির) ও চিনি মিশিয়ে তৈরি করা হয়। কখনো কখনো এলাচি বা জাফরান যোগ করা হয় স্বাদ বাড়ানোর জন্য। এই সন্দেশ বিভিন্ন আকারে পাওয়া যায়, যেমন ছোট ছোট বল বা অন্যান্য নকশা করা। এটি একটি ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি, যা বিভিন্ন উৎসব ও অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা হয়।
পান সন্দেশ মূলত ছানা, চিনি ও পানের নির্যাস দিয়ে তৈরি। দেখতে সবুজ রঙের এবং পানের সুগন্ধযুক্ত। এটি ঐতিহ্যবাহী বাঙালি মিষ্টান্নগুলোর অন্যতম।
আম সন্দেশ মূলত পাকা আমের মৌসুমে তৈরি করা হয়; ছানা, চিনি ও আমের পাল্প যোগে। স্বাদ ও গন্ধ চমৎকার। নরম বলে মুখের মধ্যে মিলিয়ে যায়। বিভিন্ন উৎসব বা বিশেষ অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা হয়।
এ ছাড়া সীতাভোগ, রোজ, কাজু-পেস্তা, প্যারা সন্দেশ পূজার সময় খাওয়ার ধুম বেড়ে যায়।
 ফুড ডেস্ক
ছবি: ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top