ফিচার I কনকোজ্জ্বল
সোনারঙা ত্বক পাওয়া এখন আর কঠিন কিছু নয়। প্রকৃতি থেকে বাছাই করা উপাদানের ব্যবহারই এ জন্য যথেষ্ট
চন্দনের চমক
রূপচর্চায় চমৎকার এই উপাদানের ব্যবহার বহু বছরের পুরোনো। এখনো চন্দন নিয়ে চর্চা আর প্রশংসার কমতি নেই সৌন্দর্যবিশ্বে। কারণ, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টি-এজিং, ইমোলিয়েন্ট, অ্যাসট্রিনজেন্ট আর সিকেট্রাইজিংয়ের মতো একাধিক গুণের আধার সোনারঙা এই কাঠের খন্ডগুলো। গুঁড়া ও তেল- দুভাবেই ব্যবহারের উপযোগী চন্দন। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে চন্দনের গুঁড়া অনবদ্য। এক টেবিল চামচ চন্দনগুঁড়ার সঙ্গে সমপরিমাণ দুধ আর এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে তৈরি প্যাক শুধু মুখত্বক নয়, গলা, ঘাড় এমনকি হাত-পায়ে ব্যবহারের উপযোগী। এটা ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করে। যোগ করে বাড়তি দ্যুতি। বলিরেখা দূর করতেও দারুণ চন্দনের গুঁড়া। সামান্য পানির সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিয়মিত মেখে নেওয়া গেলে ত্বকের তারুণ্য বাড়ে। শুষ্কতা দূর হয়, ত্বক দেখায় পেলব। বয়স রুখতে যারা বাড়তি পরিচর্যা করতে চান, তারা বেছে নিতে পারেন চন্দনের গুঁড়া। সঙ্গে মধু আর ডিমের কুসুম মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে তা মুখে মেখে রাখতে হবে ঘণ্টাখানেকের জন্য। যারা গুঁড়া ব্যবহার করতে চান না, তারা তেল বেছে নিতে পারেন। চন্দনের তেল অ্যাকনে সারাইয়ের দারুণ দাওয়াই। এর অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিসেপটিক প্রোপার্টি ব্রণ বাড়তে দেয় না। ব্রণযুক্ত জায়গাকে রাখে জীবাণুমুক্ত। একটা পরিষ্কার কটনবাডে সামান্য তেল নিয়ে ব্রণের উপর মাখিয়ে দিলেই ব্রণ সারতে শুরু করবে। পানিতে চন্দনের তেল নিয়ে তা দিয়ে ভাপ দেওয়া যেতে পারে মুখে। এটা ব্রণের দাগ সারাতে কার্যকর। চন্দনের তেলে স্কিন লাইটেনিং প্রোপার্টি থাকে, যা ত্বকের অনুজ্জ্বলতা দূর করে। সে ক্ষেত্রে এর তেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে সমপরিমাণ নারকেল তেল।
কার্যকর কোকোয়া
প্রাচীনকাল থেকেই কোকোয়া পরিচিত ‘ম্যাজিক বিন’ হিসেবে। সুস্বাস্থ্য থেকে সৌন্দর্য- সবেতেই এর কার্যকারিতা এক শ তে এক শ। কোকোয়া থেকে তৈরি পাউডার কিংবা বাটার- সবই ব্যবহারের উপযোগী আপাদমস্তক রূপচর্চায়। কোকোয়া বাটার মূলত থেওব্রোমা অয়েল। যা কোকোয়ার বিন থেকে সংগ্রহ করা হয়। প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ এ বাটার ত্বককে ফ্রি র্যাডিকেল থেকে সৃষ্ট ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এ ছাড়া পিগমেন্টেশন সারাতে সাহায্য করে। নিয়ন্ত্রণে রাখে অতিরিক্ত মেলানিন নিঃসরণের হার। ফলে ত্বক দেখায় নমনীয় ও উজ্জ্বল। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা পেতেও কোকোয়া বাটারের কার্যকারিতা কম নয়। যারা অর্গানিক সানস্ক্রিনে স্বচ্ছন্দ, তাদের জন্য সেরা অপশন এটি। কোকোয়া বাটারে রয়েছে পলিফেনল। যা ডিটক্সিফাইয়ার হিসেবে কাজ করে ত্বকের দূষণ দূর করতে সক্ষম। বলিরেখা দূর করার সঙ্গে সঙ্গে এটা ত্বকের মসৃণতা বাড়ায়। রাখে ব্রণমুক্ত। যাদের ত্বকে ফাটা দাগের সমস্যা রয়েছে, তারা নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন কোকোয়া বাটার। এটা দাগ হালকা করে দেবে। ত্বকের কোলাজেন স্তর ঠিক রাখতে সাহায্য করবে। ফলে ত্বক হয়ে উঠবে তারুণ্যোজ্জ্বল। এতে থাকা অলেয়িক অ্যাসিড, পালমিটিক অ্যাসিড আর স্টেয়ারিক অ্যাসিডের মতো অ্যান্টি-অক্সিডেন্টগুলোর সব কটিই ফ্যাটি অ্যাসিড। এগুলোর নিয়মিত ব্যবহার সহজে বুড়িয়ে যেতে দেয় না। পরিপুষ্ট দেখায় বছরের পর বছর।
জাহেরা শিরীন
ছবি: ইন্টারনেট