সম্পাদকীয়
যখন লিখতে বসেছি, কিছুক্ষণ আগেই জানতে পারলাম, বীরাঙ্গনা রমা চৌধুরী আমাদের মাঝে নেই। মন বেদনায় ভরে উঠলো এই সংগ্রামী মানুষটির জন্য। তাঁর কথা দিয়ে শুরু করার কারণ কেবল এটা নয় যে তিনি মুক্তিযুদ্ধকালে হানাদারদের অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। স্বাধীনতা অর্জনের পর বাংলাদেশের মানুষের শিক্ষা ও সংস্কৃতির জন্য নিঃস্বার্থচিত্তে কাজ করেছেন। একটি পাক্ষিক পত্রিকায় তিনি লিখতেন, সম্মানী না নিয়ে এর ৫০ কপি সংগ্রহ করে সেগুলো হেঁটে হেঁটে বিক্রি করতেন। অথচ দেখুন, ষাটের দশক থেকে তিনি ছিলেন কক্সবাজার বালিকা উচ্চবিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক। এই ত্যাগী ও নিবেদিত মানুষকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই।
২০১৮ সালটা ফ্যাশনশিল্পের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং। কেননা এর আগের বছরেই নতুন করে শুরু হয়েছে ব্র্যান্ডগুলোর বিভিন্ন বাণিজ্য-অ্যাজেন্ডা, কো-ব্র্যান্ডের আবির্ভাব, সৃষ্টিশীলতার সঙ্গে প্রযুক্তির যোগ, বিপণনের নতুন কৌশল, সাইবার সংস্কৃতির উত্থান, ভোক্তার উদ্ভাবনী আগ্রহ- সব মিলিয়ে প্রতিযোগিতার জটিল এক পর্বের মধ্যে প্রবেশ করেছে সারা দুনিয়ার ফ্যাশনশিল্প। এই পরিস্থিতির ব্যাখ্যা নিয়ে আমাদের এবারের কভারস্টোরি বৈশ্বিক পোশাকশিল্প।
আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড সংস্কৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশীয় ব্র্যান্ডগুলোতেও যোগ হয়ে চলেছে কো-ব্র্যান্ডের ধারা। এ সংখ্যায় তার কিছু দৃষ্টান্ত ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ, প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ ব্র্যান্ডগুলোর কো-ব্র্যান্ড কালেকশন নিয়ে তাই সাজানো হলো এবারের পোর্টফোলিও।
বিশ্বব্যাপী জীববৈচিত্র্য রক্ষার প্রয়াস, পরিবেশ সচেতনতা ও স্বাস্থ্যানুকূল জীবনধারার প্রতি আগ্রহ বেড়ে চলেছে মানুষের। এরই একটি জোরালো নমুনা ভেগানিজম। পশুপাখির মাংস থেকে শুরু করে প্রাণিজ সবকিছু এড়িয়ে চলতে হবে- এই হলো প্রত্যয়টির মূলমন্ত্র। এ নিয়ে তিনটি রচনা গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করা হলো। বিভিন্ন বিভাগের জন্য নতুন কিছু তো বরাবরের মতো থাকছেই।
বেদনার কথা জানিয়ে শুরু করেছিলাম। তাতেই আবার শেষ করতে হচ্ছে। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান আর নেই। বিশ্বশান্তিতে তিনি যে অবদান রেখেছেন, তা পৃথিবীবাসী শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।
শুভকামনা সবার জন্য।