মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নেটপ্যাক জুরি পুরস্কার জিতে নিয়েছে, বাংলাদেশি চলচ্চিত্র নির্মাতা যুবরাজ শামীমের চলচ্চিত্র ‘আদিম’ ।
“আমার মনে হচ্ছে আমি একটা ঘোরের মধ্যে আছি। পুরো ব্যাপারটাই একটা ফ্যান্টাসি মনে হচ্ছে,” শুক্রবার পুরস্কার জেতার পর শামীম এই অভিজ্ঞতার কথা বলেন। এই অর্জন তিনি উৎসর্গ করেন বাবা শাহজাহান ভূঁইয়াকে।
শামীম ও চলচ্চিত্রটির নির্বাহী প্রযোজক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।আদিমের ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার শো ৩০ আগস্ট মস্কোতে ৪৪তম এমআইএফএফ-এ প্রদর্শিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে শামীম বলেন, পুরস্কারটি তার আত্মবিশ্বাসকে অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে।
সাংবাদিকরা সিনেমাটি দেখার পর আমাদের সাথে একটি প্রশ্ন-উত্তর সেশনে অংশ নিয়েছেন। আমরা দীর্ঘ আলোচনা করেছি। আমি তাদের বলা একটা অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করতে চাই. তারা বলেছে তারা সিনেমাটি দেখার পরে একটি সুখী জীবনযাপনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
ছবিটি বস্তিবাসীদের জীবন সংগ্রামের চিত্র তুলে ধরেছে এবং ঢাকার একটি বস্তিতে বসবাসকারীরা এতে অভিনয় করেছেন।
উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হচ্ছে, শামীম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটির নির্মাণের জন্য সাধারণ মানুষের কাছে যান এবং প্রতি ইউনিট ৫ হাজার টাকায় শেয়ার বিক্রি করে নির্মাণ ব্যয়ের পুরো তহবিল সংগ্রহ করেন।
চলচ্চিত্রটির শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয় করেন বাদশা, দুলাল, সোহাগী এবং সাদেক। ছবিটি শামীমের প্রোডাকশন হাউস রসায়নের ব্যানারে নির্মিত। সহ-প্রযোজক হিসেবে রয়েছে সিনেমেকার ও লোটাস ফিল্মস। চিত্রগ্রাহক ছিলেন আমির হামজা, সাউন্ড ও কালার ইউনিটের প্রধান ছিলেন সুজন মাহমুদ।
শামীম বলেন, “এই ছবিতে কোনও পেশাদার অভিনেতা-অভিনেত্রী নেই। প্রত্যেকেই তাদের নিজস্ব ভূমিকা পালন করেছে।”
নির্মাতা ছবিটি নির্মাণের জন্য সাত মাস টঙ্গীর একটি বস্তিতে থেকেছেন এবং সেখানে তিনি বস্তিবাসীদের চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। শামীম সেখানে অবস্থানকালে অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হন। পুলিশ একবার সন্দেহভাজন মাদকসেবী হিসেবে তাকে গ্রেফতার করে। এমনকি স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীরা তাকে সাংবাদিক ভেবে হুমকি দিয়েছিল।আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর ইতালীর ‘রিলিজিয়ন টুডে’ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘আদিম’ এর প্রিমিয়ার হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু, বাংলাদেশে কবে সিনেমাটি প্রদর্শিত হবে তা নিশ্চিত করতে পারেননি পরিচালক।বলাই বাহুল্য, দেশে চলচ্চিত্র মুক্তি দিতে হলে একজন ব্যক্তিকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সমিতির সদস্য হতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন সেন্সর সার্টিফিকেট।তিনি বলেন, “অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হওয়া আমার মতো একজন স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতার জন্য একটি জটিল দীর্ঘ প্রক্রিয়া। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে ছবিটি মুক্তি দিতে চাই।”
শামীম আরও বলেন, সিনেমা হলে মুক্তির ক্ষেত্রে কোনো বাধার সম্মুখীন হলে তিনি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ছবিটি মুক্তি দেবেন।