রোববার (১৬ জুন ২০২৪) শেষ হলো চার দিনের আর্কা ফ্যাশন উইক সামার ২০২৪। শেষ দিন অন্যান্য আয়োজনের পাশাপাশি ছিল বিশেষ সেমিনার: ‘সমসাময়িক ভোক্তারা আসলে কী চান: রিটেইল বাজারে ঘাটতি’। মডারেট করেন আইস মিডিয়া লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আউমিয়া খন্দকার। আলোচনা হয় সমসাময়িক ক্রেতাদের চাহিদা এবং বাংলাদেশের রিটেইল মার্কেটের ঘাটতি নিয়ে৷
আলোচক ছিলেন কে -ক্রাফটের ম্যানেজিং পার্টনার এবং দেশী দশ-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা খালিদ মাহমুদ খান, ফ্যাশন ইনফ্লুয়েন্সার সোবিয়া আমিন এবং ট্যাপারডের প্রতিষ্ঠাতা রায়ান চৌধুরী।
বাংলাদেশের বয়নশিল্পের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি যেমন সমৃদ্ধ, সেই হিসেবে বর্তমান খুচরা বাজার তত এগোতে পারেনি। আমাদের লোকাল বাজারে যা চাই, তেমন পাই না। তাই বিদেশি ব্র্যান্ডের দিকে ঝুঁকতে হয়। রেডি টু ওয়্যারের ক্ষেত্রে এই ঘাটতি সবচেয়ে বেশি।
রিটেল বাজার, ক্রেতা ও নতুন ব্র্যান্ডগুলোর চ্যালেঞ্জ, নিজের অভিজ্ঞতা ও মতামত তুলে ধরেন খালিদ মাহমুদ খান। গল্প শোনান কে-ক্রাফটের পাশাপাশি কে ইয়াং আনার। বলেন, ‘অন্য ব্র্যান্ডগুলো শুধু ঈদকে কেন্দ্র করে পোশাক তৈরি করত। ঋতুভিত্তিক কাজ করা শুরু করে কে-ক্রাফট। এখনকার তরুণ ক্রেতারা সচেতন। টেকসই ফ্যাশন চায়। এখনকার ছেলেমেয়েরা ট্র্যাডিশন ও আধুনিক পোশাকের সংমিশ্রণ পছন্দ করে। আর ক্রেতারা চায় অনলাইনে নির্ভেজাল কেনাকাটা করতে।’
‘নতুনরাও সংস্কৃতি-পুরনো ধারাকে ভালোবাসে। সমসাময়িক বিষয় মানে ঐতিহ্য থাকবে না সেটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা,’ যোগ করেন অমিয়া খন্দকার।
কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ও সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট সোবিয়া আমিন বলেন, ‘জেন-জি প্রজন্ম অনেক সাহসী। নিজের মতো করে ফ্যাশন ওয়্যার চায় তারা। এদের মাঝে দু ধরনের ফ্যাশনিস্তা আছে। এক দল যারা একবার পরে আর পরতে চায় না। আবার আরেকদল আছে পরিবেশ নিয়ে সতেচন। তবে আমাদের ডিজাইনের এক্সপোর্ট কম। হাতে গোনা কয়েকজন। আর ক্রেতারা নিজেদের লোকাল ব্র্যান্ডকে সাপোর্ট করে কম। ব্র্যান্ডগুলোর উচিত আন্তর্জাতিক বর্তমান তারা নিয়ে ধারণা রাখা।’
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তার কথায় উঠে আসে। ফ্যাশন ব্যবসায়ী ও ইনসাইডারদের মধ্যে সংবদ্ধতার অভাব।
সেই প্রসঙ্গ টেনে খালেদ মাহমুদ যোগ করেন, ‘আমদানিতে ২২.৫% কমানো হয়েছে ট্যাক্স। আর দেশীয় উৎপাদকদের ট্যাক্স বাড়ছে। ইন্ডাস্ট্রির সবাই মিলে কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ আমরা৷ আর মিডিয়া ও ফ্যাশন হাউসগুলোর যোগাযোগ আরও বাড়াতে হবে।’
রাইয়ান চৌধুরী শুরু করেন ভিন্নভাবে: ‘আসলে ওরা কী চায়– ওরা জানে না। তারা শুধু অনুভব করতে চায়। এ ক্ষেত্রে ডিজাইনারদের একটি স্ট্যান্ডার্ড তৈরি করা উচিত। ফ্যাশন ট্রেন্ড আমাদের দ্বারা প্রভাবিত হলেই ক্রেতাদের ধরে রাখা যাবে।’
খালেদ মাহমুদ খান সমসাময়িক ক্রেতাদের পেতে ইনসাইডাররা কী কী পদক্ষেপ নিতে পারে সেসব নিয়েও আলোচনা করেন: ‘ক্রেতাদের ভিন্ন কিছু স্টাইলিং পরিচিত করা ব্র্যান্ডগুলোর ওপর বর্তায়। ফ্যাশন হাউস থেকে ক্রেতাদের কাছে ঠিকভাবে পৌঁছে দেওয়া চাই। ক্রেতাদের সেবায় আরও কিছু টেকনিক্যাল মাধ্যম আছে। শুধু ডিজাইনার আর কনজিউমার না, পণ্যগুলোকে ভিন্নভাবে উপস্থান করতে উপযুক্ত লোক দরকার।’
সেমিনার শেষে প্রশ্ন উত্তর পর্বে আজরা মাহমুদ জানতে চান বাংলাদেশের রিটেল মার্কেটে চাহিদা অনুযায়ী পোশাক আসছে কি না। আর নতুন সংগ্রহ আনার আগে কোনো স্টাডি হয় কি না।
রাইয়ান চৌধুরী জানান, স্ট্যান্ডার্ড ডিজাইনদের থাকা আসা উচিত। বিদেশিদের ট্রেন্ড অনুসরণ করে সেই সফলতা পাওয়া যাবে না।
- ক্যানভাস অনলাইন