শনিবার (১২ এপ্রিল ২০২৫) নারায়ণগঞ্জের আর. পি. সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাশন অ্যান্ড ডিজাইন ডিপার্টমেন্টের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় মনোমুগ্ধকর ‘ফল-২০২৪’ অ্যাকাডেমিক এক্সিবিশন ও ফ্যাশন শো। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গুণী ব্যক্তিত্ব ও শিক্ষার্থীরা। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মনীন্দ্রকুমার রায়। আরও উপস্থিত ছিলেন রেজিস্ট্রার সরকার হিরেন্দ্র চন্দ্র, ডেপুটি রেজিস্ট্রার অমিত রায়, কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা আবু আলম মো: শহীদ খান, আইকিউএসির পরিচালক অধ্যাপক ড. নাজমুল হাসান, বিজনেস ও ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, সম্মানিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। সভাপতিত্ব করেন ফ্যাশন অ্যান্ড ডিজাইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক তানজিল হাসনাইন মঈন রনীত।
অ্যাকাডেমিক টু মার্কেটপ্লেসের কর্মমুখী শিক্ষা প্রদানের ধারাবাহিকতায় আর. পি. সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাশন অ্যান্ড ডিজাইন বিভাগ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গঠন করেছে কার্যকরী সম্পৃক্ততা। ইপিলিয়ন গ্রুপ, আর. এস. করপোরেশন, এম. এস. ডাইং, নেভি করপোরেশন, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং রূপালী ব্যাংক পিএলসি-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আয়োজকরা। বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানানো হয় রূপালী ব্যাংক পিএলসি, ইপিলিয়ন গ্রুপ ও আরহাব টেক্সটাইল অ্যান্ড প্রিন্টিংয়ের প্রতি।
ফ্যাশন শোতে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল ডিজাইন ফুটে ওঠে বিভিন্ন থিমভিত্তিক কালেকশনের মাধ্যমে। ডিজাইনার হিসেবে অংশগ্রহণ করেন ফ্যাশন অ্যান্ড ডিজাইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাহিব শেখ, ফাহারিহা ইসলাম অর্চি, সাদিয়া রহমান সারা, সুমাইয়া আক্তার তানহা, হালিমা আক্তার, মিশু আক্তার টিনা, ইসরাত জাহান সাদিয়া ও ফাহিমা আক্তার। তাদের ডিজাইনকৃত ড্রেসগুলো মডেলরা প্রদর্শন করেন। শাড়ি ও পাঞ্জাবির মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয় বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। শোর স্টপার হিসেবে র্যাম্পে অংশ নেন সিএসই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তৃণা সাহা , ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আনিসুর রহমান চৌধুরী এবং প্রভাষক সঙ্গীতা চৌধুরী।
পুরো আয়োজনের ফ্যাশন কোরিওগ্রাফার ছিলেন ফ্যাশন ডিজাইন বিভাগের প্রভাষক সৌরভ কান্তি রায়।
অ্যাকাডেমিক এক্সিবিশন উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মনীন্দ্রকুমার রায়। শিক্ষার্থীদের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রদান করা হয় মেডেল ও সার্টিফিকেট। পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা হলেন– বেস্ট ডিজাইনার (মিডিয়াম: পেন অ্যান্ড পেন্সিল) জোয়াইরিয়া ফাদিলা, বেস্ট ডিজাইনার (মিডিয়াম: কালার) আতকিয়া সাহারা, বেস্ট ডিজাইনার (অ্যাপারেল) সুমাইয়া আক্তার তানহা এবং অ্যাকাডেমিক এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ইসরাত জাহান সাদিয়া।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মণীন্দ্রকুমার রায় বলেন, ‘ফ্যাশন ও ডিজাইন বিভাগ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী শক্তির প্রতীক। শিক্ষার্থীদের হাতে তৈরি এমন নান্দনিক কাজ দেখে আমি সত্যিই গর্বিত। তাদের শিল্পসত্তা ও পেশাদারিত্ব আমাদের ভবিষ্যৎ শিল্পজগতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে বিশ্বাস করি। বিশ্ববিদ্যালয় সব সময় শিক্ষার্থীদের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করে যাবে।’
রঙ বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌমিক দাস বলেন, ‘বাংলাদেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির ভবিষ্যৎ গড়ার ক্ষেত্রে অ্যাকাডেমিক ইনস্টিটিউটগুলোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আর. পি. সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাজ দেখে আমি মুগ্ধ। এদের মধ্যে অনেকেই ভবিষ্যতের লিডিং ডিজাইনার হয়ে উঠবেন বলে আশাবাদী। রঙ বাংলাদেশ সব সময় নতুন প্রতিভাদের পাশে থাকবে।’
ইউনাইটেড সোর্সিংয়ের ম্যানেজিং পার্টনার মুনতাসির মঈন বলেন, ‘শিক্ষা ও ইন্ডাস্ট্রির মাঝে একটি সেতুবন্ধন তৈরি করতে ফ্যাশন ডিজাইন বিভাগ যেভাবে কাজ করছে, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। শিক্ষার্থীদের প্রজেক্ট ও প্রেজেন্টেশন দেখে বোঝা যায়, তারা কেবল অ্যাকাডেমিক নয়, বাস্তব জীবনের চ্যালেঞ্জগুলোর জন্যও প্রস্তুত। ইউনাইটেড সোর্সিং ভবিষ্যতেও এই বিভাগের পাশে থাকতে আগ্রহী।’
ফ্যাশন অ্যান্ড ডিজাইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তানজিল হাসনাইন মঈন রনীত বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য শুধু ডিজাইন শেখানো নয়; বরং শিল্প, সংস্কৃতি, প্রযুক্তি ও বাজারচাহিদার মধ্যে একটি ভারসাম্য তৈরি করা। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও পরিশ্রমই আমাদের অনুপ্রেরণা। আমরা ধন্য ও গর্বিত এমন প্রতিভাবান শিক্ষার্থী ও শক্তিশালী ইন্ডাস্ট্রি কানেকশন পেয়ে।’
- ক্যানভাস অনলাইন
ছবি: আয়োজকদের সৌজন্যে