ঢাকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত প্রিমিয়াম বুটিক হোটেল গোল্ডেন টিউলিপ দ্য গ্র্যান্ডমার্ক-ঢাকা আয়োজন করেছে ‘ঢাকাইয়া ফুড ফেস্টিভ্যাল ২০২৪’। এই কুলিনারি উৎসব শুরু হয়েছে ১২ ডিসেম্বর; চলবে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত । এতে ঢাকার সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময় খাদ্য ঐতিহ্যকে উদযাপন করা হচ্ছে।
উৎসবের উদ্বোধন করেছেন গোল্ডেন টিউলিপ দ্য গ্র্যান্ডমার্ক-ঢাকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক খালেদুর রহমান এবং ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের জেনারেল ম্যানেজার মোঃ কামরুল ইসলাম।
ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু সব বিখ্যাত খাবারের নাম শুনলে জিভে জল আসবেই। কত পদের যে সুস্বাদু খাবার, কত যে বাহারি নাম! সেইরকম স্বাদের খাবারের মিলন মেলা হয়ে উঠেছিল গোল্ডেন টিউলিপ। ঢাকাইয়া ঐতিহ্যবাহী খাবারের সুনাম অবশ্য অল্পদিনের নয়। দীর্ঘ কয়েকশ বছরের অধিক সময় ধরে ঐতিহ্যবাহী ঢাকাইয়া খাবার মানেই সেরা আর বিখ্যাত খাবারের সমারোহ। ছোট -বড় সবার কাছে অত্যন্ত মুখরোচক এসব খবার। সকালের নাস্তা হোক বা দুপুরের লাঞ্চ , বিকালের নাস্তা অথবা রাতের ডিনার সবকিছুতেই এসব খাবারের জুড়ি মেলা ভাড়।
গোল্ডেন টিউলিপ দ্য গ্র্যান্ডমার্ক-ঢাকা তাদের পথচলায় সব সময় দেশীয় ঐতিহ্য ধারণ করে।দেশীয় খাবারকে প্রাধান্য দেওয়ার অংশ হিসেবে আয়োজিত হয়েছিল এই ঢাকাইয়া ফুড ফেস্টিভ্যাল। ছিল দেশীয় মশলা ও উপাদান ব্যবহারের আধিক্য। এই হোটেলে প্রচুর বিদেশি অতিথিরা অবস্থান করে থাকেন।তাদের মধ্যেও দেখা গিয়েছে বাঙালি ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু সব বিখ্যাত খাবারের প্রতি আগ্রহ। এর ফলে, তাদের কাছে বাঙালিদের আতিথেয়তার প্রচার হয়েছে।
এখানকার খাবার মূলত মসলা, ভিন্ন রকমের রান্না ও বিভিন্ন উপাদানে তৈরির জন্য বিখ্যাত। বিগত কয়েকশ বছরের ইতিহাসে শাসকদের রাজকীয় রান্নাঘরে প্রস্তুত করা সমৃদ্ধ, সুগন্ধযুক্ত ও সুস্বাদু খাবার থেকে উদ্ভূত- যা পরবর্তীকালে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছেছিল- এসব খাবার সে যুগে একটি মূল্যবান শিল্প ছিল। এই রন্ধনপ্রণালীর বিশেষত্ব হলো এর মাংস, রাজকীয় সুগন্ধ এবং সূক্ষ্ম পরিমাণে মসলা। ক্ষেত্রবিশেষে প্রায়ই দুধ বা ক্রিম ব্যবহার করা হয় এখানকার রান্নায়।
ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রাজকীয় খাবারের এই আয়োজনে স্বাদ গ্রহণ করতে রয়েছে ঢাকাই বিরিয়ানি থেকে শুরু করে মসলাদার মাছ ডোপিয়াজা, সুগন্ধি মোরগ পোলাও, আচারি খিচুড়ি, লুচি, পরোটা, কাবাব, চাপ, গরুর কোরমা, ক্রিমি চিংড়ি মালাইকারি, ক্রিস্পি হিলশা ফিশ ভাজি, মাটন রেজালা, আইর মাছের ঝোল ফ্রাই, হাঁসের ঝাল ভূনা, চিকেন রেজালা,মাটন লেগ মাসাল্লাম, সরিষা কই মাছ, বিফ ভূনা, বিফ তেহারি, পেঁয়াজু, বেগুনি, চিকেন মালাই বটি, চিকেন জালি কাবাব, মাটন পায়া নিহারি প্রভৃতি। শাকাহারীরা সুস্বাদু সজনে ডাটা ডাল এবং মোগলাই কফতা কারি উপভোগ করার সুযোগ আছে এখানে, যা স্বাস্থ্যসম্মত ও সুস্বাদু। নরম রুমালি রুটি বা মিষ্টি শিরমালের সঙ্গে এই খাবারগুলো আরও সুস্বাদু হয়ে উঠেছে।
মিষ্টিপ্রিয়দের জন্য আছে সমৃদ্ধ বাকরখানি, বিলাসবহুল শাহী তুকড়া, সুগন্ধি জর্দা পোলাও, ঠান্ডা ফালুদা, ক্লাসিক গুড়ের পায়েশ, রসগোল্লা, মিষ্টি দই, রসমলাই, জর্দা, ঢাকাই শাহী ফিরনি, দুধের সঙ্গে বাকরখানি, সেমাই এবং বিভিন্ন ধরনের ঐতিহ্যবাহী পিঠা ও কেক। সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের চাটনি ও আচার, যেমন তেঁতুলের চাটনি, কাঁচা আমের আচার ও মসলাদার পেঁয়াজের চাটনি খাবারকে আরও সমৃদ্ধ করে তুলেছে।
ডাইনিং অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত করার জন্য, হোটেলের মাল্টি-কুইজিন রেস্তোরাঁ গোল্ডেন ডাইনে সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত লাইভ বাদ্যযন্ত্রের সুর ভোজনরসিকপ্রেমীদের মনে সংগীতের খোরাক মিটাচ্ছে। ব্যক্তিপ্রতি ৪,৮৯৯ টাকা গুনতে হচ্ছে এই কুলিনারি উৎসব উপভোগ করতে। নির্বাচিত ব্যাংক কার্ডের সঙ্গে আছে ‘১টি কিনুন ২টি পান’ বুফে অফার এবং শিশুদের জন্য বিনামূল্যে (৫ বছরের কম বয়সী সর্বোচ্চ দুজন) খাবারের ব্যবস্থা।
এ ছাড়াও থাকছে রোমাঞ্চকর র্যাফেল ড্রয়ে অংশ নিয়ে উৎসবটির বিমান পরিবহন অংশীদার ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের সৌজন্যে ঢাকা-বাংকক-ঢাকা, ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা ও ঢাকা-সিলেট-ঢাকা কাপল রিটার্ন এয়ার টিকিট জয়ের সুযোগ। ফ্যাশন পার্টনার ব্লুচিজ ভাগ্যবান অতিথিদের জন্য বিনামূল্যে গিফ্ট ভাউচার অফার করেছে। আয়োজনটির মিডিয়া পার্টনার হিসেবে আছে ক্যানভাস, প্রথম আলো ডিজিটাল ও এটিএন নিউজ।
- ফুয়াদ/ক্যানভাস অনলাইন
ছবি: ফুয়াদ রূহানী খান