রাজধানীর আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে চলছে মাধুরী সঞ্চিতা স্ম্রৃতির প্রথম একক জুয়েলারি প্রদর্শনী ‘প্লিজেন্টনেস: দ্য স্টোরি অব মাধুরী’। বিভিন্ন গাছের বীজ, মাটি,কাঠ ঝিনুক, কড়ি, শঙ্খ, মুক্তাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদানের সাথে সোনা, রূপাসহ অন্যান্য ধাতু; যেমন লোহা, তামা, পিতল দিয়ে বানানো গয়না নিয়ে প্রদর্শনীটি সাজিয়েছেন এই ফ্যাশন ও জুয়েলারি ডিজাইনার।
১ জুলাই (শুক্রবার) এর উদ্বোধন করেন ডিজাইনার স্ম্রৃতির মা সেলিনা সুলতানা এবং শাশুরি আয়েশা খাতুন। ৮ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন দুপুর ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রদর্শনী সকলের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে।
‘ক্যানভাস’কে ডিজাইনার স্ম্রৃতি বলেন, ‘প্রতিটি নতুন ভোরে প্রকৃতি আমাকে অনুপ্রাণিত করে। আমি ছোটবেলা থেকেই প্রকৃতি দ্বারা অনুপ্রাণিত। সব মানুষই আসলে তাই। পৃথিবী সৃষ্টির সময় থেকেই মানুষ প্রকৃতির কাছ থেকে পেয়েছে বেঁচে থাকা ও সৃষ্টির অনুপ্রেরণা। আমার বেলায় এই অনুভুতিটি আরও বেড়েছে চারুকলায় পড়ার সময়ে।’
‘আমাকে সব সময় আন্দোলিত করে প্রকৃতির ঋতুচক্র। প্রতিটি ঋতুর আলাদা রঙ, রূপ, গন্ধ আমাকে মোহিত করে। এই যে প্রতিটা ঋতুর স্বকৃয়তা, এটাই আমাকে রঙ-রূপ-সৌন্দর্যে নতুন নতুন সৃষ্টির অনুপ্রেরণা দেয়, ’ যোগ করেন তিনি।
মাধুরী সঞ্চিতা স্ম্রৃতি আরও বলেন, ‘প্রকৃতির কাছ থেকেই আমি রঙ, আকৃতি, কম্পোজিশন পাই। একই গাছের পাতার অনেক শেডের সবুজ অথবা মাটির বিচিত্র রঙ। আবার মাছের, পাখির পালকের, আকাশের রঙ, গাছের শিরা-মূলের কম্পোজিশন আর সাগর-নদীর শ্রোতে পাড়ের আকৃতি– সবই আমাকে টানে। তাই আমি আমার কাজে প্রাকৃতিক উপাদানকেই বেছে নিয়েছি। পোশাকে তাই প্রাকৃতিক রঙ আর গহনায় সুতা, কাঠ, মাটি, শঙ্খ , মুক্তা, ও সোনা, রূপা, তামার মতো ধাতুর সাথে ব্যাবহার করি বিভিন্ন বীজ।’
তিনি বলেন, ‘বীজকে আমার মনে হয় সকল সৃষ্টির প্রাণ। বীজ থেকেই নতুন প্রাণের সৃষ্টি হয়, আর তাই এই বীজ ব্যবহার করেই আমি প্রাণ দিতে চাই ধাতব বস্তুতে। প্রকৃতিরই অপর সৃষ্টির মধ্যে প্রেম জাগাতে চাই, প্রান জাগাতে চাই। বীজের এসব গহনায় আমি প্রকৃতিকে ধারণ করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃতি, রঙ, ও প্রকৃতির সাথে নিত্য পরিবর্তিত মানুষের মনস্তত্ত্বও আমাকে অনুপ্রাণিত করে। এই যে প্রকৃতির ঋতুচক্রের সাথে সাথে নারীর চিন্তা, মেজাজ মননের পরিবর্তন; আবার এই ঋতুচক্রের সাথেই নতুন সৃষ্টির যোগ, সম্পর্ক… এসব কারণেই ঋতু আমার কাছে সৃষ্টিশীলতার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শব্দ মনে হয়। তাই আমি ঋতুর ঋ-কে বেছে নিয়েছি আমার সৃষ্টির পরিচয় হিসেবে। ঋ-এর প্লাটফর্ম ব্যবহার করে বীজের গহনায় নারীকে সাজাই।’