স্মার্টফোনে ঘন্টার পর ঘন্টা ফেসবুক করে চলেছেন? প্রতি মুহূর্তে ইউজ করছে হোয়াটসঅ্যাপ? মাঝেমধ্যেই ইনস্টাগ্রাম খুলে দেখে চলেছেন কে কোন ছবি আপলোড করল? ফেসবুকের টাইমলাইমে দিয়ে চলেছেন একটার পর একটা পোস্ট? কমেন্ট ও রিপ্লাইয়ে মেতে রয়েছেন বহু সময়? কিংবা ইনবক্সে আড্ডা চলছে ঘন্টার পর ঘন্টা? এসবই ভয়ঙ্কর আসক্তির লক্ষণ। কোকেন সেবন করলে যেমন মারাত্মক আসক্তি তৈরি হয় সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তিও ঠিক তেমনই। তাই ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমগুলোকে বিশেষজ্ঞরা নাম দিয়েছেন ‘ডিজিট্যাল কোকেন’। এই নামে ব্রড হুডলস্টনের একটি বইও বিশ্বের নানা মহলে আলোড়ন তৈরি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং ভিডিও গেম কীভাবে মনোজগতে এবং মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলছে, সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আলাপ-আলোচনা তুঙ্গে।
আয়ারল্যান্ডের একটি ডিজিট্যাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্মার্ট নির ডিরেক্টর নোমাহ ম্যাক এলাহটনও ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমগুলোকে ডিজিটাল কোকেন হিসেবে আখ্যা দিয়ে জানিয়েছেন, মাত্রাতিরিক্ত সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করার কারণে তার প্রভাব পড়ছে নাগরিক জীবনের পারস্পরিক সম্পর্কে, এমনকি পারিবারিক জীবনেও। মানবিক সম্পর্কগুলোর বনিয়াদ নষ্ট করে দেওয়ার মতো সামাজিক মাধ্যমগুলোর কুপ্রভাব ছড়িয়ে পড়ছে।
আয়ারল্যান্ডের মার্কেট সার্ভে করার প্রতিষ্ঠান আইপিএসওএস এমআরবিআই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর বিষয়ে একটি সার্ভিস রিপোর্ট প্রকাশ করে জানিয়েছে, সে দেশের ৬৪ শতাংশ মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে। তার মধ্যে ৭১ শতাংশ মানুষ প্রতিদিন ফেসবুকে আসেন। এ ছাড়া দেখা গেছে, সে দেশের ফেসবুক ব্যবহারকারী নাগরিকেরা গড়ে প্রতিদিন আড়াই ঘন্টা সময় ধরে ফেসবুকে লগ ইন থাকে। তবে নোমাহ ম্যাক এলাহটনের বক্তব্য, ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে কীভাবে ব্যবহার করছেন, সেই বিষয়ে শিক্ষার প্রয়োজন আছে। সঠিকভাবে ভার্চু্য়াল এই মিডিয়াগুলোকে ব্যবহার করলে আসক্তির আশঙ্কা থাকে না। এই বিষয়ে তারা আয়ারল্যান্ডের মানুষকে সচেতন ও শিক্ষিত করে তোলার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।