বাংলাদেশে তরুণ ব্যবহারকারীদের ডিজিটাল নিরাপত্তা এবং সুস্থতা নিশ্চিত করতে ‘ফ্যামিলি পেয়ারিং’ টুলে নতুন এবং উন্নত ফিচার চালু করেছে টিকটক। এই আপডেটের মাধ্যমে অভিভাবকেরা তাদের সন্তানের অনলাইন ব্যবহারের ওপর আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবেন এবং টিনএজাররা গড়ে তুলতে পারবে আরও স্বাস্থ্যকর ডিজিটাল অভ্যাস। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
নতুন ফিচারের মধ্যে অন্যতম হলো ‘টাইম অ্যাওয়ে স্কেডিউলিং’, যার মাধ্যমে অভিভাবকেরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্ক্রিন-বিহীন সময় নির্ধারণ করতে পারবেন; যেমন স্কুল চলাকালীন সময়, ঘুমানোর সময় কিংবা ছুটির দিন। যদিও টিনএজাররা অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইমের জন্য অনুরোধ করতে পারবে, তবু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অভিভাবকদের হাতেই থাকবে।
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ আপডেট হলো, এখন অভিভাবকেরা দেখতে পারবেন তাদের সন্তানের নেটওয়ার্ক অ্যাক্টিভিটি– যারা তাদের সন্তানকে ফলো করছেন, যাদের তারা ফলো করছে এবং যেসব অ্যাকাউন্ট তারা ব্লক করেছে ইত্যাদি। এই ফিচার অনলাইন সম্পর্ক নিয়ে পরিবারের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা উৎসাহিত করবে এবং অভিভাবকেরা তাদের সন্তানের ডিজিটাল লিটারেসি দক্ষতা গড়ে তুলতে সহায়তা করতে পারবেন।
এ ছাড়া, শিগগিরই চালু হতে যাচ্ছে একটি নতুন ‘প্রোঅ্যাকটিভ রিপোর্টিং অ্যালার্ট’ ফিচার, যেখানে কিশোর-কিশোরীরা যদি কোনো ভিডিওতে রিপোর্ট করে, তাহলে তারা একই সঙ্গে অভিভাবক বা বিশ্বস্ত কোনো প্রাপ্তবয়স্ককে সেটি জানাতে পারবে; এমনকি তারা ফ্যামিলি পেয়ারিং ফিচার ব্যবহার না করলেও।
এর পাশাপাশি, টিকটক চালু করছে ‘উইন্ড-ডাউন’ নামে একটি নতুন ফিচার, যা ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। রাত ১০টার পর যদি কোনো টিনএজার টিকটকে সক্রিয় থাকে, তাহলে পুরো স্ক্রিনে একটি রিমাইন্ডার শান্ত সুরের ভিডিও চলবে, যা তাদের রিল্যাক্স করতে সহায়তা করবে এবং সময় সম্পর্কে সচেতন করে তুলবে। এরপরও যদি ব্যবহার অব্যাহত থাকে, তাহলে আরও জোরালো রিমাইন্ডার দেখানো হবে। প্রাথমিকভাবে দেখা গেছে, বেশির ভাগ টিনএজার নিজেরাই এই ফিচার চালু রাখছে, যা প্রমাণ করে এটি স্ক্রিন-টাইম ব্যবহারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। সামনে এই ফিচারে গাইডেড মেডিটেশন যুক্ত করার পরিকল্পনাও রয়েছে, যা ঘুমের মান উন্নয়নে সহায়ক হতে পারে।
এ প্রসঙ্গে টিকটক কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, ‘টিকটক সব সময় নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়। ফ্যামিলি পেয়ারিং-এর এই নতুন আপডেটগুলোর মাধ্যমে গ্রাহকদের পরিবারের হাতে তুলে দিচ্ছি এমন সব টুল, যা ডিজিটাল জগতে টিনএজারদের স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়তে সহায়তা করবে। নিরাপদ ও ইতিবাচক অনলাইন পরিবেশ নিশ্চিত করতে টিকটক সব সময় সচেষ্ট।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে, টিকটক টেলিফোনিকার সঙ্গে যৌথভাবে মোবাইলভিত্তিক বয়স যাচাইকরণ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। এতে মোবাইল অপারেটরের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে। এ ছাড়াও, টিকটক ‘মাল্টি-স্টেকহোল্ডার ডায়ালগ অন এইজ অ্যাসিউরেন্স’-এ অংশ নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের সঙ্গে কাজ করছে, যেমন সেন্টার ফর ইনফরমেশন পলিসি লিডারশিপ ও উই প্রোটেক্ট গ্লাবোল অ্যালায়েন্স।
চলতি বছর টিকটক গ্লোবাল ইউথ কাউন্সিল আরও সম্প্রসারণ করতে যাচ্ছে। ২০২৩ সালে চালু হওয়া এই কাউন্সিল নিরাপত্তা, সুস্থতা এবং অন্তর্ভুক্তি বিষয়ক নীতিমালার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। এই সম্প্রসারণ টিকটকের তরুণদের অভিজ্ঞতা ও প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্ল্যাটফর্মটিকে এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে।
- ক্যানভাস অনলাইন
ছবি: সংগ্রহ এবং টিকটক-এর সৌজন্যে