তাসমিনা খান মজলিস বাংলাদেশি ঐতিহ্যের একজন প্রতিভাধর শিল্পী। তিনি বিভিন্ন ঘরানার শিল্পকর্ম নিয়ে কাজ করেন যা তাঁকে ইতোমধ্যেই অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের শিল্পজগতে বিশেষ পরিচিতি এনে দিয়েছে। প্রাথমিকভাবে উদ্দীপনামূলক ছবি নিয়ে কাজ করলেও সাইট স্পেসিফিক ইলাস্ট্রেশান দিয়েও তিনি মুগ্ধতা সৃষ্টি করেছেন।
তাসমিনা কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৭ সালে গ্রাফিক্স ডিজাইনের ওপর স্নাতক সম্পন্ন করেন, এরপর ২০১৯ সালে ক্রিয়েটিভ আর্টস ও কমিউনিকেশনে স্নাতকোত্তর করেন ডেকিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
তাঁর শৈল্পিক যাত্রা বিভিন্ন মাইলফলক স্পর্শ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ইতালিতে মর্যাদাপূর্ণ ‘XIII ফ্লোরেন্স বিয়েনিয়াল ২০২১’ এ অংশগ্রহণ কিংবা ‘দ্য অস্ট্রেলিয়া মুসলিম আর্টিস্টস ২০২১’ প্রদর্শনীতে তাঁর ‘বিটুইন ওয়ার্ল্ডস’ শিল্পকর্মের জায়গা করে নেয়া।
তাসমিনা খান সম্প্রতি রাজধানীর ঢাকা গ্যালারীতে ‘ইনার প্যাসেজেস’ শিরোনামে তাঁর প্রথম একক প্রদশর্নী দিয়ে দর্শকদের বিমোহিত করেছেন। তিনদিনব্যাপী এই প্রদর্শনীতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দর্শক ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ড. মোঃ ইকবাল এবং বিশিষ্ট ভিজ্যুয়াল আর্টিস্ট কনক চাঁপা চাকমা উপস্থিত ছিলেন।
তাসমিনা খানের অসাধারণ শিল্পর্কম মানবমনের গভীরতম দিকগুলো অণ্বেষণ করে, যা অভিজ্ঞতা, স্মৃতি ও স্বপ্ন দিয়ে ভরপুর। তাঁর প্রতিটি তুলির আঁচড় এবং রঙের মধ্যে মানুষের ভেতরের সচেতন ও অবচেতন ভাবনার আখ্যানগুলো ফুটে উঠে। বিশেষ করে করোনাকালীন এবং করোনা পরবর্তী সময়টুকু মানুষের মনস্তত্ত্বে যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো তা তিনি তুলে ধরেছের দারুণ ভঙ্গিতে।
গুণী এই শিল্পী তাঁর কাজে স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে তাঁর অবচেতন মনকে প্রাধান্য দিয়েছেন। এতে করে ক্যানভাসে তাঁর গভীর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও স্পর্শকাতর মনের এক অনন্য সংম্রিশন ঘটেছে। তিনি নৈপুণ্যের সাথে মানব মনের সহজাত সৌন্দর্যকে কাগজে জলরঙ, কালি এবং কাঠকয়লা দিয়ে মূর্ত করেছেন।
তিনি তাঁর এই প্রদর্শনী সম্পর্কে বলেন “প্রতিটি ছবি গভীর ব্যক্তিগত আখ্যানকে ধারণ করে যা শিল্পী ও দর্শকের মধ্যে একটি সংযোগ তৈরি করে দেয়। যাঁরা ছবিগুলো দেখবেন তাঁরা যেন আমার পৃথিবীরই একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠবেন”।
তাসমিনা খানের কাজ নিছক শিল্প কর্মের চাইতে বেশী কিছু। এটি মানুষের মনস্তত্ত্বের এক মর্মস্পশী প্রতিফলন এবং আবেগ ও অভিজ্ঞতার জটিল মিশ্রণের অভূতপূর্ব প্রকাশ। মানুষের আবেগানুভূতির শৈল্পিক ও রূপান্তরমূলক এক যাত্রার প্রতিশ্রুতি দেয় তাঁর এই প্রদর্শনী যা এখন বিশ্ব দরবারে উন্মুক্ত।
তাসমিনা খানের কাজ সম্পর্কে আরো জানার আরেকটি মাধ্যম তাঁর ওয়েবসাইট www.tasminakmajles.com।
ফুয়াদ/ক্যানভাস অনলাইন