টক ফল তেঁতুল। এতটাই টক যে নাম শুনলেই জিভে পানি চলে আসে। সামান্য শুকনা মরিচ দিয়ে পাকা তেঁতুল মেখে যারা খেয়েছেন, একমাত্র তারাই জানেন এ ফলের মহত্ত্ব। এ ফল নিয়ে কিছু মিথও রয়েছে। বলা হয়ে থাকে তেঁতুল খেলে নাকি রক্ত পানি হয়ে যায়। তবে যতই মিথ থাকুক, তেঁতুলের রয়েছে নানা ধরনের স্বাস্থ্যগুণ। চলুন, নতুনভাবে পরিচিত হই এ ফলের গুণাগুণের সঙ্গে।
বাতের ব্যথা কমায়: তেঁতুলে আছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান। এটি শরীরে প্রদাহের মাত্রা কমিয়ে আনে ফলে অস্থিসন্ধির ব্যথা কমে যায়। পাশাপাশি বাত বা আর্থ্রাইটিসের মতো রোগও প্রতিরোধ করে তেঁতুল।
ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়: তেঁতুল স্কিন টোনের উন্নতি সাধন করে। ৩০ গ্রাম তেঁতুলের সঙ্গে পরিমাণমতো পানি ও হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে, সেই পেস্ট সপ্তাহে দুবার করে ত্বকে মাখলে ত্বকের সৌন্দর্য ফুটে ওঠে।
ডায়াবেটিস রোগের ঝুঁকি কমায়: ডায়াবেটিক রোগীদের প্রধান সমস্যা হচ্ছে শরীরে শর্করার পরিমাণের হ্রাস বৃদ্ধি ঘটা। তেঁতুল এ ক্ষেত্রে নির্ভয় প্রদান করতে পারে। ডায়াবেটিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে আসে।
হজম ক্ষমতা স্বাভাবিক রাখে: তেঁতুলে থাকা ডায়াটারি ফাইবার উপাদান হজম সহায়ক অ্যাসিডের ক্ষরণ স্বাভাবিক মাত্রায় রাখে। যার ফলে হজমে কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। তা ছাড়া তেঁতুলে রয়েছে ‘বিলিয়াস সাবস্টেন্স’। এটি খাবার হজমের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে বিধায় বদহজমের আশঙ্কা হ্রাস পায়।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়: তেঁতুলে প্রচুর পরিমাণে বি কমপ্লেক্স ভিটামিন বিদ্যমান। এটি মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষের শক্তি বৃদ্ধি করে বিধায় স্বাভাবিকভাবেই কগনেটিভ ফাংশনে উন্নতি ঘটে। পাশাপাশি বুদ্ধি ও স্মৃতিশক্তিও বাড়তে শুরু করে।
হার্ট সুস্থ রাখে: গবেষণায় দেখা গেছে, তেঁতুলে থাকা ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে তেঁতুল।
দেহের ওজন কমায়: মসলা হিসেবে তেঁতুল খেলে শরীরে হাইড্রোক্সিসিট্রিক অ্যাসিড বা এইচসিএ-এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়। যা শরীরে উপস্থিত অতিরিক্ত চর্বি ঝরিয়ে শরীরের ওজন কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: তেঁতুলে ভিটামিন সি থাকায় তা শরীরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রা বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।
শরীরে রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখে: তেঁতুলে আছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, যা শরীরে লোহিত রক্তকণিকা বৃদ্ধি করে। তা ছাড়া অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত দেহের প্রতিটি কোষে পৌঁছে দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে তেঁতুল। এর ফলে প্রতিটি অঙ্গের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তেঁতুল খেলে রক্তশূন্যতার মতো রোগ হওয়ার ঝুঁকি থাকে না।