আলোচিত আমেরিকান পোস্ট-অ্যাপোক্যালিপ্টিক হরর মিডিয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি ‘আ কোয়াইট প্লেস’। ২০১৮ সালে মুক্তি পায় এর প্রথম ছবি। পরবর্তী সিক্যুয়েল ‘আ কোয়াইট প্লেস পার্ট টু’ মুক্তি পায় ২০২০ সালে। দুটি ছবিই পরিচালনা করেন জন ক্রাসিনস্কি।
চার বছর পর এবার মুক্তি পেতে যাচ্ছে স্পিন-অব প্রিক্যুয়েল ‘আ কোয়াইট প্লেস: ডে ওয়ান’। মাইকেল সারনোস্কি পরিচালিত ছবিটি আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তি পাবে ২৮ জুন। একই দিনে বাংলাদেশের স্টার সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পাবে কাঙ্ক্ষিত এই ছবি। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
২০২০ সালের নভেম্বরে ঘোষণা করা হয়েছিল, একটি স্পিন-অব প্রিক্যুয়েল মুভি তৈরি হচ্ছে, যেখানে জেফ নিকোলস জন ক্রাসিনস্কির একটি গল্পেরওপর ভিত্তি করে লেখক ও পরিচালক হিসাবে কাজ করবেন। প্লাটিনাম ডিউনস এবং সানডে নাইট প্রোডাকশনের যৌথ প্রযোজনা এটি। ২০২১ সালের মে মাসে ক্র্যাসিনস্কি ঘোষণা দেন, নিকোলসের স্ক্রিপ্ট সম্পূর্ণ এবং স্টুডিওতে জমা দেওয়া হয়েছে। অক্টোবর নাগাদ নিকোলস সৃজনশীল পার্থক্য উল্লেখ করে পরিচালক পদ থেকে সরে দাঁড়ান। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে মাইকেল সারনোস্কি পরিচালক ও লেখক হিসাবে স্বাক্ষর করেন। ২০২৩-এর জানুয়ারিতে লন্ডনে ছবির শুটিং শুরু হয়।
ধেয়ে আসছে ভয়ানক খুনি। তার হাত থেকে বাঁচার জন্য দম বন্ধ করে লুকিয়ে আছে ভিকটিম। হরর মুভিতে এ রকম দৃশ্য প্রায়ই দেখা যায়। ‘হ্যালোউইন’-এ মাইকেল মেয়ার্সের হাত থেকে জেমি লি কার্টিসের লুকিয়ে থাকা কিংবা ‘দ্য সাইলেন্স অব দ্য ল্যাম্বস’- এ সিরিয়াল কিলারের বেজমেন্টে জোডি ফস্টারের পা টিপে চলার দৃশ্যগুলো এখন আইকনিক। তবে কেবল পীড়াদায়ক নিঃশব্দতার সাসপেন্সকে পুঁজি করে পুরো একটি সিনেমা বানিয়ে ফেলা চ্যালেঞ্জিং ব্যাপারই বটে। আর এই চ্যালেঞ্জই নিয়েছেন নির্মাতা জন ক্রাসিনস্কি। তার হাত ধরেই শুরু হয় ‘আ কোয়াইট প্লেস’ সিরিজ। চ্যালেঞ্জটি ভালোভাবেই উৎরে গেছেন তিনি। পরপর দুটি ছবিই দর্শকদের আকৃষ্ট করেছে। প্রচলিত হরর ঘরানার বাইরে একটু ভিন্ন পথে যাওয়া কাহিনিনির্ভর এবং চিন্তার খোরাক জোগানো সিনেমাগুলোর তালিকায় নতুন সংযোজন ‘আ কোয়াইট প্লেস’।
ম্যান ভার্সাস নেচার ঘরানার অন্য মুভিগুলো যেখানে অ্যাকশনকে প্রাধান্য দেয়, সেখানে ‘আ কোয়াইট প্লেস’ প্রাধান্য দিয়েছে ফ্যামিলি ডাইনামিককে। কোনো সংলাপ না থাকলেও মনে হয়েছে একটি সত্যিকারের পরিবারের সদস্যদেরকেই দেখেছি। ক্ষোভ, অনুশোচনা কিংবা ভালোবাসা তো বটেই; উল্লাসে ফেটে পড়া কিংবা কান্নায় ভেঙে পড়ার মতো দৃশ্যগুলোও ফুটে উঠেছে কেবল মুখের অভিব্যক্তি দিয়েই। বিন্দুমাত্র শব্দ না করে কীভাবে জীবনধারণ সম্ভব? লেখক ও পরিচালক নানাভাবে তার জবাব দিয়েছেন বুদ্ধিদীপ্ত স্ক্রিপ্টে। ডায়লগের স্বল্পতার কারণে দর্শকের একাগ্র মনোযোগ ধরে রাখে নজরকাড়া ভিজুয়াল। পোস্ট-অ্যাপোক্যালিপ্টিক অন্যান্য সিনেমার মতো এখানে ধূসর প্রান্তর কিংবা হিমশীতল পরিবেশ অনুপস্থিত। বনে গাছের আড়ালে রোদের উঁকিঝুঁকি, পাথরের গা বেয়ে ঝর্ণার পানির কলকল শব্দ কিংবা সবুজ শস্যক্ষেত দেখে আপাতদৃষ্টিতে একে ভয়ানক ডিস্টোপিয়া বলে মনে হয় না।
অভিনব ধাঁচের এই ছবি দর্শকদের নতুন অভিজ্ঞতা দিয়েছে। সিরিজের প্রথম দুটি ছবি বক্স অফিসেও সাফল্য পেয়েছে। এবারের ছবিটিও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
- ক্যানভাস অনলাইন
ছবি: সংগ্রহ