মুখের সৌন্দর্য হচ্ছে দাঁত। কিন্তু সেই দাঁত নিয়ে অনেকেরই মাথাব্যথা নেই। ব্যাপারটা যেন এমন- আমার দাঁত আমি যেভাবে খুশি সেভাবে ব্যবহার করব। কিন্তু এই স্বেচ্ছাচারিতাই পরবর্তীকালে কাল হয়ে দাঁড়ায়।
আমাদের দৈনন্দিন দিনে আমাদেরই কিছু কর্মকাণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত করছে আমাদের দাঁত। সেগুলো হয়তো আমরা না জেনে করছি কিংবা অসতর্কতাবশত। সেই বিষয়গুলোই উল্লেখ করা হচ্ছে এখানে।
১. আমাদের মধ্যে অনেকেই খুব জোরে জোরে ব্রাশ দিয়ে দাঁত ঘষেন। ভাবেন, জোরে ঘষলেই বুঝি দাঁত পরিষ্কার হবে। কিন্তু এতে করে যে হিতে বিপরীত হচ্ছে, সে বিষয়ে অনেকেই ওয়াকিবহাল নন। দাঁত জোরে ঘষলে দাঁতের উপরে থাকা শক্ত আবরণ এনামেল ক্ষয় হয়ে যায়। ফলে কিছুদিন পর থেকে দাঁত শিরশির করে। এ ছাড়া মাড়ি থেকে দাঁত সরে আসে। সুতরাং, শক্ত ব্রাশ ব্যবহার না করে নরম ব্রাশ দিয়ে খুব ধীরে ধীরে উপর থেকে নিচে দাঁত ব্রাশ করা উচিত।
২. নিয়মিত অ্যাসিডিক খাবার খাওয়ার কারণে দাঁতের ক্ষয় হতে পারে। সোডা, কমলা, ক্যান্ডি ইত্যাদি খাবার প্রচুর অ্যাসিডিক। খাবারের এসব অ্যাসিড দাঁতের ক্ষয় করে। অ্যাসিডিক খাবার খাওয়ার পর আমাদের মুখের লালার ‘পিএইচ’ মাত্রা কমে যায়, যা দাঁতকে ক্ষয় করে দেয়। এসব খাবার খাওয়ার পর মুখে ভালো করে কুলি করে ধুয়ে ফেলা উচিত।
৩. বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দাঁতের রং পরিবর্তন হতে থাকে। তখন দাঁত আর সাদা থাকে না। কিন্তু দাঁত সাদা করার জন্য অনেকেই অতিরিক্ত ব্লিচিং করে ফেলেন। এতে দাঁতের এনামেল অ্যাসিডে আক্রান্ত হয়ে আবরণ ফেটে একটু ফাঁকা হয়ে যায়, ফলে দাঁত শিরশির করে। তাই দাঁত সাদা করতে অতিরিক্ত ব্লিচিং করা অনুচিত।
৪. গরম খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা কিছু খাওয়া অনুচিত। কেননা, আমরা যখন গরম পিৎজা বা শিঙাড়ায় কামড় বসাই, তখন আমাদের দাঁতের এনামেল স্ফীত হয়। সেই সঙ্গে যদি ঠান্ডা কিছু খাই বা পান করি, তাহলে দাঁতের এনামেলে খুবই সূক্ষ্ম একটি ফাটল সৃষ্টি হয়, যা দাঁতের জন্য ক্ষতিকর। তাই গরম কিছু খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা কিছু খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
৫. দাঁতের কাজ হচ্ছে খাবার পিষে পাকস্থলীতে চালান করা। কিন্তু অনেকেই দাঁত দিয়ে বোতলের ছিপি খুলে থাকেন, যা মোটেও উচিত নয়। বোতলের ছিপি খুলতে গেলে অনেক সময় দাঁত ভেঙে যায় বা ফাটল সৃষ্টি হয়। এতে করে দাঁতের আয়ু হ্রাস পায়। সুতরাং এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।