প্রাণিজগতের প্রায় সব প্রাণীর মধ্যেই নারীদের গড় উচ্চতা পুরুষের তুলনায় কম। কিন্তু কেন এমনটা হয়? এটি কি বিবর্তনের ধারা? সামাজিক বৈষম্য নাকি জেনেটিক সিস্টেম? বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেই গড়ে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ নারীদের চেয়ে ৪-৯% লম্বা।
জীববিজ্ঞানীরা মনে করেন, প্রাকৃতিক বিবর্তন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে পুরুষ ও নারীর উচ্চতায় পার্থক্য এসেছে। কেননা একটা সময় পুরুষদের বাইরের প্রতিকূলতার সঙ্গে পেশিশক্তি দিয়ে যুঝতে হতো। ফলে তাদের শারীরিক গঠন হতে হতো প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার মতো বড়সড়। মানুষ ছাড়াও প্রাণিজগতের অন্যান্য প্রাণীর মধ্যেও পুরুষ প্রাণীটিকে নারী প্রাণীটির তুলনায় অপেক্ষাকৃত বড় হতে দেখা যায়।
প্রাণিজগতে নারীসঙ্গী লাভের জন্য পুরুষ প্রাণীদের মধ্যে মধ্যে লড়াই করতে দেখা যায়। সেই লড়াইয়ে লম্বা ও শক্তিশালী পুরুষদের জয়লাভ করতে দেখা যায়। ফলে প্রাণীর উত্তরসূরিদের মধ্যে পুরুষ প্রাণীকে লম্বা হতে হয় কিংবা বিবর্তনের ফল হিসেবে লম্বা হয়।
আবার সন্তান প্রসবের সময় খাটো মেয়েদের জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ফলে বিবর্তনের ধারায় লম্বা মেয়েদেরই টিকে থাকার কথা বেশি। কিন্তু তবু মেয়েদের গড় উচ্চতা ছেলেদের তুলনায় কম।
আদিকাল থেকেই ভালো ও পুষ্টিকর খাবার সাধারণত পুরুষেরাই খেয়ে আসছে। এখনো অনেক স্থানে এই প্রথা অব্যাহত আছে। কম খাওয়া জুটলে উচ্চতা তুলনামূলক কম হবে, এটাই স্বাভাবিক। সমাজবিদেরা মনে করেন, মেয়েদের গড় উচ্চতা কম হওয়ার পেছনে নারী পুরুষের এই সামাজিক বৈষম্যই দায়ী।
তবে গবেষণা বলছে, নারী-পুরুষদের উচ্চতার এই ফারাকের কারণ মূলত জেনেটিক। পুরুষের তুলনায় মেয়েদের কয়েক বছর আগেই লম্বা হওয়া বন্ধ হয়ে যায় বিধায় নারীর উচ্চতা পুরুষের তুলনায় বরাবরই কম। এর ব্যতিক্রমও লক্ষ করা যায়, তবে সেটি শতকরা হিসাবে অনেক কম।