আপনি কি আপনার চিন্তাপ্রক্রিয়াকে আরও তীক্ষ্ণ করতে চান? স্মৃতিশক্তি সজাগ ও সজীব রাখতে চান? এই জটিল নাগরিক জীবনের বহুমুখী কর্মসূচির মধ্যে আপনাকে সব কাজের মধ্যেই ভারসাম্য বজায় রাখতে হয়। পরিবার, কর্মক্ষেত্র, সমাজ, সৃজনশীল জগৎ- সবকিছুর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখেই চালিত হয় আপনার দৈনন্দিন যাপন। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন মস্তিষ্কের সঠিক ব্যবহার। দরকার মস্তিষ্কের উন্নত স্বাস্থ্য। আর মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য কতটা উন্নত হবে, তা নির্ভর করছে আপনার পদযুগলের সঠিক ব্যবহারের ওপর। যদি নিয়মমতো সঠিকভাবে আপনার পায়ের ব্যায়াম ও পেশি সঞ্চালন করেন, তাহলে তা বাড়িয়ে তুলবে আপনার মস্তিষ্কের ক্ষমতা। ইতালির মিলান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা থেকে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। এই গবেষণা বলছে, পায়ের পেশি থেকে মস্তিষ্কে সঠিকভাবে সিগন্যাল প্রবাহিত হলে তা মস্তিষ্কের স্নায়বিক স্বাস্থ্যকে উন্নত করে। পায়ের পেশি থেকে নিউরো সিগন্যালকে মস্তিষ্কে সঠিকভাবে পৌঁছে দেওয়ার জন্যই প্রয়োজন পায়ের ব্যায়াম।
এই গবেষণা বলছে, পায়ের পেশি ঠিকমতো সঞ্চালন না হলে সঠিক পরিমাণে স্নায়ুকোষ তৈরি হয় না। এর ফলে জীবনের নানা চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করার ক্ষেত্রে মস্তিষ্ক ঠিকমতো তার কাজ করে উঠতে পারে না। পায়ের ব্যায়াম যে মস্তিষ্কের উন্নত স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী, তা বোঝাতে এই গবেষণা স্নায়ু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও বিশেষ অবদান রাখতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। স্নায়ুরোগ, মেরুদণ্ডের স্থিতিস্থাপকতাজনিত সমস্যা, শারীরিক ভারসাম্যের ক্ষেত্রে সমস্যা ইত্যাদির প্রতিকারে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন পথের সন্ধান দিতে পারে এই গবেষণা।
মিলান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক র্যাফেলা আদামির বক্তব্য, ‘যেসব মানুষ ভারী কোনো ব্যায়াম করতে অক্ষম, এমনকি যাদের একটানা অনেক সময় বসে থাকতে হয়, যেমন মহাকাশচারী, আমাদের গবেষণাটি তাদের উপকৃত করবে। কারণ, এই ধরনের মানুষের পেশি সক্ষমতা অনেক সময়েই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া সেলুলার লেভেলের শারীরিক রসায়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একটানা বসে থাকতে থাকতে তাদের স্নায়ুতন্ত্রও অনেক সময় অকেজো হয়ে যেতে পারে। এসব ক্ষেত্রে বিকল্প পদ্ধতিতে কীভাবে পায়ের পেশি সঞ্চালনের মাধ্যমে মস্তিষ্কের ও শরীরের স্নায়বিক ভারসাম্য বজায় রাখা যায়, তা এই গবেষণায় উঠে এসেছে। র্যাফেলার পরামর্শ, নিয়মিত হাঁটাচলা করুন, দৌড়ান, ওঠানামা করুন, পা দিয়ে কিছু ঠেলার অথবা ওঠানোর চেষ্টা করুন। তাহলেই অনেকটা সুস্থ থাকবে, সুস্থ থাকবে আপনার মস্তিষ্ক। মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য আরও উন্নত হয়ে উঠবে।