জ্বর হওয়া মানেই কি মন্দ? তা ঠিক। জ্বর হলে শরীরে অস্বস্তির সৃষ্টি হয়। কিছুই ভালো লাগে না। শুয়ে থাকতে ইচ্ছা করে। মুখের রুচি চলে যায়। বিছানায় শুয়ে একঘেয়ে সময় কাটাতে হয়। অনেকে বলেন জ্বর কোনো রোগ নয়। মূলত জ্বর হওয়া মানে হচ্ছে শরীরে এমন কিছু ক্ষতিকর জীবাণু প্রবেশ করেছে, যেগুলো বিতাড়িত করার জন্য শরীরকে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হচ্ছে। অনেকেই জ্বরকে খুব ভয় পান। তবে জ্বর হওয়া শরীরের ইমিউন সিস্টেমের জন্য ভালো। চলুন, জানা যাক কোন কোন কারণে জ্বর হওয়া ভালো।
ইমিউন সিস্টেমকে ভালো কাজ করতে সাহায্য করে জ্বর: শরীরে শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেম সবারই কাম্য? ইমিউন সিস্টেম মানবদেহকে সুস্থ রাখতে, জীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করতে এবং শরীরের ভেতরের পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। আর জ্বরের সবচেয়ে উপকারী দিকই হচ্ছে এটি ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। এক গবেষণায় বলা হয়েছে, জ্বর মানুষের ইমিউন ফাংশনের উন্নতি ঘটাতে পারে।
ভাইরাস ধ্বংস করে: ভাইরাস মানুষের দেহে ঢুকে পড়ে গোপনে। তারপর মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে। লিম্ফোসাইট সিডি৮ + সাইটোটক্সিক টি-সেল হচ্ছে একধরনের শক্তিশালী ইমিউন কোষ। এর মধ্যে ভাইরাসকে ধ্বংস করার ক্ষমতা আছে এবং এটি টিউমার কোষের বৃদ্ধিকে বন্ধ করতে সক্ষম। কিন্তু মানুষের শরীরে এই কোষ তখনই উৎপন্ন হয় যখন শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে জ্বর হওয়া ভালো।
সহজাত ইমিউন সিস্টেমের উন্নতিতে সাহায্য করে: সহজাত ইমিউন সিস্টেম মানুষের ইমিউন সিস্টেমের একটি অংশ। এটি সংক্রমণের স্থানে ইমিউন কোষকে নিয়ে যাওয়ার কাজ করে, ব্যাকটেরিয়াসহ অন্যান্য জীবাণুকে শনাক্ত করে এবং শরীরে প্রবেশকৃত অনাকাঙ্ক্ষিত বস্তুকে দূর করে। এ ছাড়া এটি জ্বরের সময় মানবদেহকে চার্জ হতে সাহায্য করে।
ক্যান্সার নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করা যায় জ্বরকে: জানা গেছে, ইচ্ছাকৃতভাবে শরীরে জ্বর সৃষ্টি করে শরীরে কিছু ধরনের ক্যান্সার নিরাময় করা সম্ভব। ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ফোকাল হাইপারথারমিয়া যেখানে তাপমাত্রা সরাসরি ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া এটি মানুষের ইমিউন সিস্টেমকে টিউমার রোধে সক্রিয় করে তুলতে পারে।
কিন্তু তার মানে এই নয় যে জ্বরের কোনো খারাপ দিক নেই। জ্বরের সঙ্গে যদি শরীরের কাঁপুনি কিংবা অন্য কোনো উপসর্গ দেখা যায়, তাহলে বিলম্ব না করে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।