মারিব মৎস্য খাইবো সুখে! বাংলা প্রবাদ এমনটাই। এ কথা ঠিক, বাঙালির স্বাদ মাছ ছাড়া অতৃপ্ত থাকে, মৎস্য বিনা ভোজনরসিক বাঙালির রসনা পরিতৃপ্ত হয় না। কিন্তু তার চেয়েও বড় বিষয়, ভোজনের সুখের মতো জীবনের সুখবৃদ্ধির পেছনেও মাছের অবদান অনেক। তবে মিঠা পানির মাছ বা নদ-নদীর মাছের থেকে নোনা পানি বা সামুদ্রিক মৎস্যের উপকারিতা অনেকটাই বেশি। অবশ্য নদীর মাছের ক্ষেত্রেও উপকারিতা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা বলছে, দীর্ঘ যৌনজীবনের জন্য সামুদ্রিক মাছ খুবই উপকারী খাদ্য। এমনকি নিয়ম করে লবণাক্ত পানির মাছ খেলে প্রজনন ক্ষমতাও বাড়ে। গর্ভাবস্থায় নারীদের জন্যও সমুদ্রের মাছ উপকারী। সামুদ্রিক মাছ সহজলভ্য না হলে মিঠা পানির মাছও বিকল্প হিসেবে কাজে লাগে।
বোস্টনের জনস্বাস্থ্য বিভাগের অধীন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেলথের অধীন হার্ভার্ডের গবেষকেরা মিশিগান ও টেক্সাসের ৫০০ জন দম্পতিকে নিয়ে একটি গবেষণা করেন। প্রেগন্যান্সির পরিকল্পনা নিয়ে এই দম্পতিরা দিনযাপন করেছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁদের মধ্যে যাঁদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় সামুদ্রিক মাছ ছিল অন্যতম, তাঁদের মধ্যে যাঁরা সপ্তাহে ন্যূনতম দুদিন মাছ খেয়েছেন, তাঁদের যৌনজীবন অনেক বেশি সুস্থ ও স্বাভাবিক থেকেছে মাছ না খাওয়া ব্যক্তিদের তুলনায়। এবং সমীক্ষার শেষ পর্যায়ে মৎস্যভোগী দম্পতিদের ঘর আলো করে জন্ম নিয়েছে সুস্থ ও সুস্বাস্থ্যসম্পন্ন সন্তানেরা। এই গবেষণায় বলা হয়েছে, গর্ভধারণের জন্য শুধু মেয়েদের ক্ষেত্রেই সামুদ্রিক জীব হিসেবে মাছ উপকারী নয়, বরং মেয়েদের পাশাপাশি যৌনসঙ্গী হিসেবে ছেলেদের খাদ্যতালিকাতে মাছ থাকলে তা নারী-পুরুষ উভয়ের যৌনজীবনের জন্য উপকারী। এই গবেষণায় স্পষ্টতই বলা হচ্ছে, সুস্বাস্থ্যকর যৌন প্রজননে যে শিশু সন্তান জন্ম নেবে, তার সুস্বাস্থ্য মা-বাবার খাদ্যাভ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। সে ক্ষেত্রে সামুদ্রিক জীব বিশেষ উপকারী। সামুদ্রিক মাছ হলে তো কথাই নেই। হাতের কাছে নদীনালার মাছ হলেও ফল মিলবে।