skip to Main Content

ক্যানভাস রিপোর্ট:

৭ অক্টোবর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায এক্সপো জোনে রক কনসার্টে অর্থহীন, অ্যাশেজ, সোনার বাংলা সার্কাস, , কার্নিভাল, আফটারম্যাথ, ওন্ড, অনকোর, লেবেল ফাইভ, স্যাভেজারি, ক্যালিপসো, চিত্রপট অংশ নেয়। কনসার্টটির আয়োজক হিসেবে ছিল অ্যাডভেনটর কমিউনিকেশন ও ম্যাগাজিন পার্টনার ছিল ক্যানভাস ম্যাগাজিন।

এই কনসার্টের দর্শক উপস্থিতি যেন ফিরিয়ে এনেছিল ৯০-দশকের নস্টালজিয়া। স্বল্প বিরতিতে সেইসময় একের পর এক ওপেন এয়ার কনসার্ট আয়োজিত হতো।

পুরো এই আয়োজনে তারুণ্যের উন্মাদনা বিমোহিত করেছে উপস্থিত সকলকে।মাত্রাতিরিক্ত দর্শকেরা সেদিন ব্যারিকেড টপকে সামনে যেতে মরিয়া হয়ে উঠে। কোভিড এর কারণে সর্বশেষ তিন বছর দেশসেরা ব্যান্ডগুলোকে নিয়ে তেমন একটা ওপেন এয়ার কনসার্ট হতে দেখা যায়নি। ফলশ্রুতিতে, সেদিন ‘রক এন রিদম’কে ঘিরে প্রত্যাশা ছিল আকাশচুম্বী।

আইসিসিবি এক্সপো জোনে ৭ অক্টোবর রাতের শোটি অবশ্য ভক্তদের এক অসাধারন অভিজ্ঞতা দিয়ে গিয়েছে। রক ও মেটাল সংগীতের প্রতি মানুষের যে আবেগ ও ভালোবাসা আছে তা আরেকবার প্রমানিত হলো।

কনসার্ট ভেন্যুতে পা দিয়ে দর্শকেরা এই ধরনের কনসার্টে বিরাজমান অসাধারণ পরিবেশ অনুভব করতে পেরেছিলেন। ব্যান্ড টি-শার্ট পরা ভক্তকূল, বৃত্তাকার গঠনে বসা বন্ধুদের দল, রোমান্টিক গানের সময় কাপলদের আলিঙ্গনের মতো স্বাভাবিক কিন্তু অসাধারন মুহূর্তগুলি ছিল এই কনসার্টের প্রাণ৷মোবাইলের টর্চলাইটের সাথে পরিচিত গানগুলোর সম্মিলিত পরিবেশনা বিমোহিত করে দর্শকদের।নিঃসন্দেহে শো’র সেরা অংশগুলি শেষ দুই থেকে তিন ঘন্টার জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছিল। হেডলাইনার ব্যান্ডগুলি সহ সকম ব্যান্ড তাদের দ্যূতি ছড়িয়েছে এই কনসার্টে।

গ্রাঞ্জ ও পোস্ট গ্রাঞ্জ ঘরানায় অনুপ্রাণিত ওন্ড এর রয়েছে একধরনের নির্দিষ্ট ফ্যান ফলোয়ার। তবে সময় সংকটের কারণে ব্যান্ডটি মাত্র তিনটি গান পরিবেশন করতে বাধ্য হয় যা হয়তো তাদের ভক্তদের কাছে ভালো লাগেনি।

কার্নিভাল এমন এমন একটি ব্যান্ড যা তাদের নিজস্ব ব্যতিক্রমী সাউন্ডের কারণে ভক্ত ও সমালোচকদের কাছে আলাদা জায়গা করে নিয়েছে। কার্নিভালের গান ভক্তরা কেবল শোনেন না, অনুভবও করেন। ৭ অক্টোবর আয়োজনে তারা তাদের নামের প্রতি আরেকবার সুবিচার করেন।

সোনার বাংলা সার্কাসের গানের কথার গাঁথুনি বেশ মজবুত। গীতিকবি প্রবর রিপনের লেখা ও ব্যান্ডের গানের কম্ম্পোজিশনে যেন একটা সাইকেডেলিক অনুভূতি আছে। সেদিনের পারফর্মেন্সে তারা দর্শকদের মাতিয়েছেলেন তাদের সেট লিস্ট দিয়ে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত।শেষে মনে হয়েছিল শেষ হয়েও যেন হয়নি শেষ।

অ্যাশেজ সেই ব্যান্ডগুলির মধ্যে একটি যাদের ভক্তরা যেন  একেকটি কাল্ট।যাদের ভক্ত ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করেছে। জুনায়েদ ইভান-এর ঠিক সামনে প্রচুর জনসমাগম দেখে সত্যিই অবাক হওয়ার কিছু ছিল না। তর্কাতীতভাবে অ্যাশেজের ব্যান্ডের সেরা মুহূর্ত ছিল যখন সমগ্র দর্শকেরা তাদের ফোনে পারফরম্যান্স রেকর্ড করার সময় একযোগে ‘তামাক পাতা’ গেয়েছিল।

যথারীতি, এই শো’র শোস্টপার ছিল অর্থহীন। আর আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন বেজবাবা সুমন। ট্যান স্যুট পড়ে তিনি সেদিন স্টেজে উঠেছিলেন যা ভক্তদের সর্বাধিক মনোযোগ কেড়ে নেয়। অর্থহীন মঞ্চে উঠলে উপস্থিত জনতা সজোরে উল্লাসে ফেটে পড়ে।সুমন পরে ফেসবুকে পোস্ট করেন “আজকের কনসার্ট জীবনেও ভুলবো না! ❤,” তবে তার এই পোস্টের কারন ছিল অবাক করার মত।অর্থহীনের পারফর্মেন্সের সময়, বেজবাবা স্বভাবসুলভ তার বেজে ফ্লিপ করতে গিয়েছিলেন। গিটার থেকে স্ট্র্যাপটি বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে একধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দেখা দেয়।যাইহোক, আবার স্ট্র্যাপটি পেয়ে, সুমন বেজ ফ্লিপের আরেকটা চেষ্টা করেন। এবারের চেষ্টায় তিনি সফল, সাথে দর্শকদের সেকি বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস।৭ অক্টোবর রাতে অর্থহীন যে একমাত্র এই ‘টেকনিকাল অসুবিধা’র সম্মুখীন হয়েছিল তা নয়। তাদের পারফরম্যান্সের সময় বেজবাবার একটি স্ট্রিং ছিড়ে যায়। কিন্তু সেটা কখনোই সুমনের মত লেজেন্ডের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। বাজানোর জন্য একটি কম স্ট্রিং থাকা সত্ত্বেও তিনি পারফরমেন্স সম্পূর্ণ করেছিলেন।

অর্থহীন ব্যান্ডের ম্যানেজার এহসানুল হক টিটো বলেন, ‘এই আয়োজনের জন্যে অ্যাডভেনটর কমিউনিকেশনের প্রশংসা ও ধন্যবাদ প্রাপ্য।লাইনআপ খেয়াল করলে দেখবেন এখানে অর্থহীন বাদে বাকি সব ব্যান্ডই সম্ভাবনাময় যাদের রয়েছে কমিউনিটি ভিত্তিক ফ্যান বেইজ।এই কমিউনিটি যে ছোট না, দশ হাজারের বেশি ভক্তের সমাগম তাই প্রমাণ করে। নানা ঘরানার ব্যান্ড থাকায় এই শো’তে  বৈচিত্র্য ছিল বেশি।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top