অ্যালোভেরা, বাংলায় যার নাম ঘৃতকুমারী। এর আদি নিবাস আফ্রিকার মরুভূমি অঞ্চল ও মাদাগাস্কার। বর্তমানে এটি প্রায় সারা বিশ্বেই পাওয়া যায়। রাস্তাঘাটে যারা শরবত বিক্রি করে, তাদের কাছে মোটা মোটা একধরনের সবুজ ও শক্ত পাতা দেখা যায়, সেটিই অ্যালোভেরা। এতে প্রায় ২০ রকমের খনিজ পদার্থ বিদ্যমান। মানুষের শরীরের প্রয়োজনীয় ২২টি অ্যামিনো অ্যাসিডের প্রতিটিই আছে ঘৃতকুমারীতে।
রূপচর্চায় ঘৃতকুমারীর নানাবিধ ব্যবহার রয়েছে। ত্বক গ্লো করা, চুল পড়া রোধ করা—এসব গুণই পাওয়া যাবে অ্যালোভেরায়। এতে অনেক ধরনের ঔষধি গুণ থাকার কারণেই রূপচর্চায় এর ব্যবহার ব্যাপক। যেমন অ্যালোভেরায় থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বকের গভীরে পৌঁছে চামড়া থেকে বয়সের ছাপ দূর করে। পাশাপাশি এতে থাকা ভিটামিন এ, বি ও সি ত্বকের পুষ্টি জোগায়। আর তাই শুষ্ক ত্বকের জন্য অ্যালোভেরা দারুণ উপকারী। বেশির ভাগ কসমেটিকসে অ্যালোভেরা থাকে। সরাসরি অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করলেও ত্বক ভালো থাকে।
ঠোঁটের যত্নেও অ্যালোভেরার ভূমিকা রয়েছে। এক টেবিল চামচ চালের গুঁড়ার সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে ঠোঁটে ব্যবহার করতে পারেন। ঠোঁটে লাগানোর পাঁচ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে ঠোঁটের রঙ উজ্জ্বল হবে। এ ছাড়া ঠোঁট হবে নরম ও মসৃণ।
ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে ব্যবহার করতে পারেন অ্যালোভেরা মাস্ক। মাস্ক তৈরি করতে এক চা-চামচ অ্যালোভেরার জেল ব্লেন্ড করে নিয়ে তার সঙ্গে এক চা-চামচ ওটমিলের গুঁড়া এবং আধা চা-চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিতে হবে। এই মিশ্রণ মুখে ও গলায় লাগিয়ে ৩০ মিনিট রাখতে পারেন। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে অন্তত একবার এ কাজ করলে ত্বকের মরা চামড়া দূর হয়ে যাবে।
রোদে ঘোরার ফলে অনেকের ত্বকই রোদে পুড়ে যায়। সেই রোদে পোড়া দাগ দূর করতে দুই টেবিল চামচ অ্যালোভেরার জেলের সঙ্গে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। এটি ত্বকে লাগিয়ে পনেরো মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি রোদে পোড়া দাগ দূর করার পাশাপাশি ত্বকের আর্দ্রতাও ধরে রাখবে।
এ তো গেল ত্বকের কথা। চুলের যত্নেও দারুণ কাজ করে অ্যালোভেরা। এটি মাথার ত্বকের পিএইচ মাত্রা ঠিক রাখে। খুশকিও দূর করে। ২:১ অনুপাতে অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে মাথার ত্বকে মেখে সারা রাত রেখে দিয়ে সকালে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে করে চুলের খুশকি দূর হবে।