১৯৭০-এর দশকের শেষভাগে বিশ্বব্যাপী হিপ-হপ মিজিকের জোয়ার আসে। বর্তমানে সংগীতবিশ্ব শাসন করছে এই জনরা। জে-জেড, লিল নাস এক্স, টুপাক শাকুর, ট্র্যাভিস স্কট, ফিউচার, ড্রেক, ব্যাড বানি, উইজ খলিফা, এমিনেম, জি-ইজি, ড. ড্রি, লিজোর মতো হিপ-হপ আর্টিস্টরা যেমন বিলবোর্ড টপ চার্ট দাপিয়ে বেড়িয়েছেন বা বেড়াচ্ছেন, তেমনি হয়ে উঠেছেন অগুনতি মানুষের ফ্যাশন ও স্টাইল আইকন।
বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়েছে ২০০০ সালের পর থেকে। তবে এরও কয়েক বছর পর দেখা যায় ধরনের গানের জয়-জয়কার। স্টইয়িক ব্লিসের ‘আবার জিগায়’, ‘মায়াবি চোখে’র মতো গান তখন মানুষের মুখে মুখে। জালালি সেট এরপরে তাদের ‘ঢাকা সিটি’ গানটি দিয়ে জোরে-শোরে ধাক্কা দেয় মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে।
হিপহপ সিনে এখন জনপ্রিয় মুখদের অন্যতম আসিফুল ইসলাম সোহান।স্টেজ নাম ‘ব্ল্যাক জ্যাং’ হিসেবেই অধিক পরিচিত। হলিউডের বিখ্যাত ছবি ‘এক্সট্রাকশন’-এর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকে ব্যবহার করা হয়েছে ব্ল্যাক জ্যাং-এর গান। ‘ফেরারি ফোক’, ‘বাংলা হাইপ’ ট্র্যাকগুলো জনপ্রিয়তার শীর্ষে। করেছেন বেশ কিছু ইন্টারন্যাশনাল টুর। দেখে নেওয়া যাক তার ফ্যাশন ও লাইফস্টাইলের বিভিন্ন দিক।
মিউজিকে আসার আগে থেকেই সোহানের ফ্যাশনের প্রতি বাড়তি আকর্ষণ ছিল। ক্লাস সিক্স থেকেই ব্যাগি প্যান্ট পরা শুরু করেন। টিচারদের কাছে যথেষ্ট বকা খেয়েছিলেন সে কারণে।সেসময় থেকেই ছেড়া জিন্স, হাতে ব্র্যাসলেট ছিল তার নিত্যসঙ্গী। স্কুলে কেডসের পরিবর্তে পরে যেতেন শু। আবার কলেজে শু পরতে হতো; কিন্তু তিনি পরতেন কনভার্স, তাও একপায়ে কালো আর অন্যপায়ে লাল। সংগীতজীবনে প্রবেশের পর বাড়তে থাকে ফ্যাশনের পরিধিও।
কথায় আছে, ‘স্টে ফ্রেশ অ্যান্ড ক্লিন।’ সোহানের মতে ফ্যাশনে দামি ব্র্যান্ড বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং কমফোর্টকেই প্রাধান্য দেওয়া উচিত।‘ফিলিং গুড’ ভাইবটাও গুরুত্বপূর্ণ।মিটিং, ফ্যামিলি টাইম, ডিনার, কন্সার্ট, শুট সবকিছুর আলাদা একটা ভাইব থাকে। পার্সোনালিটির সঙ্গে মিলিয়ে তা ফলো করতে পারলেই হলো।
তিনি বলেন, ‘ইটস নেভার অ্যাবাউট ক্লথ। ইটস লাইক ফ্রিডম হাউ আই ফিল লাইক আই অ্যাম গুড, আই অ্যাম ফিলিং গুড টুডে। হিপ-হপে কিছু বেসিক ফ্যাশন থাকে যেমন লুজ টি-শার্ট, ব্যাগি জিন্স, ক্যাপ, স্নিকার্স, অ্যাকসেসরিজ, জুয়েলারিজ, সানগ্লাস, ব্যাগ ইত্যাদি। আর শীতকালে বেস্ট ব্যাপার হলো জ্যাকেট, হুডি। শীত বিশ্বব্যাপী হিপ-হপারদের ফ্যাভারিট। এ সময় চাইলে বাহারি রকমের ফ্যাশন করা যায়। স্কি মাস্ক, মাঙ্কি ক্যাপ, বিনি ক্যাপ,হ্যাট,ব্যান্ডানা শরীরে জড়িয়ে রাখা যায়।’
তবে সোহানের আগ্রহ স্নিকারস সংগ্রহের প্রতি। ২০১৩সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর একটি টেলকো কোম্পানির বিজ্ঞাপনে কাজ করেছিলেন তিনি। সেই বিজ্ঞাপনে তাকে একটি পুরনো শু’তেই দেখা দেখা গিয়েছিল। বর্তমানে সংগ্রহে আছে ২৫টিরও বেশি স্নিকারস যা দেশের বাইরে থেকে কেনা। সবচেয়ে পছন্দের ব্র্যান্ড এয়ারফোর্স ওয়ান হোয়াইট, জোর্ডান, অ্যাডিডাস ক্ল্যাসিক, নাইকি। এ ছাড়াও সানগ্লাস, ব্রেসলেট, চেইন, কানের দুল, ক্যাপ, হেট, সাইড ব্যাগ, চেস্টব্যাগ, ব্যাকপ্যাগ নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করেন। কাপড়ের ক্ষেত্রে সব সময় ব্র্যান্ড প্রেফারেন্স না থাকলেও, কালেকশনে আছে নানা ব্র্যান্ডের পোশাক। তবে কেনা কাপড়ে নিজে কাস্টম ডিজাইন করতে তিনি ভালোই পারদর্শী।
খাবারের ক্ষেত্রে বাঙালিয়ানা পছন্দ তার। আলুভর্তা, ডাল, শুটকি ভর্তা, গরুর মাংস, খিচুরি, সিংগারা খেতে ভালোবাসেন। পাশাপাশি ইন্ডিয়ান, থাই, ম্যাক্সিকান খাবারও প্রিয়। টেকঅ্যাওয়ে খাবার হিসেবে শর্মা, কাবাব, নান পছন্দ।
- ফুয়াদ/ ক্যানভাস অনলাইন