বাংলাদেশের একমাত্র বাংলাভাষী ফ্যাশন, বিউটি, ফুড এবং লাইফস্টাইল ম্যাগাজিন ১৮ শেষ করে ১৯ বছরে পা রেখেছে। এই বয়সে আমাদের দেশের তরুণেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনের প্রথম দিকে থাকেন। ক্যারিয়ার বিষয়ে ভাবনার সূচনা সাধারণত এ সময়ে হয়ে থাকে। হাসান তাইয়্যাব ইমাম, হেড অব গ্রুপ এইচ আর, বেঙ্গল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ জানিয়েছেন কীভাবে ১৯ বছরে নিজেকে চাকরির জন্যে তৈরি করতে হবে।
বর্তমানে ১৯ বছরের একজন বাংলাদেশি কি ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবেন?
হাসান তাইয়্যাব ইমাম: একটা সময় ছিল যখন ১৯ বছর বয়সে একটা ছেলে-মেয়ে খুব প্রয়োজন ছাড়া তাদের জব বা ক্যারিয়ার নিয়ে এত ভাবতেন না। কিন্তু অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রয়োজনের তাগিদে মানুষের চিন্তা ভাবনায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এখন শুধু প্রয়োজনই নয়, ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের কথা মাথায় রেখেও তারা ক্যারিয়ারের কথা ভাবছেন। একটা বিষয় খুবই চোখে পরার মতো, ‘কিছু একটা করি’– এই ভাবনা থেকে ১৯ বছর, এমনকি এর চেয়েও কম বয়সের ছেলে-মেয়েরাও ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবছেন।
কোন প্রফেশনে তিনি ভালো করবেন, এটা কীভাবে বুঝতে পারবেন?
হাসান তাইয়্যাব ইমাম: এ বয়সটাই দুরন্ত। মনে হয়, যেন বিশ্বজয় করতে পারি। সবকিছু করে ফেলব, এমন একটা মনোভাব এ বয়সের এটাই স্বাভাবিক ধারণা। কিন্তু আমরা তো সবকিছু করে ফেলতে পারি না। মানুষ হিসেবে আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে। এই সীমাবদ্ধতাটুকু আমাদের বুঝতে হবে। এ বয়সটাতে পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন পার্টটাইম জব অথবা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ভিজিটের মাধ্যমে জব মার্কেট সম্পর্কে তাদের কিছু ধারণা নেওয়া উচিত। ক্যারিয়ারের শুরুটা যেভাবে হবে, শেষটা যে একই প্রফেশনে হবে, ব্যাপারটা এমন না-ও হতে পারে। সেক্ষেত্রে নিজের পটেনশিয়াল অনুযায়ী কোন কাজটা করতে ভালো লাগে বা কোন কাজটা করে তিনি আনন্দ পাবেন, এটা বোঝা খুবই জরুরি। এক্ষেত্রে বাবা-মা অথবা পরিচিত কোয়ালিফাইড প্রফেশনালদের সঙ্গে কথা বলা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে এডুকেশন শেষ করে তিনি কোন প্রফেশনে ক্যারিয়ার শুরু করতে চান, তা বোঝা সহজ হবে।
আমাদের দেশের জব সেক্টর কি এই বয়সের ইয়াং অ্যাডাল্টদের ক্যারিয়ার শুরুর সুযোগ দেয়?
হাসান তাইয়্যাব ইমাম: আমাদের দেশের জব মার্কেট এখন অনেক বড়। গৎবাঁধা কাজের বাইরেও এখন অনেক কাজের সুযোগ হয়েছে, যেমন অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং থেকে শুরু করে, অনলাইন সেলস অথবা বিভিন্ন ধরনের অর্গানাইজেশনাল পার্টটাইম জবের সুযোগ হয়েছে। এ কাজগুলো অনেকেই তাদের ক্যারিয়ার হিসেবে না নিলেও এগুলো জব সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ করে দেয়।
নেটওয়ার্ক তৈরির গুরুত্ব কতটুকু?
হাসান তাইয়্যাব ইমাম: আমরা এমন একটা সময়ে বসবাস করছি, যখন চাইলেও নেটওয়ার্কের বাইরে থাকা সম্ভব না। আমরা যে নেটওয়ার্কের মধ্যে অবস্থান করছি, এর মধ্য থেকে নিজস্ব নেটওয়ার্ক তৈরি করা অত্যন্ত প্রয়োজন। এই নেটওয়ার্ক আমাদের সাহায্য করে শিক্ষা বা কর্ম পরিকল্পনা সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে।
১৯ বছরে প্রফেশনাল ক্যারিয়ার শুরু করতে চাইলে কী কী জানা জরুরি?
হাসান তাইয়্যাব ইমাম: বর্তমান সময়ে কিছু বেসিক বা অ্যাসেনশিয়াল স্কিল জানা খুব জরুরি, যেমন কমিউনিকেশন। এটা হতে পারে প্রমিত বাংলা অথবা অন্য কোনো ভাষাই, মাইক্রোসফট ওয়ারড, এক্সেল, পাওয়ার-পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন, ডিজিটাল মিডিয়া, টাইম ম্যানেজমেন্ট এবং জেনারেল নলেজ প্রভৃতিও গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমবারের মতো সিভি তৈরির জন্যে কোন কোন বিষয় গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন?
হাসান তাইয়্যাব ইমাম: সিভি হতে হবে, ‘মেকিং আ ফাস্ট স্ট্রং ইমপ্রেশন’। এটাকে আমরা আমাদের ‘ফর্ম অব রেপুটেশন’ বলে থাকি। একটি সিভিতে নিজের যোগ্যতা, গুণাবলির সেইসব দিক তুলে ধরা উচিত, যেখানে ওই ব্যক্তি সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা পাওয়া যায়। যেমন সিভিতে কিছু তথ্য থাকা আবশ্যক। এর মাঝে আছে নাম, স্থায়ী ঠিকানা, ফোন নম্বর, মেইল অ্যাড্রেস, ক্যারিয়ার অবজেক্টিভস, একাডেমিক কোয়ালিফিকেশন, অ্যাচিভমেন্টস, এক্সট্রা-কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিস ট্রেনিং, ওয়ার্কশপ, সেমিনার, রেফারেন্স প্রভৃতি।
- সারাহ্/ ক্যানভাস অনলাইন