skip to Main Content

হেঁশেলসূত্র I পূজার অধুনা পদ

দুর্গাপূজায় ঐতিহ্যবাহী খাবারের পাশাপাশি নানা আধুনিক পদ আস্বাদনেরও দারুণ সুযোগ নেওয়া সম্ভব। এমনই পাঁচটি পদের রেসিপি দিয়েছেন আফরোজা নাজনীন সুমি

ছবি: হুমায়রা আরমিন পৃথী

আনারস রায়তা

উপকরণ: আনারস (কিউব করে কাটা) ১ কাপ, আনার ১/২টি, টক দই ১ কাপ, মরিচগুঁড়া ১/৪ চা-চামচ, টালা জিরাগুঁড়া ১/২ চা-চামচ, চিনি স্বাদমতো, বিট লবণ স্বাদমতো, পুদিনাপাতা (সাজানোর জন্য) ২ টেবিল চামচ।
প্রণালি: টক দই ভালো করে ফেটিয়ে তাতে মরিচগুঁড়া, টালা জিরাগুঁড়া, চিনি ও বিট লবণ মিশিয়ে নিন। এরপর আনারসের টুকরো আর অর্ধেক পরিমাণ আনারের দানা দিয়ে হালকা হাতে মিশিয়ে ফ্রিজে রাখুন। পরিবেশনের সময় ওপরে বাকি আনার দানা আর পুদিনাপাতা দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

মাটন ধনশাক

উপকরণ: খাসির মাংস ৫০০ গ্রাম; ঘি ২ টেবিল চামচ; পেঁয়াজকুচি ১ কাপ; আদাবাটা ১ টেবিল চামচ; রসুনবাটা ২ টেবিল চামচ; আস্ত গোলমরিচ ১০-১২টি; কাঁচা মরিচ ৩-৪টি; মসুর ডাল, অড়হড় ডাল, বুটের ডাল, সবুজ মুগ ডাল ও মুগ ডালের মিশ্রণ ১ কাপ; হলুদগুঁড়া ১ চা-চামচ; মরিচগুঁড়া ১ টেবিল চামচ; ধনেগুঁড়া ১ টেবিল চামচ; জিরাগুঁড়া ১ টেবিল চামচ; গরমমসলার গুঁড়া ১ চা-চামচ; কুমড়া ২০০ গ্রাম; আলু ২০০ গ্রাম; বেগুন ২০০ গ্রাম; টমেটোকুচি ১ কাপ; মেথিশাক ১ কাপ; লবণ স্বাদমতো; তেজপাতা ২টি; আস্ত গরমমসলা ১০ গ্রাম।
প্রণালি: প্রেশার কুকারে পানি গরম করে তাতে একে একে মাংস, লবণ, হলুদ, মরিচ, তেজপাতা, আস্ত গোলমরিচ, গরমমসলা, আদাবাটা ও রসুনবাটা দিয়ে ভালোভাবে সেদ্ধ করুন। মাংস সেদ্ধ হয়ে এলে পানি ছেঁকে আলাদা করে রাখুন। এই পানিতে সব রকম ডাল একসঙ্গে সেদ্ধ করে নিন। লবণ, হলুদ ও কাঁচা মরিচ দিয়ে বেগুন, আলু ও কুমড়া সেদ্ধ করে মেথিশাকের সঙ্গে বেটে একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। এবার কড়াইতে ঘি গরম করে তাতে আস্ত তেজপাতা ও গরমমসলার ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজকুচি, আদাবাটা, রসুনবাটা ও টমেটো দিয়ে ভালোভাবে কষিয়ে নিন। মিনিট পাঁচেক পর সব গুঁড়া মসলা আর লবণ দিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষিয়ে নিন। মসলা থেকে তেল ছেড়ে এলে সেদ্ধ মাংস যোগ করে একটু কষিয়ে নিয়ে এতে সেদ্ধ করা পাঁচমিশালি ডাল দিয়ে দিন। এরপর বেটে রাখা শাকের মিশ্রণ দিয়ে ভালোভাবে নাড়াচাড়া করুন। প্রয়োজনে আরও একটু পানি দিয়ে মিনিট দশেক ফুটতে দিন। মাখা-মাখা করে নামিয়ে নিন। তৈরি হয়ে গেল মজাদার মাটন ধনশাক।

ফিশ পেঁয়াজি কালিয়া

উপকরণ: কাতলা বা রুই মাছ ৬০০ গ্রাম, লবণ (মাছ মাখানোর জন্য) ৮ গ্রাম, হলুদগুঁড়া ও মরিচগুঁড়া (মাছ মাখানোর জন্য) ৪ গ্রাম, সর্ষে তেল ৮০ গ্রাম, ঘি ১০ গ্রাম, শুকনো মরিচ ৪টি, তেজপাতা ৮টি, লবঙ্গ ৪টি, দারুচিনি ২টি, ছোট এলাচি ৪টি, আস্ত জিরা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজবাটা ১৫০ গ্রাম, পেঁয়াজ (চার ফালি করে কাটা) ১০০ গ্রাম, আদাবাটা ২০ গ্রাম, টমেটো ৩০ গ্রাম, টক দই ৫০ গ্রাম, হলুদগুঁড়া ৬ গ্রাম, লাল মরিচগুঁড়া ২ গ্রাম, কাশ্মীরি শুকনো মরিচগুঁড়া ৬ গ্রাম, জিরাগুঁড়া ৪ গ্রাম, কিশমিশ ৩০ গ্রাম, লবণ ২৭ গ্রাম, চিনি ৩৫ গ্রাম, গরম পানি ৫০০ গ্রাম, গরমমসলা ১/২ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ (টুকরো করে কাটা) ৬টি, লেবুর রস ১ চা-চামচ।
প্রণালি: প্রথমে মাছের টুকরোগুলো ভালোভাবে ধুয়ে নিন। মাছের গায়ে ভালো করে লেবুর রস, লবণ, হলুদ ও মরিচগুঁড়া মাখিয়ে রাখুন। তারপর গরম তেলে মাছগুলো হালকা ভেজে নিন। এবার টমেটো চার টুকরো করে কেটে নিন। টক দই ভালোভাবে ফেটিয়ে রাখুন। তেল গরম করে তাতে পেঁয়াজবাটা, আদাবাটা, লবণ, টমেটোকুচি, মরিচগুঁড়া, হলুদগুঁড়া ও জিরাগুঁড়া দিয়ে নেড়ে, ফেটানো টক দই যোগ করে ভালোভাবে কষিয়ে নিন। মসলা থেকে তেল বেরোতে শুরু করলে তাতে কিশমিশ যোগ করুন। তারপর সব উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে, গরম পানি যোগ করে কড়াইয়ে ঢেকে দিন। ঝোলে বলক এলে তাতে ভেজে রাখা মাছগুলো এক-এক করে এবং পেঁয়াজ যোগ করুন। এরপর চিরে রাখা কাঁচা মরিচ আর ধনেপাতাকুচি দিন। তারপর ছড়িয়ে দিন সামান্য গরমমসলার গুঁড়া। এবার ঢাকনা দিয়ে আধ ঘণ্টা রেখে দিন। তারপর নামিয়ে গরম-গরম পরিবেশন করুন সাদা ভাত কিংবা পোলাওয়ের সঙ্গে।

পুর ভরা লুচির পায়েস

উপকরণ: ময়দা ৩০০ গ্রাম, ঘি ১ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, পানি পরিমাণমতো, দুধ ১ লিটার, খোয়া ক্ষীর ১৫০ গ্রাম, চিনি স্বাদমতো, তেল (লুচি ভাজার জন্য) ২৫০ মিলিলিটার বা পরিমাণমতো, কনডেন্সড মিল্ক ১/২ কাপ, এলাচিগুঁড়া ১/২ চা-চামচ, পেস্তাকুচি ও আমন্ডকুচি ১/২ টেবিল চামচ, কাজু ও কিশমিশ ১/২ টেবিল চামচ, জাফরান ১ চা-চামচ।
প্রণালি: প্রথমে ময়দায় ঘি, লবণ ও অল্প পানি দিয়ে মেখে নিয়ে একটি ডো বানিয়ে ১০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। এরপর এ থেকে ছোট ছোট লেচি কেটে তাতে ক্ষীরের পুর ভরে লুচির মতো করে বেলে নিন। একটি প্যানে তেল গরম করে তাতে এই পুর ভরা লুচিগুলো ভেজে তুলে রাখুন। এরপর কড়াইতে দুধ বসিয়ে জ্বাল দিয়ে তাতে চিনি যোগে ঘন করে প্রায় আধা লিটারের মতো হয়ে এলে খোয়া ক্ষীর দিয়ে ভালো করে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এবার এতে কনডেন্সড মিল্ক দিয়ে নাড়ুন। আরেকটু ঘন হয়ে এলে লুচি যোগ করুন। এরপর এলাচিগুঁড়া ছড়িয়ে দিয়ে চুলা নিভিয়ে দিন। ঠান্ডা হয়ে এলে, প্লেটে ঢেলে পেস্তাকুচি ও আমন্ডকুচি, জাফরান ছড়িয়ে কাজুবাদাম ও কিশমিশ যোগে সাজিয়ে নিন। তারপর ঠান্ডা-ঠান্ডা পরিবেশন করুন।

সরালি মুর্গ রেজালা

উপকরণ: সরালি মুরগি ১টি (৪ টুকরো করে কাটা), পেঁয়াজবাটা ১ কাপ, আদাবাটা ও রসুনবাটা ২ টেবিল চামচ, আস্ত কাজুবাদাম ১০-১২টি, আস্ত কাঠবাদাম ৭-৮টি, পেস্তা বাদাম ২ টেবিল চামচ, দই ১ কাপ, দারুচিনি ২টি, ছোট এলাচি ৪-৫টি, লবঙ্গ ৪-৫টি, আস্ত গোলমরিচ ৮-১০টি, তেজপাতা ২টি, শাহী জিরাগুঁড়া ১/২ চা-চামচ, মরিচগুঁড়া ১ টেবিল চামচ, ধনেগুঁড়া ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা ১ টেবিল চামচ, কেওড়া জল ১ চা-চামচ, লবণ ও চিনি স্বাদমতো, ঘি ২ টেবিল চামচ, তেল ২ টেবিল চামচ, ডিম (সেদ্ধ করা) ২টি, আলু (ঝুরি করে ভাজা) পরিমাণমতো।
প্রণালি: প্রথমে কাজুবাদাম, কাঠবাদাম ও পেস্তা মিহি করে বেটে রেখে দিন। এবার একটি বড় বাটিতে মুরগি, পেঁয়াজবাটা, মরিচগুঁড়া, আদা-রসুনবাটা, দই, লবণ দিয়ে ম্যারিনেট করে ১ ঘণ্টা রাখুন। নন-স্টিক প্যানে ঘি ও তেল গরম করে দুটি দারুচিনি, ৪-৫টি লবঙ্গ, ৮-১০টি গোলমরিচ ও ২টি তেজপাতা দিয়ে ফোড়ন দিন। সুঘ্রাণ বের হলে ম্যারিনেট করা মুরগি যোগ করে, নেড়ে কষিয়ে ঢেকে মাঝারি আঁচে রান্না করুন। কিছুক্ষণ পর ঢাকনা তুলে কাজু, কাঠবাদাম, পেস্তাবাটা, ধনেগুঁড়া, বেরেস্তা, শাহি জিরাগুঁড়া ও সামান্য চিনি দিয়ে ভালো করে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এরপর আবার ঢেকে দিন। আঁচ বাড়িয়ে ফোটাতে থাকুন যতক্ষণ না ঝোল ঘন-ঘন হচ্ছে। গ্রেভি ঘন হয়ে এলে কেওড়া জল ছড়িয়ে আঁচ বন্ধ করে চুলার ওপর কিছুক্ষণ ঢেকে রাখুন। তারপর নামিয়ে নিয়ে লুচি, রুটি বা পরোটার সঙ্গে পরিবেশন করুন। সঙ্গে দিন ঝুরি করে ভাজা আলু এবং সেদ্ধ ডিম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top