skip to Main Content

সম্পাদকীয়

বাংলা নববর্ষ আগের মতো নেই। হালখাতা আর মেলার সেই চিরায়ত আবহ ছাড়িয়ে এখন এটি বাঙালির বড় একটি উৎসবের রূপ নিয়েছে। গ্রাম ও শহরে। বরং শহুরে বাঙালিদের মধ্যে নববর্ষ উদ্যাপনের আগ্রহ আগের চেয়ে বেশি। এটা বোঝা যায় ফ্যাশন হাউজ ও বিউটি পার্লারগুলোর দিকে তাকালে। এটা আমার কাছে ইতিবাচক বলে মনে হয়। এই কারণে যে, যেমন করেই হোক, নিজের শিকড়ের দিকে বাঙালির টান বেড়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রকারান্তরে নিজের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রকাশ ঘটে চলেছে। আমরা যে আত্মবিস্মৃত জাতি নই, তার প্রমাণও মিলছে। অধিকন্তু, প্রিয় পাঠক, একটা গৌরব ও আনন্দের খবর আপনাদের সঙ্গে ভাগ না করে পারছি না। তা হলো, পয়লা বৈশাখের সকালে অনুষ্ঠিত মঙ্গল শোভাযাত্রা জাতিসংঘের কালচারাল হেরিটেজের স্বীকৃতি অর্জন করেছে। বলা বাহুল্য নয়, এই শোভাযাত্রা কেবল বাঙালির মনের সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্য প্রকাশ করে না, এর রয়েছে প্রতীকী তাৎপর্যও। এর মধ্য দিয়ে আমরা মানুষের কল্যাণ প্রত্যাশায় বৃহত্তর ঐক্যের বার্তা বহন করি। ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি-পেশা-বয়সনির্বিশেষে।

লোকজ নানা অনুষঙ্গ আমাদের জীবনে ফিরে আসছে। নতুন করে। আমরা যে নিজেদের অতীত থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চাই না, এটা তারই প্রমাণ। এই সত্য উদ্ভাসিত হয়েছে ক্যানভাসের এবারের সংখ্যায়। প্রতিবছরের মতোই বর্ধিত কলেবরে। মানে, আমাদের এবারের থিম লোকসংস্কৃতি। সব বিভাগেই লোকজ ফ্যাশন, বিউটি ও জীবনধারাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, এই প্রথম কোনো বিষয় নিয়ে ক্যানভাসের নববর্ষ উদ্যাপিত হচ্ছে। সঙ্গে থাকছে পোর্টফোলিও। বৈশাখে নিজেকে সাজিয়ে তোলার জন্য। আশা করি, আপনাদের কাজে লাগবে।
প্রিয় পাঠক, এটা নিশ্চয়ই আপনারা লক্ষ করেছেন, আধুনিক নগরসংস্কৃতি বাঙালির লোকজ শিল্পকলাকে হটিয়ে দিতে পারেনি তার আত্মা থেকে, বরং এর পুনর্জাগরণ ঘটে চলেছে নানাভাবে। ফ্যাশনে, সৌন্দর্যবোধে, জীবনধারায় আজ আমাদের ঐতিহ্যের চিহ্নগুলো নতুন ও উজ্জ্বল হয়ে ফিরে এসেছে। নিজের সংস্কৃতির এই নব উন্মোচনের প্রেরণা ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবারের কভারস্টোরিতে। অন্যান্য রচনায়ও থাকছে নববর্ষ উদ্যাপনের স্পন্দন।

উৎসব আনন্দে ভরে উঠুক। ভালো থাকুন সবাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top