প্রায় দুই দশক পর পর্দায় এসেছে হলিউডের ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’ সিরিজের নতুন ছবি। ১৯৯৯ সালে মুক্তি পায় বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী নির্ভর সিনেমা ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’। সেই সময়ে এই সিনেমাটি বক্স অফিস থেকে ৪৬৫.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছিল। এরপর ২০০৩ সালে মুক্তি পায় এই সিরিজের পরের দুটি সিনেমা ‘দ্য ম্যাট্রিক্স রিলোডেড’ এবং ‘দ্য ম্যাট্রিক্স রেভ্যুলেশন্স’। এই দুটি সিনেমা বক্স অফিস থেকে যথাক্রমে ৭৩৯.৪ মিলিয়ন ও ৪২৭.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করার মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
‘ম্যাট্রিক্স রেভল্যুশন’কে সিরিজটির শেষ বলে ধারণা করেছিলেন ভক্তরা। তবে ভক্তদের চমকে দিয়ে আবারও পর্দায় এসেছে ‘ম্যাট্রিক্স’। আগামী ২২ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তি পেয়েছে ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’ সিরিজের চতুর্থ সিনেমা ‘দ্য ম্যাট্রিক্স রেজারেকশনস’। ২৪ ডিসেম্বর স্টার সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পেয়েছে ছবিটি।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের স্যান ফ্রান্সিসকোতে ‘দ্য ম্যাট্রিক্স রেজারেকশনস’ সিনেমার শুটিং শুরু হয়। স্যান ফ্রান্সিসকো ছাড়াও জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে এই সিনেমাটি শুটিং করা হয়েছে। তবে করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর সিনেমাটির শুটিং স্থগিত করা হয়। তারপর একই বছরের আগস্টে জার্মানির বার্লিনে সিনেমাটির শুটিং শুরু হয়। ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’-এর চতুর্থ পর্বে কিয়ানু রিভস, ক্যারি অ্যান মস ছাড়াও থাকছেন নিল প্যাট্রিক হ্যারিস, জেসিকা হেনউক-সহ একঝাঁক জনপ্রিয় হলিউড তারকা এবং বলিউডের জনপ্রিয় নায়িকা প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। ট্রেলারে বড় চশমা পরা বলিউডের দেশী গার্ল প্রিয়াংকা চোপড়াকেও দেখা যায়। তখন থেকে ট্রেলারে প্রিয়াংকাকে দেখে যেমন মুগ্ধ হন তার ভক্তরা তেমনি ছবিতে তার ভূমিকা নিয়ে কৌতূহলও জাগিয়েছে। আগের তিন পর্বের মতো এবারও পরিচালনায় থাকছেন লানা ওকাভস্কি, আর নিও এবং ট্রিনিটি চরিত্রে থাকছেন জনপ্রিয় অভিনেতা কিয়ানু রিভস ও অভিনেত্রী ক্যারি অ্যান মস। ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’ সিনেমার কাহিনী যেখান থেকে শুরু হয়েছিল এই সিনেমার কাহিনী ঠিক সেখানেই ফিরে যাবে। অর্থাৎ ‘দ্য ম্যাট্রিক্স রেজারেকশনস’ সিনেমায় ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’ সিনেমার কাহিনীর পুনরুত্থান ঘটবে।
‘দ্য ম্যাট্রিক্স রেভ্যুলেশন্স’ সিনেমায় নিও ও ট্রিনিটি মারা যায়। তাই এবারের সিনেমায় এই দু’টি চরিত্রকে কীভাবে উপস্থাপন করা হবে এ বিষয়ে দর্শকদের জল্পনা কল্পনার শেষ ছিল না। তবে সিনেমার ট্রেলার দেখে এখন অনেকেই বুঝতে পেরেছেন কীভাবে এই দুটি চরিত্রকে ফিরিয়ে আনা হবে। এবারের ছবিতে দেখা যাবে, নিও ও ট্রিনিটি নিজেদের অস্তিত্ব ভুলে গেছে। একে অন্যকে চিনতে পারছে না তারা। নিও এবং ট্রিনিটি আবার ফিরে এসেছে। কীভাবে তারা ফিরেছে সেই রহস্যের ইঙ্গিত লুকিয়ে আছে ছবির নামে। ছবির ট্রেলার দেখে বোঝা যায়, নিও পুনরায় তার থমাস অ্যান্ডারসন সত্তায় ফিরে যায় এবং সে ম্যাট্রিক্স সম্পর্কে সব ভুলে যায়। এমনকি সে ট্রিনিটিকেও চিনতে পারে না এবং ট্রিনিটিও তাকে চিনতে পারে না। এ ছাড়াও থমাস অ্যান্ডারসন তার স্বপ্নে অদ্ভুত সব জিনিস দেখা শুরু করে। এই স্বপ্নগুলো নিয়ে তার মনে নানা রকমের প্রশ্ন জাগে, তাই সে এই সকল স্বপ্নের রহস্য উন্মোচন করার চেষ্টা শুরু করে। এই সিনেমায় কিছুটা ভিন্নভাবে তার সাথে মরফিয়াস-এর দেখা হবে। মরফিয়াস আবারও থমাস অ্যান্ডারসনের সামনে নীল ও লাল রঙের দুটি ক্যাপসুল নিয়ে হাজির হয়। থমাস যদি নীল রঙের ক্যাপসুলটি খায় তাহলে সে ম্যাট্রিক্সে মধ্যে আটকা পড়ে থাকবে এবং বাস্তব পৃথিবী সম্পর্কে তার কখনো জানা হবে না। আর সে যদি লাল রঙের ক্যাপসুটি খায় তাহলে সে বাস্তব পৃথিবী সম্পর্কে জানতে পারবে এবং তার জন্য জ্ঞানের দুয়ার খুলে যাবে। ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’ সিনেমার মতো এখানেও থমাস অ্যান্ডারসন লাল ক্যাপসুলটি বেছে নিয়ে বাস্তব পৃথিবীর রহস্য উন্মোচনের কাজে নামবে। এ ছাড়াও ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’ সিনেমায় রুপক অর্থে যে জিনিসগুলো ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো ‘দ্য ম্যাট্রিক্স রেজারেকশনস’ সিনেমাতেও থাকছে।