বগুড়ার বাসিন্দা এহসানুর রশীদ পুনম। মিউজিক করার পাশাপাশি চাকরিও করতেন। তবে মাঝে জীবন যুদ্ধে হেরে গিয়ে ঢাকায় রিক্সা চালানো শুরু করেন। পুনমের জন্ম রাজশাহীতে। ২০০০ সাল পরবর্তী সময়ে ব্যস্ত ছিলেন মিউজিক নিয়ে। পাশাপাশি সম্পন্ন করেছেন গ্র্যাজুয়েশন। চাকরিও করেছেন একাধিক কোম্পানিতে।
পুনম জানান, তিনি মিউজিশিয়ান হিসেবে তিনি একটি ব্যান্ডে যুক্ত ছিলেন। এরপর ঢাকায় চাকরিও চলছিল তার। কিন্তু গেল বছর তার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। পুনম তখন একটি গার্মেন্টসের এডমিন বিভাগের কর্মকর্তা। অফিস শেষ করে বের হয়েছেন বাসার উদ্দেশ্যে। একটি প্রাইভেট কার এসে ধাক্কা দেন তাকে। বেঁচে যান সেই যাত্রায়। তবে এই দুর্ঘটনা পুনমের সব কেড়ে নেয়। সম্বল, সঞ্চয় যা কিছু ছিল, সবই যায় সুস্থ হওয়ার পেছনে। পুনম সুস্থ হয়ে উঠলেন। কিন্তু ততদিনে চলে গেছে চাকরি। শেষ হয়ে গেছে নিজের সব সম্বল। এরই মধ্যে পৃথিবীজুড়ে শুরু হয় করোনাভাইরাস দুর্যোগ। তাই নতুন চাকরিও জোটেনি তখন পর্যন্ত পুনমের। বাধ্য হয়ে রিক্সা চালানো শুরু করেন তিনি।
গণমাধ্যমের সংবাদ মারফৎ স্বপ্ন’র নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির খোঁজ পান পুনমের। এরপর স্বপ্ন’র পক্ষ থেকে যোগাযোগ করার পর স্বপ্ন কার্যালয়ে শুক্রবার বিকেলে হাজির হন পুনম। স্বপ্ন’র নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির এবং অপারেশনস ডিরেক্টর আবু নাছের অনলাইনে এহসানুর রশীদ পুনমের সঙ্গে কথা বলার পর মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান শাহ মো. রিজভী রনী এবং মিডিয়া অ্যান্ড আর ম্যানেজার কামরুজ্জামান মিলু সেদিনই তার হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন। কোম্পানীর ইনভেন্টরি অ্যান্ড ক্যাশ ম্যানেজমেন্ট অফিসার পদে চাকরি পান পুনম।
স্বপ্ন’র নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির বলেন, ‘অনলাইনে ভিডিও প্রতিবেদনটা দেখেই মনে হচ্ছিল যে, উনার জন্য কিছু করতে পারলে ভালো লাগত। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই এই মানুষটির জন্য কিছু একটা করার চেষ্টা করলাম আমরা। তার জন্য এটুকু করতে পেরে বেশ ভালো লাগছে।’
স্বপ্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি পাবার পর পুনম বলেন, ‘এমন দুঃসময়ে চাকরি পাব, এটা ভাবতেও পারিনি। আমাকে যে সম্মান আজ স্বপ্ন দিলো সেটা সততার সঙ্গে রক্ষা করতে চাই আমি। নতুন পদে নতুন চাকরিটা ভালোভাবে করতে চাই। যে সম্মানটা উনারা দিলেন সেটা রক্ষা করার দায়িত্ব এখন আমার।’