নাট্যসংগঠন স্বপ্নদলের দেশ-বিদেশে দর্শকনন্দিত মনোড্রামা ‘হেলেন কেলার’-এর ২৬তম প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল সন্ধ্যা সাতটায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে। ‘বিশ্বের বিস্ময়’ মহীয়সী হেলেন কেলারের জীবন-কর্ম-স্বপ্ন-সংগ্রাম-দর্শনভিত্তিক ব্যতিক্রমী প্রযোজনা ‘হেলেন কেলার’ রচনা করেছেন অপূর্ব কুমার কুণ্ডু এবং নির্দেশনা দিয়েছেন জাহিদ রিপন। এতে অভিনয় করছেন জুয়েনা শবনম এবং প্রযোজনা-ব্যবস্থাপক ছিলেন শাখাওয়াত শ্যামল।
প্রদর্শনীতে অতিথি থাকছেন পশ্চিমবঙ্গের নাট্যজন-দম্পতি আশীষ দাস ও দ্বীপান্বিতা বণিক দাস।
দৃষ্টি, বাক ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও প্রবল আত্মবিশ্বাস আর শিক্ষয়িত্রী অ্যান স্যুলিভানের অতিমানবিক প্রেরণায় হেলেন কেলারের সব নেতিবাচকতার বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর কাহিনি নিয়ে আবর্তিত স্বপ্নদলের ‘হেলেন কেলার’ প্রযোজনা। এতে হেলেন কেলারের নিজ শিক্ষয়িত্রী অ্যানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষ্যে প্রকাশিত হয় চার্লি চ্যাপলিন-মার্ক টোয়েন-কেনেডি-আইনস্টাইন প্রমুখ বিশ্ববিখ্যাত ব্যক্তিত্বের সান্নিধ্যে তার জীবনের সমৃদ্ধির কথা। উন্মোচিত হয় পাশ্চাত্যের হেলেন কেলারের জীবনে প্রাচ্যের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তথা রবীন্দ্রদর্শনের প্রবল প্রভাবের প্রকৃত স্বরূপ! উঠে আসে নারীজাগরণ-মানবতাবাদের পক্ষে এবং যুদ্ধ-ধ্বংস-সহিংসতা-বর্ণবাদ তথা আণবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে তার স্পষ্ট অবস্থানের কথা। পাশাপাশি উচ্চকিত হয় ব্যক্তিজীবনের নানা পূর্ণতা-অপূর্ণতার প্রসঙ্গও। অজস্র প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে প্রকাশিত ও বিকশিত হয়ে মানবকল্যাণে নিবেদিত হতে পারাটাই হয়তো জীবনের চূড়ান্ত সার্থকতা- এ উচ্চাঙ্গের অনুভবটিই শেষাবধি প্রধান হয়ে ওঠে হেলেন কেলারের জীবনীনির্ভর এবং গবেষণাগার পদ্ধতিতে নির্মিত ঐতিহ্যের ধারায় আধুনিক বাংলা নাট্যরীতির এ প্রযোজনায়।
প্রসঙ্গত, জাপানের টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাসের আমন্ত্রণে এবং ভারতের কলকাতায় প্রাচ্য নিউ আলিপুর আয়োজিত স্বনামখ্যাত ‘পুবের নাট্যগাথা’ আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবে মঞ্চায়নসহ এ পর্যন্ত ২৫টি সফল প্রদর্শনীর মাধ্যমে ‘হেলেন কেলার’ প্রযোজনাটি ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।