হটস্পট I নূরজাহান মার্কেট
গমগমে বাজার বলতে যা বোঝায়, নূরজাহান মার্কেট আদতে তাই! হইচই, দামাদামি—এসবে মত্ত সবাই। ঢুকতেই চোখে পড়বে সারি সারি দোকান। ডান, বাম—দুদিকেই। সাবধানে ভিড় পেরিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। একেকটি দোকানে একেক রকম প্রডাক্ট। এরই মাঝে আমাদের যাত্রা সামার কালেকশনের খোঁজে। নূরজাহান মার্কেট ক্রেতা চাহিদায় এগিয়ে সব সময়। পাশ্চাত্য ঘরানার পোশাক সুলভে পাওয়া যায় এখানে, এমনটাই জনশ্রুতি। প্রমাণ পাওয়া গেল ছোট ছোট দোকানে চোখ পড়তেই। দেশের তৈরি পোশাকশিল্প কারখানার লেফটওভারের ওপরে নির্ভরশীল এই বাজার। দামের অতিরঞ্জন এখানে সেভাবে জেঁকে বসেনি বলা যেতে পারে। যদিও বর্তমানে মূল্য বেড়েছে। তবু অনেক ক্রেতা এখনো ভরসা রাখেন নূরজাহানের নূরে।
স্টাইলিশ সামার ক্লদিংয়ের কালেকশন বিপুল। কম্ফি ফ্যাব্রিক আর সঙ্গে দরদামের সুযোগ আছে। এসবেই ক্রেতা টানে এই মার্কেট। নিট, কটন, সিনথেটিক আছে উষ্ণ দিনের আয়োজনে। আজকের উদ্দেশ্য ফিমেল সামারওয়্যার। আরবান সামার ফ্যাশনের পোশাকের খোঁজ বেশ ভালোই পাওয়া গেল। সাদা রঙে স্বস্তি—এ তো জানা কথাই। সেই সাদার শেডের অফ টোনের একটি শর্ট টপস বেছে নিলাম। রাউন্ড নেকলাইন আর ম্যাগি হাতায় গরমে উপযোগী এটি। পেয়ার আপে সাদা কালো ব্যাগি স্টাইল ট্রাউজার। ডে ট্যুরের দৌড়, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, ঘোরাঘুরিতে মানিয়ে যাবে।
ফ্লোরাল প্রিন্টের কুর্তি এই সময়ে উপযুক্ত। সেপিয়া জমিনে সাদা ফুলের বাহার চোখে স্বস্তি দেয়। লিনেনের সফটনেস সারা দিনের জন্য আরামের দেয় নিশ্চয়তা। ব্যান্ড নেকের সঙ্গে শর্ট বাটন লাইন। কাঁধ আর গলা ঢাকা থাকায় ইউভি প্রটেকশন নিশ্চিত হবে। লং স্লিভের সঙ্গে লুপ দেওয়া আছে। চাইলে কনুই অবধি গুটিয়ে রাখা যাবে।
লু হাওয়ার সময়ে টপস-পালাজ্জো স্বস্তি দেয়। ইউনিভার্সিটি, অফিসেও ইদানীং এ ধরনের ক্যাজুয়াল পোশাকে দেখা যায় দেশি ফ্যাশনিস্তাদের। নূরজাহানে খুঁজে পাওয়া গেল এই ধারার একটি টপ। রাস্ট কালার ক্যানভাসে ডিটসি ফ্লাওয়ার। ব্যান্ড কলার। টিপটপ বাটনপ্লিট। মিড লেংথ টপটির সঙ্গে বটমে আছে স্ট্রেইট কাট পালাজ্জো। লাইট ব্রাউন কালার। ব্রাইট দুই শেডে সম্পন্ন এই লুক। নাইন টু নাইন কনসেপ্টেও রাখা যাবে এই জুটিকে। অর্থাৎ সকাল ৯টায় অফিস শুরু করে, সন্ধ্যা কিংবা রাতের গেট টুগেদারেও হাজির হওয়া যাবে।
নূরজাহান মার্কেট ফিক্সড প্রাইসের ক্লদিং লেবেল নয়; বরং সুলভ মূল্যের। এক দামে পণ্য কেনার ইচ্ছা থাকলে খুঁজে পাওয়া কঠিন হতে পারে। তাই দাম নিয়ে আলোচনা করতে অভ্যস্ত হলে সহজ হবে কেনাকাটা।
দোকানি ব্যস্ত থাকেন। তাই মনোযোগ দিয়ে নিজেই দেখার চেষ্টা করুন কী কী আছে তার কাছে। সব সাইজ পাওয়া সব সময়ে সম্ভব হয় না। গজ ফিতা ব্যবহারে নিজেই জানতে পারবেন পোশাকের মাপ। সন্তুষ্ট হলে তবেই কিনুন। অদল-বদল কষ্টসাধ্য হতে পারে। প্রতিটি দোকানে মেজারমেন্ট টেপ পাবেন। কষ্টসাধ্য কিছু নয়।
এই মার্কেটের ক্লদিং আইটেমের ভেরিয়েশন প্রচুর। তাই কী চান, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন আগে থেকেই। প্রয়োজনে লিস্ট করতে পারেন। সঙ্গে রাখতে পারেন শপিং ব্যাগ। তাতে শপিং একটু আরামের হবে। মনে রাখবেন, নূরজাহানে বড় ব্যাগের সাপ্লাই নেই বললেই চলে। সচেতন থেকে সময় নিয়ে বেছে বেছে শপিংয়ের সুযোগ নিতে চাইলে প্রিয়জনকে নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এই বিপণিবিতান।
সারাহ্ দীনা
মডেল: অন্তরা
মেকওভার: পারসোনা
ওয়্যারড্রোব: নূরজাহান মার্কেট
ছবি: কৌশিক ইকবাল