ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাশন I সেপ্টেম্বর রানওয়ে হাইলাইট
সেপ্টেম্বরকে বলা যায় ফ্যাশন ক্যালেন্ডারের জানুয়ারি। নতুন বছরের প্রথম মাস যেন। যাকে ঘিরে আয়োজিত হয় নামীদামি ফ্যাশন উইকগুলো। চূড়ান্ত হয় আসছে বছরের ট্রেন্ড! একই সঙ্গে শেখা এবং শেখানোর সময় এটি। বলা যেতে পারে ফ্যাশন বাজারের ব্যাক টু স্কুল মোমেন্ট। বিস্তারিত লিখেছেন সারাহ্ দীনা
ফ্যাশন উইকের গুরুত্ব অস্বীকারের কোনো উপায় নেই। এই ঝলমলে আয়োজন থেকে কোনো ট্রেন্ড সত্যিকার ডিজাইনার, ভোক্তা আর ফ্যাশনিস্তাদের পরম আকাক্সক্ষার বিষয়। রেড কার্পেট, স্পট লাইট, ক্যামেরার ফ্ল্যাশ আর ক্যাটওয়াকের জাদুর নেশায় মাতে পুরো বিশ্ব। সেই সুর ছুঁয়ে আজ তাই তিন আয়োজন নিয়ে কথোপকথন।
নিউইয়র্ক ফ্যাশন উইক
এ বছর নিউইয়র্ক ফ্যাশন উইক চলেছে ৭ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর অবধি। ১৯৪৩ সালে শুরু হয়ে এখনো চলছে দাপটের সঙ্গে। শুধু ফ্যাশন শোতেই শেষ হয় না এই মহাযজ্ঞ। হাই প্রোফাইল পার্টি, চ্যারিটি ইভেন্ট এবং ফ্যাশনিস্তাদের একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগের প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও কাজ করে। এসব কারণে নিউইয়র্কের এই ঝলমলে উৎসবকে ফ্যাশন বিশ্বের সাংস্কৃতিক বাতিঘর বলা হয়। আবার নিউইয়র্কের ফ্যাশন, ট্যুরিজম—দুই ক্ষেত্রে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এই ইভেন্ট।
স্প্রিং আর সামারের কালেকশন নিয়ে নিউইয়র্ক ফ্যাশন উইকে এসেছিল নামীদামি সব ব্র্যান্ড। রালফ লরেন, টরি বার্চ, ৩.১ ফিলিপ লিমের মতো জায়ান্ট ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোর পাশাপাশি এবারের আসরে তারকা উপস্থিতিও ছিল চমকপ্রদ। পপসম্রাজ্ঞী ম্যাডোনা, ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন, জিমন্যাস্ট সুনি লি এসেছিলেন এই উৎসব উপভোগে।
হারলম’স ফ্যাশন রোয়ের ফ্যাশন শো অ্যান্ড স্টাইল অ্যাওয়ার্ড
নিউইয়র্ক ফ্যাশন উইকের অন্যতম আকর্ষণ হারলম’স ফ্যাশন রো। ট্রেইলব্লেজার ও ফ্যাশন ট্যালেন্টদের সম্মাননা জানানোর উৎসব এটি। এবারে নাওমি ক্যাম্পবেলকে দেওয়া হয়েছে আইকন অ্যাওয়ার্ড। টিয়ানা টেইলর পেয়েছেন ভার্জিল অ্যাবলোহ অ্যাওয়ার্ড। বক্তব্য দেন লিনা ওয়েইথ আর ট্রেসি এলিশ রস এবং অ্যানা উইনটর। ফ্যাশনের এই বিশাল আয়োজনে অংশগ্রহণ ব্র্যান্ডগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের বাঘা বাঘা ব্র্যান্ড হাজির ছিল আসর মাতাতে। সেখান থেকেই কয়েকটির বয়ান থাকছে এখানে।
রালফ লরেন
হ্যাম্পটনসে এই ফ্যাশন উইকের শুরুটা করে বিখ্যাত আমেরিকান ব্র্যান্ড রালফ লরেন। তাদের রেডি টু ওয়্যার কালেকশন দিয়ে। নাওমি ক্যাম্পবেল হাঁটেন রানওয়েতে। উদ্দেশ্য ছিল ডিজাইনারদের প্রাকৃতিক সুন্দরতার প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ। শোতে আমন্ত্রিত ছিলেন ২৫০ অতিথি। তালিকায় ছিলেন ডক্টর জিল বাইডেন, টম হিডেলস্টোন, কেসি মাসগ্রেভসসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব।
ব্রান্ডন ম্যাক্সওয়েল
ব্র্যান্ডের ডিএনএকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করা হয়েছে এবার। চিরচেনা ব্রান্ডন ম্যাক্সওয়েলের স্থিরচিত্ত এবং আত্মবিশ্বাসের সম্মিলন প্রকাশিত হয়েছে এখানে। কালার প্যালেটে নেভি ব্লু, বেইজ আর সিলভারের ব্যবহার ছিল বেশি।
টোরি বার্চ
লাক্সারি ব্র্যান্ডটির এবারের কালেকশনে অন্যতম আকর্ষণ ছিল ফুট অ্যাকসেসরিজ। বুট পেয়েছে প্রাধান্য। আর ক্লদিং লাইনে ছিল ড্রেপড স্কার্ট, সাঁতারু দলের পোশাকের অনুপ্রেরণায় তৈরি পোশাক, ট্র্যাডিশনাল ওয়ান পিস বডি স্যুট আর শিক ট্রাউজারের সঙ্গত, সোয়েট প্যান্টসহ আরও সব স্টেটমেন্ট পিস।
কস
যুক্তরাজ্যভিত্তিক রিটেইল ব্র্যান্ড। লেবেলটির মিনিমালিস্ট রানওয়েতে দেখা গেছে তারকাদের সম্মিলন। ইসা রে, কোলম্যান ডোমিংগো, এমা রবার্টস, এমিলি রাতাকোস্কা, ক্লোয়ি সেভিনির উপস্থিতি নজর কেড়েছে। কসের কালেকশনে হাই কোয়ালিটি ফ্যাব্রিকের ব্যবহার ছিল। উলেন আউটার ওয়্যার, ওভারসাইজড লেদার জ্যাকেট, ব্যারেল লেগ ট্রাউজার, স্কার্ফি ড্রেস এবং টাই নেক ব্লাউজও নজর কেড়েছে। ছিল অ্যাকসেসরিজেরও উপস্থিতি। ব্যালে শুর বিউটি মুগ্ধ করেছে দর্শকদের।
অফ হোয়াইট
প্রথমবারের মতো এসেই ফ্যাশনিস্তাদের মন জয় করে নিয়েছে। ব্র্যান্ডটি প্রদর্শন করেছিল বিশেষ কালেকশন। যার শিরোনাম ডিউটি ফ্রি।
এ ছাড়া ব্রুকলিন বেইসড ফ্যাশন লেবেল লুয়ার তাদের ফাইনাল ইভনিং শোতে চমকে দিয়েছে পপসম্রাজ্ঞী ম্যাডোনাকে হাজির করে। ক্যামেল কোটে এই তারকার উজ্জ্বল উপস্থিতি নজর কেড়েছে সবার। নিউইয়র্ক ফ্যাশন উইকে এবার অলিম্পিয়ানদের উপস্থিতি ছিল বেশ চমকপ্রদ।
নিউইয়র্ক ফ্যাশন উইকের সঙ্গে এবার বাংলাদেশের নাম জড়িয়েছে। বাংলাদেশের ফ্যাশন ডিজাইনার রাইসা রফিকের ব্র্যান্ড রাইয়ের ‘ইচ্ছা’ ও ‘গেজ’ নামের দুটি সংগ্রহ প্রদর্শন করা হয়েছে। শিরোনাম ছিল ইচ্ছা। এই আয়োজনের অন্যতম সংযোজন নিউইয়র্ক কতুর ফ্যাশন উইকের র্যাম্পে হেঁটেছেন বাংলাদেশি মডেল নিবিড়।
লন্ডন ফ্যাশন উইক
১৩ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে লন্ডন ফ্যাশন উইক শেষ হয় ১৭ তারিখে। এই আয়োজনের ৪০ বছর পূর্তি হলো এবার। ব্রিটিশ ব্র্যান্ডের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক লেবেলেরও উজ্জ্বল উপস্থিতি ছিল। প্রায় আড়াই শ ব্র্যান্ড তাদের ডিজাইন করা পোশাক নিয়ে হাজির হয়েছিলেন এই আয়োজনে।
রানওয়েতে ৭২ জন ডিজাইনারের পোশাক প্রদর্শিত হয়। ক্যাটওয়াকের পাশাপাশি ফিজিক্যাল ও ডিজিটাল উপস্থিতিও ছিল নজরকাড়া। ফ্যাশন শো এবং ইভেন্টের পাশাপাশি ছিল একটি প্রদর্শনী। যার আয়োজন করা হয়েছিল ব্রাজিলিয়ান অ্যাম্বাসিতে।
এডেলিন লি
ওমেন্স ওয়্যার ব্র্যান্ড এডেলিন লি এবারই প্রথম লন্ডন ফ্যাশন উইকের ক্যাটওয়াকে অংশ নেয়। প্রদর্শন করে স্প্রিং-সামার কালেকশন ২০২৫। শো কোরিওগ্রাফ করেন অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী কোরিওগ্রাফার শেলি ম্যাক্সওয়েল। অগমেন্টেড রিয়েলিটি ব্যবহার করে ড্রেপিং, ফ্লুইড ট্যাসেল প্রদর্শন করা হয়। বুননের কারিশমাও এখানে দেখা যায়। সিগনেচার প্রোডাক্ট ফ্লু বাবল জ্যাকার্ডের বিশেষ ব্যবহার দেখা গেছে।
আপুজান
লন্ডন বেইসড এই ফ্যাশন লেবেলের সূচনা ২০১৩ সালে। ডিজাইনার তাইওয়ানিজ আপুজান। প্যাটার্ন এবং নিটওয়্যারের টেকনিকে দুর্দান্ত ব্যবহার প্রদর্শিত হয় তাদের এবারের শোতে। ফ্যান্টাসি এবং সাহিত্যের মিশেলে। এবারের ক্যাটওয়াকে থিম হিসেবে ব্র্যান্ডটি বেছে নিয়েছিল বিখ্যাত রূপকথার বই এলিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড। ৩০টি লুক তৈরি করা হয় এই ফেইরিটেল থেকে।
ফেবেন
সুইডিশ ইথিওপিয়ান ডিজাইনার ফেবেন ভেমেন্ডির ব্র্যান্ড এটি। এবারের আয়োজনে তিনি প্রিন্টের ব্যবহার দেখিয়েছেন মন খুলে। যেখানে রঙের ব্যবহার ছিল বৈচিত্র্যময়। ডিজাইনার তার টুইস্ট টেকনিক ব্যবহার করে বানিয়েছেন বেশ কিছু পোশাক। আফ্রিকার নারীদের দিয়ে এমব্রয়ডারি করা পোশাকও প্রদর্শিত হয় এবার।
মিথরিডেট
ফ্যাশন ডিজাইনার জাং-এর লাক্সারি ওমেন্স ওয়্যার ব্র্যান্ড মিথরিডেট। স্প্রিং-সামার কালেকশন ২০২৫ এর মাধ্যমে জাং নিজের জন্মভূমি চীনের ইউনান প্রদেশের প্রতি সম্মান দেখিয়েছেন বলে জানা যায়।
কনসিসটেন্স
মূলত ছেলেদের পোশাক নিয়ে কাজ করে এই ব্র্যান্ড। লন্ডন ফ্যাশন উইকে প্রথমবারের মতো ওমেন্স কালেকশন নিয়ে হাজির হয়েছিল। থিম ছিল, ‘ইউজলেস বাট ফ্যাবুলাস’। স্যুট এবং ট্রেঞ্চ কোটে মঞ্চ মাতিয়েছে। চমক দেখিয়েছে ফ্যাব্রিক বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রেও। লেফট ওভার ফ্যাব্রিক থেকে প্রস্তুত স্কার্ফ ও গ্লাভসও ছিল কালেকশনে।
চেট লো
লন্ডন ফ্যাশন উইকের মঞ্চে মায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছেন ডিজাইনার। যিনি একজন কর্মজীবী নারী, কর্মরত রয়েছেন কম্পিউটার বিজ্ঞানী হিসেবে। মায়ের কর্মজীবনের অনুপ্রেরণায় একত্রিশটি অফিস ওয়্যার এবারের রানওয়েতে প্রদর্শন করেন চেট। কালো আর নীলের ব্যবহারে রাঙানো হয় পোশাকগুলো।
ব্রাজিলিয়ান অ্যাম্বাসির এক্সিবিশন: আ চেইন অব ওমেন
লন্ডন ফ্যাশন উইকের অংশ হিসেবে ব্রাজিলিয়ান অ্যাম্বাসির নেওয়া অনন্য এক উদ্যোগ ছিল এটি। সে দেশের নারী ডিজাইনারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে তারা আয়োজন করে একটি বিশেষ প্রদর্শনীর। এই আয়োজনে তাদেরকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল, যারা পোশাক তৈরির ক্ষেত্রে কোনো অনন্য কৌশল কিংবা উপকরণ ব্যবহার করেছিলেন। যেমন ডিজাইনার মারিয়া বিতু পোশাক তৈরিতে কলাগাছের আঁশ ব্যবহার করেছিলেন। আবার ডিজাইনার পেট্রিসিয়া বোনাল্ডির ব্র্যান্ড প্যাট বো ব্রাজিলের সেলাই স্কুলে তৈরি করা পোশাক প্রদর্শন করেছিলেন।
মিলান ফ্যাশন উইক
১৭ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় মিলান ফ্যাশন উইক। এ-লিস্টেড মডেলদের দেখা গেছে এই রানওয়ে মাতাতে। ক্রিস্টি টারলিংটন, নাওমি ক্যাম্পবেল এবং কেন্ডেল জেনারের আলোতে আরও বেশি ঝলমলে হয়ে উঠেছিল এই আয়োজন। ফ্রন্ট রোও ছিল তারকাবহুল। রিয়ানা, নাওমি ওয়াটস, জিজি হাদিদ, জুলিয়ান মুর, এমিলি রাতাকোস্কাসহ ছিলেন অনেকে। আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর উপস্থিতিতে সরব ছিল পুরো সময়। গুচি, মিসৌনি, স্পোর্টম্যাক্স, টাডস, এম্পোরিও আরমানি, প্রাদা, ম্যাক্স মারা, জিল স্যান্ডার, নম্বর টোয়েন্টিওয়ান, মারনি, ফেন্দি, মোসকিনো মাতিয়েছে ফ্যাশন রানওয়ে।
টাডস
স্প্রিং-সামার ২০২৫ কালেকশনে এই ব্র্যান্ডকে ভূমধ্যসাগরের উপকূলকে উপজীব্য করে নকশা করতে দেখা গেছে। যেখানে ঐতিহ্য মিশেছে বিলাসিতার সঙ্গে। বয়নকৌশলের নিগূঢ়তার প্রবল প্রকাশ ছিল। নামকরণও করা হয়েছে একই সূত্রে। তাই আর্টিশনাল ইন্টেলিজেন্সকে যথার্থ শিরোনাম বলা যেতেই পারে।
প্রাদা
ইতালিয়ান লাক্সারি ব্র্যান্ড প্রাদা এবারের কালেকশনে ব্যক্তিসত্তাকে প্রাধান্য দিয়েছে। পোশাক থেকে অনুষঙ্গ—যা কিছু নিয়ে এসেছে, সবই আনকোরা। ছোট ক্রপ টপ, কাউবয় বুটস, স্পোর্টস ওয়্যারের উপস্থিতি দেখা গেছে। এ ধরনের কালেকশনকে ফ্যাশনিস্তারা বাহবা দিয়েছেন অদ্ভুত এবং অসাধারণ বলে। ব্যাকস্টেজের বদৌলতে জানা গেছে এ কালেকশনের বিষয়ে প্রাদা ব্র্যান্ডের ডিজাইনার টিমের মতামত। তারা মনে করেন, প্রত্যেক মানুষ নিজেই নিজের সুপারহিরো। তাই নিজেকে বিশেষ করে তুলবার আগ্রহকে সম্মান জানিয়ে নতুন সংগ্রহ নিয়ে এসেছে এই বিখ্যাত লেবেল।
মোসকিনো
মিলান ফ্যাশন উইকে ব্র্যান্ডটি তাদের সামার কালেকশন ২০২৫ এর দ্বিতীয় সংকলন প্রকাশ করে। এবারের নকশায় বেশ বেহিসেবি হয়েছে এই ব্র্যান্ড। অলংকরণে অক্ষরের ব্যবহারে বেশ কিছু কাজ দেখা গেছে। জাম্বো সাইজের টি-শার্টও দর্শকের মনোযোগ কেড়েছে। ইংরেজি ‘থিংক’ শব্দটির ব্যবহার ছিল ডিজাইনে। মানুষকে জীবন নিয়ে প্রশ্ন করার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে এই শব্দ ব্যবহার করে নকশা হয়েছে বলে জানা যায়। ক্রপড মোটরসাইকেল জ্যাকেট, লেদার স্কার্ট, ম্যাক্সি স্কার্টের পাশাপাশি আইওয়্যার, ব্রিফকেসের মতো অ্যাকসেসরিজও নিয়ে এসেছিল ব্র্যান্ডটি। এবারের কালেকশনে মোসকিনোর দর্শন ছিল ‘গেট হ্যাপি’।
ম্যাক্স মারা
ডিজাইনার ব্র্যান্ড ম্যাক্স মারা ওম্যান’স কালেকশন ছিল নজরকাড়া। নারীরাই ছিল এবারের কাজের অনুপ্রেরণা। চতুর্থ শতাব্দীতে আলেকজান্ডারের শাসনামলের গণিতবিদ হাইপেশিয়ার প্রতি সম্মান প্রদর্শিত হয়েছে এই সংগ্রহে। বিজ্ঞান এবং অঙ্কের সঙ্গে ফ্যাশনের মেলবন্ধনের চেষ্টার পষ্টতা ছিল কালেকশনজুড়ে। ‘সায়েন্স অ্যান্ড ম্যাজিক’ শিরোনামে। নকশায় কাপড়ের ভাঁজকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। প্রাধান্য পেয়েছে অরিগ্যামি স্টাইল।
গুচি
গুচির রানওয়েতে রঙের বিচিত্র খেলা নজর কেড়েছে। নিয়ন কালারের লেইস, বোল্ড প্রিন্টের হেডস্কার্ফ, মেটালের উপস্থিতি—সবই ছিল। একই সঙ্গে গাঢ় লালের ব্যবহারও দেখা গেছে। সার্কুলার রানওয়ে ব্যবহার করে সাজানো হয় রানওয়ে। সেখানেও ছিল অস্তগামী সূর্যের লাল আর হলুদে মিশে যাওয়া গেরুয়া রং।
ফেন্দি
এ বছর শতবর্ষ উদ্যাপন করছে ১৯২৫ থেকে যাত্রা শুরু করা শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডটি। মিলানের ফ্যাশন উইকে বিশাল এই মাইলস্টোন ছুঁয়ে দেওয়ার আনন্দ প্রকাশ করেছে লেবেলটি। ১৯২০ ও ১৯২৫ সালের প্রতি সম্মান প্রদর্শিত হয়েছে স্প্রিং সামার ২০২৫ সালের কালেকশনে। ড্রপড ওয়েস্ট ফ্রক, ফ্রিঞ্জ, নিটেড কো-অর্ডিনেটেড সেট, ছেলেদের শর্টসসহ অনেক কিছুই দেখা গেছে।
এই ফ্যাশন উইকের ডিজিটাল রানওয়ে শো ‘টেন্ড টু গেট ওভারলুকড’ অনুষ্ঠিত হয় ২৩ সেপ্টেম্বর। সেখানে বেশ কিছু নতুন মেধাবীকে খুঁজে পাওয়া গেছে। ব্র্যান্ড পেভ ৩৩, নিকোলা বাচিলেগা এবং ফ্রান্সিসকো মুরানো তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
তিনটি ফ্যাশন শোতেই উৎপাদন স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, টেকসই ও প্রকৃতিবান্ধব বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে। বাস্তবিকই এসব ধারণা ফ্যাশনের নতুন দিশা হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। নতুন নকশা, রঙের পাশাপাশি প্রকৃতিপ্রেমও ভাবাচ্ছে ফ্যাশনিস্তাদের। যার পষ্ট প্রমাণ মিলেছে প্রতিটি ফ্যাশন শোতে।
ছবি: ইন্টারনেট