ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাশন I প্যারিস ফ্যাশন উইক মেনজ-২০১৯
ডেনিম, উজ্জ্বল রঙ, ওয়ান পিস, ভ্যানিটি ব্যাগ—আপাতত এসবের ট্রেন্ড থাকবে সামনের দিনগুলোয়। এ ছাড়া ফিরে আসছে সত্তর দশকের বোহিমিয়ান ও ডিসকো স্টাইল। এবারের মেনজ ফ্যাশন উইকে মিলেছে সে ইশারা
গেল মাসের মাঝামাঝি প্যারিস ফ্যাশন উইক মেনজ-২০১৯-এ বিশ্বের বিখ্যাত সব ফ্যাশন ব্র্যান্ড পুরুষদের জন্য নতুন কালেকশন নিয়ে হাজির হয়েছিল ফ্যাশন ক্যাপিটাল প্যারিসে। এবারের রানওয়ে ভরপুর ছিল নানান চমকে। ছেলেদের পোশাকে ভিন্নতা আর নতুনত্বের দেখা মিলেছে ডিজাইনারদের সৃজনশীলতায়। উঠে এসেছে নতুন ট্রেন্ডও।
স্ট্রিটওয়্যার, ক্ল্যাসিক টেইলারিং তো ছিলই, ছিল রিসাইক্লিং টেক্সটাইল এবং প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি পোশাকের উপস্থিতি। কিছু নতুন ফ্যাশন ব্র্যান্ডের অভিষেকও হয়েছে এই ফ্যাশন উইকে। এ ছাড়া জনপ্রিয় ফ্যাশন ব্র্যান্ডের সঙ্গে কোলাবোরেশনের মাধ্যমে নিজেদের প্রথম মেনস ওয়্যার কালেকশনের উদ্বোধন করেন কয়েকজন জনপ্রিয় ফ্যাশন ডিজাইনার।
প্রথমে বলা যায় লইভের কথা। লইভের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর জোনাথন অ্যান্ডারসন ব্রিটিশ আর্টিস্ট হিলারি লয়েডের সঙ্গে জুটি বেঁধে ছেলেদের জন্য নিয়ে এসেছেন চোখধাঁধানো রঙিন সব পোশাক। অসাধারণ এই পোশাকগুলোর ফ্যাব্রিকেও ছিল নতুনত্ব; এসব সংগ্রহ করা হয়েছে বিভিন্ন দেশ থেকে। যেমন আফ্রিকার বুরকিনা ফাসো থেকে তাঁতে বোনা কাপড়, জাপান থেকে ডেনিম এবং বাংলাদেশের সুতি কাপড়। রানওয়েতে লইভের মডেলদের ভ্যানিটি ব্যাগ হাতে হাঁটতে দেখা গেছে; যা সবার চোখ কপালে তোলার জন্য যথেষ্ট ছিল।
বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার হেডি স্লিমেইন এবার ছেলেদের পোশাকে হাত লাগিয়েছেন। আর নিজের ব্র্যান্ড সেলিনের এই ফার্স্ট মেনজ কালেকশন তিনি উপস্থাপন করেন বছরের শুরুতে, প্যারিস ফ্যাশন উইক মেনজে। সবাই খুব পছন্দও করেছে। সেই ধারায় এবার তিনি উপস্থাপন করেন নতুন কালেকশন। স্লিমেইনের ক্যাজুয়াল কিন্তু যথেষ্ট এলিগ্যান্ট পোশাকগুলো সত্তর দশকের ডিসকো ভাইব অনুপ্রাণিত। ফ্লেয়ারড জিনস, বোম্বার জ্যাকেট, বাস্কেট ব্যাগ এবং এমব্রয়ডারির পাশাপাশি রানওয়েতে প্রাধান্য বিস্তার করে স্লিমেইনের সিগনেচার স্যুট। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে মডেলরা পরেছিলেন কনভার্স, জেলি শু এবং হাতে বোনা স্যান্ডেল; এই উপস্থাপনায় ফ্যাশনবোদ্ধারা বেশ অনুধাবন করেছেন আগামী বছর ছেলেদের ফ্যাশন হবে জাঁকালো, তবে আরামদায়ক।
ডিওরের ক্যাজুয়াল ও ফরমাল দুটি কালেকশনই ছিল অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন আর আভিজাত্যময়। কড়া নয় বরং প্রাধান্য পেয়েছে হালকা রঙের ব্যবহার। ক্যাজুয়াল পোশাকে ছিল হ্যান্ডপেইন্টেড কিমোনো প্রিন্ট ও এমব্রয়ডারি। রোশাসের কালেকশনগুলো ছিল খুবই সাধারণ কিন্তু রঙিন। প্যাস্টেল কালারের ব্যবহারই পোশাকগুলোকে করে তুলেছে সহজ অথচ অসাধারণ। সত্তরের বোহিমিয়ান ধারায় প্রাণিত এই কালেকশন অবশ্যই সবার মন ভরিয়েছে।
লুই ভিতোঁর এবারের থিম ছিল ফ্লাওয়ার প্রিন্ট। ফ্লোরাল প্রিন্ট এবং বুনো ফুলের ব্যবহার করা হয় সিল্কের ব্যাগ ও হ্যাটে। মিশ্র রঙের ট্রাউজারের সঙ্গে মডেলরা পরেছিলেন টেইলরড জ্যাকেট ও স্পোর্টসওয়্যার। এবারের লুই ভিতোঁর রানওয়েতে মডেলদের সঙ্গে হাঁটেন আর্সেনালের ফ্যাশনেবল ফুটবলার হেক্টর বেলেরিন। তিনি পরেছিলেন গোলাপি শর্টস ও হুডি।
বিখ্যাত ফ্যাশন ব্র্যান্ড এরমেসের কালেকশনকে বলা হচ্ছে রিলাক্স লাক্সারি। এর মূল আকর্ষণ ছিল ঢিলেঢালা ট্রাউজার। সঙ্গে যোটক হয়েছে বিভিন্ন ধরনের শার্ট, লাক্সারিয়াস বোম্বার জ্যাকেট, সোয়েটার ও নজরকাড়া ব্লেজার। এই সংগ্রহ দেখে কখনো মনে হয়েছে আতিশয্য আবার কখনো খুব সাধারণ। তবে জুতা ও ব্যাগের উপস্থিতি ছিল চমকপ্রদ। এবারের ফ্যাশন উইক থেকে যেসব ট্রেন্ড আগামী বছর বেশি দেখা যাবে, সেগুলো হচ্ছে ডেনিম, উজ্জ্বল ও কড়া রঙের ব্যবহার, ছেলেদের স্কার্ট, ওয়ান পিস ড্রেস এবং ভ্যানিটি ব্যাগের মতো বিচিত্র ব্যবহার্য। এ ছাড়া ফিরে আসছে সত্তর দশকের বোহিমিয়ান এবং ডিসকো ভাইব স্টাইল।
ফাহমিদা শিকদার
ছবি: ইন্টারনেট
very informative