সম্পাদকীয়
দেখতে দেখতে ফুরিয়ে আসছে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের আরেকটি বছর। এই মাস বিচিত্র হিসাব-নিকাশে জড়িয়ে থাকে। পুরো বছরে আমাদের অর্জন কী, বিসর্জনই-বা কতটা—এমন রিভিউ চলে। কিন্তু আমরা একটা হিসাব এড়িয়ে যাই অগোচরে—তা হলো, মানুষ হিসেবে নিজেদের কতটুকু এগিয়ে নিতে পেরেছি! এই যে ফিলিস্তিনি শিশুদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সৈন্যরা, তাতে ব্যথিত হলেও কতটাই-বা সরব হয়েছি কিংবা বিশ্ববিবেককে জাগানোর চেষ্টা করেছি। এটা ঠিক, পৃথিবীর সবাই সারা বছর সমান ভালো থাকে না। অন্যদিকে, যারা বিপন্ন, তাদের জন্য কিছু করে ওঠা সবার পক্ষে সব সময় সম্ভব হয় না। কিন্তু বিপন্নদের রক্ষায় সরব হতে না পারলে নিজের বিবেকের কাছে অপরাধী হয়ে থাকতে হয়। আত্মা অপরিশুদ্ধ রয়ে যায়।
এবারের ক্যানভাসে যথারীতি শীতের আয়োজন। কভারস্টোরি ‘উইন্টার নস্টালজিয়া’। মৌসুমটি আয়েশি যাপনের, স্বজন-সান্নিধ্যে কাটানোর। কত উপলক্ষ ভিড় করে থাকে এ সময়! কিন্তু খানিক অবসরে মন চলে যায় অতীতের দিনগুলোয়। প্রতিভা বসুর ভাষায়, ‘স্মৃতি সতত সুখের।’ পাঠকের মনে তা সঞ্চার করতে চেয়েছি আমরা, প্রচ্ছদকাহিনির মাধ্যমে।
দেশীয় ডিজাইনারদের শীতপোশাক নিয়ে এবারের পোর্টফোলিও। হিমজড়ানো ধূসর প্রকৃতিকে রঙের দীপ্তিতে উষ্ণ আর উজ্জ্বল করে তোলার অভিপ্রায় ব্যক্ত হয়েছে এই কালেকশনের মধ্য দিয়ে। আর ডেনিম নিয়ে যে রচনা সচিত্র প্রকাশ করা হলো, তাতে ফ্যাশনে দায়বদ্ধতার দিকটি বিশেষভাবে উন্মোচিত। দুনিয়াজুড়ে যা একরকম আন্দোলনে রূপ নিচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে, ফ্যাশনপ্রেমীরাও পরিবেশ ও প্রাণবান্ধব পৃথিবী গড়ে তুলতে চান। এটা আশাব্যঞ্জক।
শীত এলেই উৎসবের ধুম পড়ে যায়। পার্টি তো লেগেই থাকে। নিমন্ত্রণ পাবেন, অংশ না নিলে কি চলে? সে জন্য তো নিজেকে সাজাতে হবে। কীভাবে? জবাব পাবেন চারটি লুক নিয়ে এবারের আয়োজন থেকে।
বাঁশের কোড়লে তৈরি খাবার একসময় কেবল পাহাড়িরাই খেত; এখন এটি সমতলের ভোজনরসিকদের মধ্যেও সমাদর পাচ্ছে। আরও সুস্বাদু করে তুলতে খাবারটি নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট কম হচ্ছে না। এরই নমুনা হিসেবে আপনাদের জন্য থাকছে বাঁশের কোড়লের পাঁচটি পদ। শীতের ডাইনিং আশা করি উপভোগ্য হবে।
দুটি বিয়োগান্ত ঘটনা আমাকে ব্যথিত করেছে। বিশিষ্ট চিত্রকর কালিদাস কর্মকার এবং কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইন আমাদের মাঝে নেই। বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও সৃষ্টিশীলতায় উভয়ের অবদান অসামান্য। তাঁদের কর্ম ও স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।
ভালো থাকুন সবাই।