সম্পাদকীয়
শিল্পকলার যত শাখা রয়েছে, সংগীত সেগুলোর মধ্যে মানুষের সবচেয়ে কাছাকাছি। এটি আমাদের অনুভূতির জগৎকে নানা রকমের প্রসারতা দেয়। আমার কাছে তো সংগীত মানেই স্মৃতিজাগানিয়া। এমন সব গান রয়েছে, যেগুলো শোনামাত্রই কৈশোরে ফিরে যাই। সেই প্রত্যাবর্তনের আরেকটি অর্থ হচ্ছে তখনকার যাপনচিত্রটি আরেকবার নিজের মতো করে দেখা। তাই একেকটি গান শেষ পর্যন্ত একেকটি সময়। এখনকার গান যেমন বছর দশেক পরে শুনলে সে রকম একটা মূল্যায়নের সুযোগ আমাদের সামনে হাজির হয়ে যাবে।
এত কথা বলার কারণ, এবার আমরা সংগীত নিয়ে ক্যানভাসের ডিসেম্বর সংখ্যা প্রকাশ করেছি। তা ছাড়া মাসটি তো নানা দিক থেকে উৎসব ও উদযাপনেরই। বিজয়ের আনন্দে তো বটেই, সারা দেশে, বিশেষত বড় বড় শহরের একেকটি ভেন্যু শিল্পী ও দর্শক-শ্রোতাদের সমাগমে রঙিন হয়ে ওঠে। যদিও সময়টি এখন সামাজিক দূরত্বের, তথাপি সংগীতের সৌন্দর্য অনুভবের জন্য স্থান কোনো বিষয় নয়। ঘরে বসেই মোবাইলের পর্দায় আজকাল যেকোনো দেশের কনসার্ট উপভোগ করা যায়। গান কেবল আমাদের বিনোদনের উৎসই নয়, শরীরের সুস্থতা ও সৌন্দর্যচর্চার অনুষঙ্গ হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে।
সংগীতের এই বৈচিত্র্য ও বিচিত্রমুখিতার ভাবনা থেকে বর্তমান সংখ্যায় স্থান পেয়েছে বিশেষ কিছু রচনা। মিউজিক কীভাবে ফ্যাশনকে প্রভাবিত করে, সৌন্দর্যবিশ্বে সংগীতশিল্পীদের আইকন হয়ে ওঠার গল্প, তাদের বিউটি ব্র্যান্ড, ষড়রাগের ফ্যাশন যেমন রয়েছে; তেমনি আছে মেকআপে মিউজিকের প্রভাব, কণ্ঠস্বর ভালো রাখার খাদ্য, শারীরিক সুস্থতায় মিউজিক থেরাপি ইত্যাদি। তা ছাড়া সংগীত নিয়ে নতুন প্রজন্মের নানান ভাবনা, তাদের গঠিত ব্যান্ড, নতুন ট্রেন্ডের মিউজিক, পারিবারিক পরম্পরায় যারা যুক্ত হয়েছেন গানের চর্চায়- সেসব বিষয়ের প্রতিও দৃষ্টি দিয়ে সাজানো হয়েছে সংখ্যাটি।
তবে সংগীত কেবল শ্রুতিকেই সুখ দেয় না, আমাদের অনুভূতি ও চৈতন্যকেও জাগিয়ে তোলে। গান কীভাবে ব্যক্তিকে সংবেদনশীল করে- এসব প্রসঙ্গ নিয়ে রয়েছে কভারস্টোরি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। এ ছাড়া আছে প্রাসঙ্গিক ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু নিবন্ধ।
সবাইকে বিজয়ের মাসের শুভেচ্ছা।