skip to Main Content

ফিচার I মেকআপ ব্লেন্ডিং

মুখমন্ডল সাজিয়ে তোলার জন্য। কিন্তু ত্বকে সব সৌন্দর্যসামগ্রী সমানভাবে কাজ করে না। ধরন বুঝে ব্লেন্ডিংয়ের নিয়ম মেনে চলা চাই

মুখে সেরাম মাখানো, ময়শ্চারাইজার ম্যাসাজ, এসপিএফ ঠিকঠাক ত্বকের সঙ্গে মেশানো হয়েছে, কিন্তু কিছুক্ষণ পর দেখা গেল, মেকআপ উঠতে শুরু করেছে। এর কারণ, তা মুখের সঙ্গে সঠিকভাবে ব্লেন্ড হয়নি। অনেকেরই মেকআপের ক্ষেত্রে এটি দৈনন্দিন বিপর্যয়। এমনটা ঘটলে তাড়াহুড়ার মধ্যে মেকআপ ঠিক করার সময়ও পাওয়া যায় না। এই সমস্যা এড়ানোর উপায় আগে থেকেই জেনে রাখা ভালো।
তেল আর জলের মিশ্রণ
এ দুটি উপাদান কখনোই মেশে না। আর সেটাই মেকআপের মাধ্যমে চেষ্টা করা হলে তা কখনোই সম্ভব নয়; অয়েল-বেজড প্রাইমার আর ওয়াটার-বেজড ফাউন্ডেশনের কথা বলা হচ্ছে। এ দুটো মুখে পরপর ব্যবহার করা হলে কোনোটাই ঠিকভাবে ব্লেন্ড হবে না। তাই মুখে ওয়াটার-বেজড মেকআপগুলো আগে মাখাতে হবে। কারণ, এগুলো তাড়াতাড়ি ত্বকের সঙ্গে মিশে যায়।
পরিমাণ বুঝে নেওয়া
মেকআপ ঠিক যতটা দরকার, ততটুকুই মুখে অ্যাপ্লাই করতে হবে। বেশি ব্যবহার করলে যে মেকআপ ভালো হবে, এমনটা নয়। তাই কোন মেকআপ কতটুকু প্রয়োজন, ত্বকের ধরন বুঝে এবং পণ্যের গায়ে লেখা নির্দেশ অনুযায়ী আগে জেনে নিতে হয়।
মেকআপ প্রয়োগে মনোযোগ
সেরাম আর ময়শ্চারাইজারের মতো সিলিকনযুক্ত মেকআপ ঘষে ঘষে না মাখিয়ে বরং আঙুল কিংবা বিউটি স্পঞ্জ দিয়ে প্যাট বা প্রেস করে মাখালে এগুলো মুখের সঙ্গে তাড়াতাড়ি ব্লেন্ড হবে।
ফাউন্ডেশন মাখানোর সময়
ত্বক আর্দ্র থাকলে ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করা সহজ হয়। সাধারণত মুখে যতটা ময়শ্চারাইজারের দরকার, ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করার সময় সেই পরিমাণটা দ্বিগুণ করে নিতে হবে। ক্রিম মাখার মতো করে ফাউন্ডেশন দেওয়া যাবে না। সারা মুখে ফোঁটা ফোঁটা ফাউন্ডেশন মাখিয়ে আঙুলের ডগা দিয়ে, অথবা স্পঞ্জের সাহায্যে ত্বকে চেপে চেপে মেখে নিতে হবে। তাতে মেকআপের ভালো বেইজ তৈরি হয়। তাড়াহুড়ো নয়, সময় নিয়ে ব্লেন্ড করতে হবে। এতে ছোপ ছোপ ভাবটা থাকবে না।
হাইড্রেটিং ক্রিম ব্যবহার
মেকআপ করার আগে মুখে ও গলায় ভালোভাবে ময়শ্চারাইজার বা হাইড্রেটিং ক্রিম মাখতেই হবে। এতে ত্বক আর্দ্র থাকে। ফলে মেকআপ ব্লেন্ডিংয়ে সুবিধা হয়, সেটও ভালো হয়।
কনসিলার এবং কমপ্যাক্ট পাউডার
মুখের দাগছোপ, চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল, লালচে ছোপ ইত্যাদি লুকোনোর জন্য কনসিলার ব্যবহার করা হয়। এমনকি, ব্রণও ঢাকা পড়ে যায় কনসিলারে। লুজ পাউডারের চেয়ে কমপ্যাক্ট পাউডার বেশিক্ষণ থাকে এবং মসৃণ ফিনিশ দেয়। মেকআপ রিটাচ করার জন্য কমপ্যাক্ট পাউডার সঙ্গে রাখতে হবে। এতে দ্রুত মেকআপ রিটাচ করা যাবে। মেকআপ চড়া হয়ে গেলে কিছুটা রিমুভের জন্য টিস্যুও ব্যবহার করা যেতে পারে।
এক্সফোলিয়েশন
পরিষ্কার ত্বকের জন্য এক্সফোলিয়েশন দরকার। তৈলাক্ত বা শুষ্ক হোক, সুস্থ ত্বকের জন্য নিয়মিত এক্সফোলিয়েট করতে হবে। এতে ত্বকের ময়লা ও জীবাণু গভীর থেকে দূর হয়। শুষ্ক ত্বকে মেকআপ একেবারেই বসতে চায় না। তাই মেকআপ করার আগে ত্বকের হাইড্রেশন জরুরি। কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর এ ক্ষেত্রে কাজে আসতে পারে।
বেশি ব্রোঞ্জারে বিপত্তি
মুখের সেই সব অংশেই ব্রোঞ্জার মাখানো হয়, যেখানে সরাসরি সূর্যের আলো পড়ে। যেমন- কপাল, গালের ওপরের হাড়, নাক। ভুরুর ওপরে দুপাশে বুলিয়ে নিতে হবে ব্রোঞ্জারের ব্রাশ। সারা মুখে কখনো ব্রোঞ্জার একেবারেই নয়।
অতিরিক্ত পাউডার নয়
লিকুইড মেকআপ সেট করা বা মুখের তেলতেলে ভাব কাটাতে পাউডার খুবই কাজের জিনিস। কিন্তু বেশি ব্যবহারে মুখ ছাই ছাই দেখাবে, মেকআপও প্যাচি লাগবে। তাই আন্দাজ করে পাউডার ব্যবহার করা দরকার।
বিউটি ব্লেন্ডার
মেকআপ ত্বকের সঙ্গে ব্লেন্ড করতে এখন সর্বাধিক জনপ্রিয় পণ্য। বিউটি ব্লেন্ডার ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবার প্রথম ভুলটি হচ্ছে, ব্লেন্ডারটি না ভিজিয়েই ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করা। এ জন্য প্রথমে ব্লেন্ডার ভিজিয়ে নিয়ে চাপ দিয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। বিউটি ব্লেন্ডার না ভেজালে এটি ত্বকে মাখানো ফাউন্ডেশন শুষে নেবে। আবার এটাও খেয়াল রাখতে হবে যে ব্লেন্ডারে যেন অতিরিক্ত পানি না থাকে, তাহলে মুখে প্যাচি লুক এনে দেবে।
ফেস মিস্ট
পুরো ফাউন্ডেশন মাখানো হয়ে গেলে ত্বকে ফেস মিস্ট স্প্রে করে নিতে হবে। তারপরে বাতাসে একটু শুকিয়ে নিতে হয়। এতে মুখের মেকআপ দীর্ঘস্থায়ী হবে। ত্বকও স্বাভাবিক দেখাবে।

 সুরবি প্রত্যয়ী
মডেল: নাজিয়া
মেকওভার: পারসোনা
ওয়্যারড্রোব: তেহজীব
ছবি: তানভীর খান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top