ডিজাইনার পোর্টফোলিও I ফারিয়া মেহমুদ
উদীয়মান পাঁচ ডিজাইনার। বয়সে নবীন, আপন আলোয় সপ্রতিভ। তারই সুস্পষ্টতা প্রত্যেকের সৃষ্টিতে। যা দেশীয় ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির চিরচেনা রূপ পাল্টে দিতে যথেষ্ট। ভিন্নতর ভাবনার, পরীক্ষাপ্রাণিত সব পোশাক নিয়ে ইতিমধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন আধুনিক ও সমকালীন মননের ফ্যাশন-সচেতন মানুষদের কাছে। গড়ে তুলেছেন নিজস্ব ফ্যাশন লেবেল। তৈরি হয়েছে ক্লায়েন্টটেল। ক্রেতা থেকে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি—সর্বত্র এদের জনপ্রিয়তার কারণ খুঁজেছেন জাহেরা শিরীন। সঙ্গে তাদের তৈরি সেরা আউটফিট নিয়ে এই পোর্টফোলিও
মডেল: ইন্দ্রানী, আরনিরা, আনসা ও অন্তরা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: জিয়া উদ্দীন
ফারিয়া মেহমুদ
মুক্তা
স্টোরিটেলিং থ্রু ফ্যাশন—দেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে এ প্রথার আপোসহীন চর্চা করে থাকে ব্র্যান্ড ‘মুক্তা’। প্রতিষ্ঠাতা, ডিজাইনার ফারিয়া মেহমুদের প্যাশন প্রজেক্ট। স্থাপত্যে পড়াশোনা। সেই সুবাদেই সৃজনশীলতার চর্চা আর ভিন্নতর চিন্তার সুযোগ মেলে। মায়ের মাধ্যমেই মাসিওর ডিওর, জিভাঁশি, কোকো শ্যানেলের কাজ সম্পর্কে জানতে শুরু করেন ফারিয়া। ফ্যাশনের প্রতি প্রবল ঝোঁক মায়ের অনুপ্রেরণাতেই। সেই সঙ্গে কনসেপ্ট ড্রিভেন, স্টোরিটেলিং ফারিয়ার প্যাশন। ব্র্যান্ডের পরিকল্পনা সে সূত্রেই। এ দুয়ের মিশেলে। নাম বাছাইয়ের সময় একটা বাংলা শব্দ খুঁজছিলেন। বিশ্বজুড়ে যখন সবাই ব্র্যান্ডের নাম জানবে, তখন সবার মুখে মুখে থাকবে বাংলা শব্দ, সেটাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। এমন একটা নাম যা নারীদের গল্প বলবে—সাহসী নারীদের, অভিজাত নারীদের। একটা শব্দেই নারীর ভেতরকার সৌন্দর্য প্রকাশিত হবে। সে ক্ষেত্রে পার্লটাই মাথায় আসে সবার আগে। বাংলার মুক্তা। ফারিয়ার মায়ের নামও মুক্তা। ব্যস! ফারিয়ার কাছে মা-মেয়ের সম্পর্ক উদযাপনের দারুণ পথও হয়ে যায়। ২০১৬ থেকে পরিকল্পনা শুরু হলেও মুক্তার পর্দা ওঠে ২০২০-এর ডিসেম্বরে। প্যানডেমিকের মাঝে। কিন্তু চমৎকার সব কনসেপ্টের ভিত্তিতে তৈরি মুক্তার একেকটি কালেকশন প্রথম থেকেই নজর কাড়ে সৌন্দর্যসচেতনদের।
সবার থেকে আলাদা কিছু করার প্যাশন প্রতিফলিত হয় ফারিয়ার কাজে। কারণ, প্রতিটি পণ্যে জড়িয়ে থাকে সৌন্দর্যানুভূতি আর অভিনব সব গল্প। বহুমাত্রিক ও বৈচিত্র্যপূর্ণ কালেকশনে সমৃদ্ধ মুক্তা। সোর্স করা নয়, ব্র্যান্ডটির প্রতিটি পোশাকের কাপড় বিশেষভাবে কাস্টম উইভড করে নেন ফারিয়া। গয়না তৈরির ক্ষেত্রেও বিশেষ মনোযোগী তিনি। নকশাগুলো হাতে এঁকে নেওয়া হয় প্রথমে, তারপর পর্যায়ক্রমে টু ডি আর থ্রি ডি ইমেজ ক্রিয়েট করার পর তৈরি হয় মোল্ড। তারপর গড়ানো হয় একেকটি কাস্টম পিস। প্রতিটির ফিনিশিং বিশ্বমানের। ব্যবহার করা হয় খাঁটি মুক্তা আর সোয়ারভস্কি স্টোন। যার যথার্থতা প্রমাণের জন্য প্রতিটি অনুষঙ্গ আর গয়নায় ব্র্যান্ডটির লোগো এমবোস করা হয়। দেশে প্রথমবারের মতো এ প্রথা চালু করেন ফারিয়া। মুক্তার ডিজাইনিং, ক্রিয়েটিভ, ব্র্যান্ডিং—সবেতেই ফারিয়ার স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি। তবু এতটুকু ক্লান্তি নেই কাজে; বরং প্রতিনিয়ত প্যাশন নিয়ে কাজ করতে পারেন বলে নিজেকে সৌভাগ্যবানই মনে করেন। ফারিয়ার মত, ইজ ইট রিয়েলি ওয়ার্ক হোয়েন ইউ লাভ ইট সো মাচ!