skip to Main Content

ফিচার I হোক হাতেই

দীর্ঘ সময় কাপড়ের কোয়ালিটি রক্ষায়। পানির অপচয় রোধেও ফলপ্রসূ। তাই মাঝেমধ্যে ম্যানুয়ালি পুরো প্রক্রিয়া সারা হলে মন্দ হয় না

নিত্যদিনের দৌড়ঝাঁপে সামান্য সময় বাঁচানোর চেষ্টাতেই কাপড় কাচতে এখন যন্ত্রের প্রতি ঝোঁক বাড়ছে। ঘরে ঘরে ওয়াশিং মেশিনের উপস্থিতিতে মিলছে প্রমাণ। অনেকে তো লন্ড্রিতে কাপড়ের স্তূপ পৌঁছে দিয়েই দায়িত্ব সেরে ফেলেন। ধোপাখানায় ধুয়ে, ইস্ত্রি করে সেই কাপড় আবার পৌঁছে যায় গ্রাহকের হাতে। অনেকের আবার ড্রাই ক্লিনিংয়েই ভরসা। কিন্তু অত অপশনের মাঝেও কাপড় হাতে ধোয়ার কদর কি কমেছে? এখনো কাবার্ডের সবচেয়ে ডেলিকেট পোশাকের ট্যাগে হাতে ধোয়ার নির্দেশনাই বেশি চোখে পড়ে। শুধু তা-ই নয়, কাপড় বাঁচানো, পানি বাঁচানো এবং ধোপাখানায় যাওয়ার ঝামেলা থেকে বাঁচার সেরা উপায় হলো হাতে কাপড় ধোয়া।
উপকারিতা
হ্যান্ড ওয়াশিং কাপড়ের দীর্ঘস্থায়িত্ব নিশ্চিত করে। যদিও ওয়াশার ও ড্রায়ারকে মডার্ন মিরাকল মনে করা হয়, যা অনেকখানি সময় বাঁচিয়ে দেয়। কিন্তু এগুলো পোশাকের জন্য সব সময় সেরা বিকল্প নয়। ওয়াশার ও ড্রায়ারে কাপড় যেভাবে নাড়াচাড়া হয়, তাতে কিছু পোশাকের আকৃতি নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েই যায়। উপরন্তু তাপে ডেলিকেট পোশাকের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
কোনো ইভেন্টের জন্য বিশেষ পোশাক প্রয়োজন, কিন্তু এই একটা কাপড়ের জন্য ওয়াশার ব্যবহার করে প্রচুর পানি নষ্ট করতে না চাইলে হাতে ধুয়ে নেওয়াটাই সবচেয়ে ভালো উপায়। এ ছাড়া হ্যান্ড ওয়াশিং কাপড় নষ্ট না করেই জেদি দাগ তুলতে সাহায্য করে।
যেকোনো কাপড়ই হাতে ধুয়ে নেওয়া যায়। তবে আন্ডারগার্মেন্টস, বেদিং স্যুট, লেস, উলের পোশাকসহ ডেলিকেট কাপড়গুলো সব সময় হাতে ধোয়ারই পরামর্শ দেওয়া হয়। তার আগে পোশাকের সঙ্গে থাকা লেবেল ট্যাগটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে নিতে হবে। সঠিক নিয়মে পোশাক পরিষ্কার করে নেওয়ার জন্য।
পুরো প্রক্রিয়া
হাতে কাপড় ধোয়া? সে তো সহজ ব্যাপার। তবে সামান্য হেরফেরে আর অসাবধানতায় অতি পছন্দের পোশাকের বারোটা বেজে যেতে পারে। তাই হাতে কাপড় ধোয়ার কিছু ধারাবাহিক নিয়ম রয়েছে, যা পোশাক ঠিকঠাকভাবে পরিষ্কার করে নিতে সাহায্য করবে।
 প্রথমেই দাগের দিকে মনোযোগ রাখতে হবে। কাপড়ে যদি কোনো দাগ থাকে, ধোয়ার আগেই সেটা ওঠানোর ব্যবস্থা করে নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে রেগুলার স্পট রিমুভার বা স্টেইন ট্রিটমেন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, দাগ ওঠাতে গিয়ে সূক্ষ্ম ও কোমল কাপড় যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এ বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। দাগ ওঠাতে কার্যকর হলেও এ কাজে ডিটারজেন্ট ও ক্লিনার ব্যবহারে উৎসাহিত করা হয়। এতে দাগও ওঠে, সেই সঙ্গে কাপড় ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও কমে।
 স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে লন্ড্রি ডিটারজেন্ট দিতে হবে প্রথমে। হাতের সাহায্যে পানির সঙ্গে ডিটারজেন্ট ভালোভাবে মেশাতে হবে।
 যে পোশাকগুলো ধোয়া হবে, সেগুলো এই পানিতে ছেড়ে দিতে হবে। তারপর হাত বা ওয়াশ ওয়ান্ড দিয়ে কাপড়গুলো ভালো করে নেড়েচেড়ে দিতে হবে। তবে খুব বেশি ঝাঁকানোর প্রয়োজন নেই। পোশাক ত্রিশ মিনিটের বেশি ভিজতে দেওয়া উচিত নয়, এতে বিশেষ করে সিল্কের পোশাক সংকুচিত হতে শুরু করে।
 একটি সাধারণ ভুল হলো, পানির কলের নিচে কাপড় ধুয়ে ফেলা। এটি পোশাকের জন্য মোটেই ভালো নয়, বরং ক্ষতিকর। কেননা প্রবাহিত পানি কাপড়ের আকার নষ্ট করে দিতে পারে। তার বদলে, বালতি বা গামলায় কাপড় রাখতে হবে। তারপর কলের স্প্রেয়ার সেটিং চালু করে বালতিতে রাখা কাপড়ের মধ্যে ঠান্ডা পানি স্প্রে করে ধুয়ে নিতে হবে।
 এবার শুকানোর পালা। বাড়তি পানি ঝরিয়ে নেওয়ার সময় পোশাক মোচড়ানো বা নিংড়ানো যাবে না। এতে পোশাক তার আকৃতি হারিয়ে ফেলে এবং ফ্যাব্রিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই কাপড় ধোয়ার পর শুকানোর জন্য আলতোভাবে চেপে চেপে পানি ঝরিয়ে নিন। এ ছাড়া একটি শুকনো টাওয়েলের ওপর ভেজা পোশাক রেখে দেওয়া যায় বাড়তি পানি শুষে ও শুকিয়ে নিতে। মনে রাখতে হবে, শুকানোর জন্য কাপড় সব সময় সমতলে রাখা উচিত। ঝুলিয়ে বা ড্রায়ারে রাখা যাবে না। কারণ, এতে পোশাক তার আকৃতি হারাতে কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। দ্রুত শুকানোর জন্য এগুলো ড্রায়িং র‌্যাকে রেখে দেওয়া ভালো।

 তাসমিন আহমেদ
মডেল: মিলি
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: হাদী উদ্দীন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top