skip to Main Content

ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাশন I অভিধান আখ্যান

শুধু ট্রেন্ড নয়, আয়ত্তে থাকা চাই ফ্যাশনের নানান টার্মও। তবেই না হয়ে ওঠা যাবে পুরোদস্তুর ফ্যাশনিস্তা

ভাষা। মনের ভাব প্রকাশ করার মাধ্যম। শব্দ দিয়ে যার শুরু। নানান বর্ণ মিলে তৈরি হয় এক একটি শব্দ। আবার সেই শব্দগুলো পাশাপাশি বুনে হয় লাইন। প্রকাশিত হয় ভাষা, মনের কোণের কথা। কখনো সুমিষ্ট, কখনোবা সুকঠিন। দেখে, শুনে, পড়ে তবেই বুঝে নিতে হয়। ফ্যাশন নিয়ে যারা সচেতন, যারা ভালোবাসেন ফ্যাশনের দুনিয়াতে বেঁচে থাকতে, তারা এই প্রিয় বিষয় প্রকাশ করতে গিয়ে কিছু শব্দ ব্যবহার করেন। এগুলোর সব কটি গণমানুষের কাছে আলাদা করে পরিচিত নয়। আবার কিছু শব্দ খুব চেনা; প্রায়ই শোনা যায় মানুষের মুখে, অথচ ফ্যাশন দুনিয়ায় সেই শব্দের অর্থ বদলে যায়।
ফ্যাশনের মাধ্যমে প্রকাশিত হয় জীবনযাপনের মন-কথন। একটার পরে একটা অক্ষর বসে তৈরি করে শব্দ। ফ্যাশন-স্টাইল-ট্রেন্ড প্রকাশিত হয় শব্দে, কখনোবা বাক্যে। ফ্যাশন ভোকাবুলারির শব্দগুলো একদম যে অচেনা অথবা নতুন, তা কিন্তু নয়; বরং চেনা শব্দগুলোই ভিন্ন অর্থে সামনে ঘুরে বেড়ায়।
ফ্যাশন এলিটদের কথায় খুঁজে পাওয়া যায় ফ্যাশন জারগন। এগুলোর মধ্যে খানিকটা টেকনিক্যাল হয়ে থাকে কিছু শব্দ। দেশি-বিদেশি ফ্যাশন ব্লগে নানান রকম কনটেন্ট এখন খুবই মামুলি বিষয়। ক্রেতা আকর্ষণে দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোর অফিশিয়াল পেজেও দেখা যায় এ ধরনের এনডোর্সমেন্ট। বর্তমানে নতুন পেশা হিসেবে দারুণ সমাদৃত ফ্যাশন ইনফ্লুয়েন্সিং। ইনফ্লুয়েন্সারদের লাইভ কিংবা ভিডিও কনটেন্টে ভাব প্রকাশের জন্য ব্যবহার করা হয় ভাষা। সেখানে পোশাক, জুয়েলারি, চলতি ট্রেন্ড নিয়ে কথা বলেন সংশ্লিষ্টরা। ভাষার সঠিক ব্যবহারের অভাবে বাক্যের অর্থ বদলে যাওয়া খুব সহজ একটি বিষয়। ভুল উচ্চারণ কিংবা শব্দের ভুল প্রয়োগে পুরো কনটেন্ট ভুলভাবে প্রকাশিত হতে পারে। ভাষা নিয়ে তাই সচেতনতা আবশ্যক। এ জন্য ফ্যাশন অভিধান নিয়ে সম্যক জ্ঞান থাকা খুবই জরুরি।
ফ্যাশন কনটেন্টে নিয়মিত শোনা যায় ‘কালেকশন’ শব্দটি। ফ্যাশন ডিকশনারিতে এর অর্থ, একটি নির্দিষ্ট থিমে নকশা করা এক সেট পোশাক। একটি সিঙ্গেল ক্লদিং আইটেমের ব্যাখ্যায় তাই কালেকশন শব্দটি কার্যকর নয়। ফ্যাশন ডিজাইনার তার গবেষণা ও সৃজনশীলতার মাধ্যমে একটি কালেকশন তৈরি করতে পারেন। এর মতোই এমন আরও অনেক শব্দ রয়েছে, যা ফ্যাশন বিশ্বে প্রচলিত। অপরিহার্যও বটে। ফ্যাশন ফান্ডামেন্টাল মেনে এগুলোর অর্থ জানা থাকা জরুরি।
i অ্যাকসেসরিজ: পোশাকের সঙ্গে প্রয়োজনীয় অন্য যেকোনো সরঞ্জাম। হতে পারে, জুতা, হ্যাট, জুয়েলারি, নেকওয়্যার, বেল্ট, লঞ্জেরি। অ্যাকসেসরিজ মূল পোশাককে আরও সুন্দর করে উপস্থাপনে সাহায্য করে। ভ্যালু অ্যাড করে।
i অ্যাসিড ওয়াশ: এই শব্দ প্রচলিত পোশাকের ফ্যাব্রিকের বিস্তারিত বর্ণনার ক্ষেত্রে। মূলত পোশাকে ব্লিচ ব্যবহার করে রঙের উজ্জ্বলতা কমানোর প্রক্রিয়াকে অ্যাসিড ওয়াশ বলা হয়।
i একাডেমিক কস্টিউম: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য ব্যবহৃত পোশাক একাডেমিক কস্টিউম নামে পরিচিত। ছাত্র ও শিক্ষক—উভয়ের পোশাকই এই ক্যাটাগরিতে আসতে পারে।
i অ্যাকটিভ স্পোর্টস ওয়্যার: খেলাধুলা, জিমসহ নানা রকম ফিজিক্যাল অ্যাকটিভিটির জন্য তৈরি পোশাক এগুলো। ফ্যাশনের এই টার্ম মূলত স্পোর্টসম্যানদের পোশাক থেকে অনুপ্রাণিত।
i অ্যাক্রোমেটিক কালার: সাদা-কালোর বাইরে আর কোনো রঙের উপস্থিতি না থাকলে সেটিকে অ্যাক্রোমেটিক কালারের পোশাক বলা যেতে পারে।
i অ্যাডাপ্টেশন: পোশাকের পরিচিত নকশায় নতুন কিছু যোগ করে ভিন্ন ডিজাইন সৃষ্টি করার প্রক্রিয়াকে অ্যাডাপ্টেশন বলা হয়। এই সংযোজন প্রধানত আলংকারিক নকশার জন্য ব্যবহার করা হয়।
i অ্যাডভান্সড কালার: উজ্জ্বল লালের মতো উষ্ণ রংগুলোকে এই তালিকায় রাখা যায়। শীতল নয়; চকচকে, ঝকঝকে রংগুলো এই ক্যাটাগরিতে পড়বে।
i অ্যান্ড্রোজেনাস স্টাইল: ইউনিসেক্স ফ্যাশনের সঙ্গে বেশ মিল আছে অ্যান্ড্রোজেনাস টার্মটির। এটি এমন ধরনের ড্রেসিং স্টাইল, যা দেখে পরিধানকারীর লিঙ্গ নির্ধারণ কঠিন। খুব বেশি ফেমিনিন বা ম্যাসকুলিন হয় না এই স্টাইল। অর্থাৎ নারী কিংবা পুরুষ উভয়ই পরে নিতে পারবেন এই পোশাকগুলো।
i অ্যানিমে: অ্যানিমেশনের শর্ট ফর্ম ‘অ্যানিমে’। জাপানের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির তৈরি অ্যানিমেটেড মুভিগুলোতে দেখানো চরিত্রদের পোশাক অ্যানিমে ফ্যাশন হিসেবে পরিচিত।
i অ্যান্টি ফ্যাশন: এই সময়ের প্রচলিত ফ্যাশনের বাইরে গিয়ে নিজস্ব স্টাইলের পোশাক, জুয়েলারি, হেয়ার ডু তে সেজে ওঠাকে অ্যান্টি ফ্যাশন বলা হয়। এর আরও কিছু সমার্থক শব্দ প্রচলিত আছে। যেমন অ্যান্টি এস্টাবলিশমেন্ট, এজি ফ্যাশন, অলটারনেট ফ্যাশন, কাউন্টারকালচার এবং কাউন্টারফ্যাশন।
i অ্যান্টিক স্টাইল: পুরোনো দিনের কোনো স্টাইল। এখন ট্রেন্ডি নয়, কিন্তু একসময় বাজার মাতিয়েছে; প্রতিবছরই এ ধরনের স্টাইল নতুনভাবে ফিরে আসে ফ্যাশন ট্রেন্ডে।
i অ্যান্টি পিল: এটি একধরনের ট্রিটমেন্ট, যা পোশাকের ফ্যাব্রিকে দেওয়া হয়। ফলাফলে পোশাকটি অধিক সময় পর্যন্ত পরা যায়। অ্যান্টি পিল ব্যবহারে পোশাকে রিংকেল কমে আসে। সহজেই কুঁচকে যায় না পোশাক।
i কনটেম্পরারি স্টাইল: চলতি সময়ে যে ধরনের ফ্যাশনে মানুষ বেশি অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে, সেগুলো এই স্টাইলের আওতায় পড়ে।
i কনজারভেটিভ স্টাইল: নিজের সংস্কৃতি থেকে নেওয়া হয় যে স্টাইল, সেটি কনজারভেটিভ স্টাইল।
i কস্টিউম: কস্টিউম মানে নির্দিষ্ট থিমনির্ভর পোশাক। সব ধরনের পোশাকই কস্টিউম—এই ধারণা সঠিক নয় বলা যেতে পারে।
i ক্রেজ: হাজার রকমের ফ্যাশনের মধ্য থেকে খুব অল্প সময়ে নির্দিষ্ট একটি ফ্যাশন যদি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, অনেকেই যদি সেটি গ্রহণ করে, তবে সেই ফ্যাশনকে বলা যেতে পারে ফ্যাশন ক্রেজ।
i ড্রেপিং: শাড়ির বিস্তারিত বর্ণনায় এই ড্রেপিং শব্দ বেশ শোনা যায়। শব্দটি মূলত বোঝায় দেহের সঙ্গে ফ্যাব্রিক সাবলীলভাবে ঝুলিয়ে রাখার কায়দাকে।
i ডাবল ডেনিম: দেহে পোশাক জড়ানোর সময় একটির বেশি ক্লদিং আইটেম যদি ডেনিমে তৈরি করা হয়, তাহলে ডাবল ডেনিম টার্মটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
i এথনিক: দেশীয় ঐতিহ্য ফুটে ওঠে যার মাধ্যমে, সেটিকে এথনিক বলা হয়।
i ফ্যাশন আইকন: এমন একজন ব্যক্তি, যিনি তার স্টাইলের জন্য সবার মাঝে দারুণ জনপ্রিয়। অর্থাৎ যার নিজস্ব ফ্যাশনধারা আছে। যার ফ্যাশন অনুপ্রাণিত করে অনেককেই। যেমন ভিক্টোরিয়া বেকহাম, কেট মিডলটন কিংবা হ্যারি স্টাইলস।
i ফ্যাশনিস্তা: ফ্যাশনের প্রতি অনুরাগ যার প্রবল, এমন মানুষকে বলা যেতে পারে ফ্যাশনিস্তা। এই টার্মে তাদের নামই আসবে, যারা সব সময় ফ্যাশন অনুযায়ী পোশাক বেছে নিতে উৎসাহী থাকেন।
ফ্যাশন ভোকাবুলারির রাজ্য বিশাল। তাই শব্দের সঠিক অর্থ এবং তার ব্যবহার জানার চেষ্টা করা চাই।

i সারাহ্ দীনা
ছবি: ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top