skip to Main Content

ত্বকতত্ত্ব I সরস ত্বকযত্নে

সৌন্দর্যচর্চার বেসিক যাদের নখদর্পণে, তাদের জন্য। নতুন এ স্কিন কেয়ার রুটিন নেক্সট লেভেল প্লেয়ার হয়ে উঠতে

নিয়মিত সানস্ক্রিন মাখা, ঘুমানোর আগে ভালোভাবে মুখত্বক পরিষ্কার, ব্রণ নিয়ে অযথা খোঁটাখুঁটি না করা—এমন সব উপদেশ শুনতে শুনতে মোটামুটি মুখস্থ হয়ে যাওয়ার কথা। এবার প্রয়োজন লেভেল আপ। সৌন্দর্যসংক্রান্ত জ্ঞান আরও শাণিয়ে নিতে।
সকাল যখন সৌন্দর্যসূচক
রাতে করা ত্বকযত্ন আদতে কতটুকু কাজ করছে, তা বোঝার সবচেয়ে সহজ উপায়? সকালে ঘুম থেকে উঠেই আয়নায় চেহারা দেখা। বিশেষজ্ঞদের এমনটাই পরামর্শ। সকালে ত্বকের অবস্থা বুঝে রাতের রূপচর্চায় অদলবদল করে নেওয়া গেলে পরিবর্তন চোখে পড়বেই। যেমন সকালে যদি ত্বক বেশি শুষ্ক অথবা টান টান অনুভূত হয়, এর অর্থ হচ্ছে, পর্যাপ্ত আর্দ্রতার জোগান মিলছে না। আর প্রতিদিন সকালে যদি ত্বকে নিত্যনতুন ব্রণের দেখা মেলে, বুঝতে হবে রাতের রূপরুটিনে কিছু সমস্যা আছে। তাই ছুটির দিনগুলো বেছে নিয়ে ডায়েট, ব্যায়াম, পানি পানের পরিমাণ আর কিছু বিউটি প্রোডাক্ট অদলবদল করে দেখা যেতে পারে।
বছরজুড়ে বিশেষজ্ঞ তত্ত্বাবধান
নিয়মিত রূপচর্চা অবশ্যই স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বকের জন্য জরুরি। কিন্তু বিশেষায়িত ইন অফিস ট্রিটমেন্টের গুরুত্ব এড়ানোর উপায় নেই একদমই। আলট্রাথেরাপি, সফটওয়েভ, মাইক্রোনিডলিং, আরএফ, ফ্রাক্সেলের মতো ট্রিটমেন্টগুলোর ফল চমকপ্রদ। ব্রাইটেনিং, লাইট স্কিন রিসারফেসিং, কোলাজেন বিল্ডিং সম্ভব এগুলো দিয়ে। সামান্য বেশি পয়সা খরচ করে বছরে একবার এ ট্রিটমেন্টগুলো নিলেও দীর্ঘ মেয়াদে মিলবে সুবিধা। পরে কম পয়সা খরচ করতে হবে ত্বকযত্নের পণ্য কিনতে। বড় বড় বুলি দেওয়া বিউটি প্রোডাক্ট যেগুলো আদতে মোটেই কাজের নয়, সেগুলো লিস্ট থেকে বাদ দিতেও বাধবে না আর।
উইন্ডো সিটে সাবধান
বেড়াবার এক্সাইটমেন্টে ত্বকের বারোটা বাজিয়ে ফেললে কিন্তু বিপদ। বিশেষ করে প্লেনের উইন্ডো সিটে বসে। যাদের কাছে ত্বকের গুরুত্ব বরাবরই বেশি, তাদের এ ব্যাপার এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। উচ্চতার কারণে স্বাভাবিকভাবে সেখানে সূর্যরশ্মির বিচ্ছুরণ মাত্রাতিরিক্ত। নিয়মিত এক্সপোজের কারণে তাই পাইলট এবং এয়ারলাইন ক্রু মেম্বারদের টেকনিক্যালি রেডিয়েশন ওয়ার্কারের কাতারে ফেলা হয়। আর যারা কোনোভাবেই স্কাইভিউ মিস করতে চান না, তাদের জন্য একটাই উপায়, অবশ্যই এসপিএফ ৩০+ মাখা চাই। নির্দিষ্ট সময় পর পর রিঅ্যাপ্লাইও করতে হবে। আর উইন্ডোর শাটার যতটা পারা যায়, বন্ধ রাখলেই ভালো।
তেলে ত্বক তাজা
সে যদি ত্বক তৈলাক্তও হয়, তবু জরুরি। যাদের জানা নেই, তাদের কাছে এ তথ্য থাকা চাই। কারণ, ত্বক তৈলাক্ত হলে রূপচর্চা থেকে সবচেয়ে আগে বাদ পড়ে তেলতেলে অয়েল বেসড পণ্যগুলো। খুব বেশি ভারী ময়শ্চারাইজার এ ক্ষেত্রে তালিকায় পড়ে গেলে খুব বিপদ নেই। তবে অয়েল বেসড ক্লিনজারগুলো কিন্তু দারুণ গেম-চেঞ্জার। প্রতিদিনকার ব্যবহৃত নানা পণ্য, এসপিএফ, কনসিলার, ফাউন্ডেশন, পাউডার, সেটিং স্প্রে, ধুলা-ময়লা এমনকি হেয়ার প্রোডাক্টও নিমেষে দূর করে দিতে সক্ষম। শুকনা ত্বকে মেখে নিতে হবে মাসাজ করে। তারপর ধুয়ে নিতে হবে পানি দিয়ে। তারপর দ্বিতীয় দফা মুখ ধুতে হবে ওয়াটার বেসড ক্লিনজার দিয়ে। ত্বক ডিপ স্কিন হবে কিন্তু আর্দ্রতার ওপর প্রভাব না ফেলে।
ওয়াশক্লথের উষ্ণতায়
অনেকটা স্কিন ফ্লাডিং অনুপ্রাণিত। তবে তারচেয়েও সহজ। এটা তাদের জন্য বিশেষভাবে কার্যকর, যারা সকালে উঠে আলাদা করে মুখ ধোয় না, বা ত্বক ধোয়ার পর আর্দ্র থাকা অবস্থায় প্রয়োজনীয় স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টটি মাখতে ভুলে যায়। উষ্ণ পানিতে ওয়াশক্লথ ভিজিয়ে নিংড়ে নিয়ে মিনিটখানেক মুখত্বকের ওপর দিয়ে রাখতে হবে। অবশ্যই স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট মাখার আগে। এতে ত্বকে ভেজা ভেজা আর্দ্র ভাব তৈরি হবে। এমন অবস্থায় ব্যবহৃত যেকোনো পণ্য ত্বক শুষেও নেবে কার্যকরভাবে এবং দ্রুত। ক্রিম বা তেল; যা-ই মাখা হোক না কেন, ত্বক হয়ে উঠবে পরিপুষ্ট। এর সঙ্গে যদি জেড রোলারের মতো স্কিন কেয়ার টুলগুলো ব্যবহার করা যায়, তাহলে তো সোনায় সোহাগা।
আইব্রাও এড়িয়ে
মুখে সেরাম বা ক্রিম মাখার সময় কজনই-বা এটা খেয়াল করে? কিন্তু এতে করে ব্রণ, আইব্রাওয়ের চুল বাড়ার সমস্যা এমনকি ব্রাও ড্যানড্রাফও হতে পারে। তাই মাথার চুলের মতোই এই অংশের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। আদতেও তো একই ধরনের। নতুবা ময়শ্চারাইজার, সানস্ক্রিন, ফাউন্ডেশন ব্রাওয়ের ত্বকের হেয়ার ফলিকলের মুখ আটকে বাড়তে তো দেবেই না, সঙ্গে ঝরেও পড়তে পারে। তাই ব্রাওয়ের জায়গাটা হালকা হতে শুরু করলে ধরে নেওয়াই যায়, ক্রিমের কারণে ঘটনা ঘটছে। তাই মুখ ধোয়ার সময় আইব্রাওকে আলাদা গুরুত্ব দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। মাঝেমধ্যে সামান্য শ্যাম্পু আর কন্ডিশনারও ব্যবহার করা যেতে পারে।
লিমফেটিক মাসাজ
লিমফেটিক ফ্লুয়িড প্রাকৃতিকভাবে নিজে নিজেই নড়াচড়া করে। কিন্তু এর গতি শ্লথ হয়ে যেতে পারে। লিমফেটিক ড্রেইনেজের মাধ্যমে একে উদ্দীপ্ত রাখার ব্যবস্থা করা যায়। লিম্ফ গ্রন্থির দিকে ফ্লুয়িডকে ধাবিত করে। এই গ্রন্থিগুলো নিশ্চিত করে পরিশুদ্ধ তরল যেন রক্তে প্রবাহিত হয় এবং দূষণ যেন লিভার ও কিডনির মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত হয়ে দেহ থেকে বেরিয়ে যায়। লিমফেটিক মাসাজের মাধ্যমে পুরো ব্যাপারটা ঘটে। এতে মানসিক স্বস্তি মেলে; সেই সঙ্গে চেহারা পায় ডিটক্সিফায়িং, কনট্যুরি এবং রিজুভিনেটিং ইফেক্ট। ত্বক হয়ে ওঠে উজ্জ্বল, আর্দ্র ও টান টান।

 বিউটি ডেস্ক
মডেল: শ্রাবণী
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: কৌশিক ইকবাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top