skip to Main Content

ই-শপ I অন্তর্জালে আয়োজনযোগ

হলুদ কিংবা মেহেদির অনুষ্ঠানের জাঁকজমক বেড়েই চলেছে। সঙ্গে বাড়ছে এসবের আনুষঙ্গিক কাজ। স্টেজের ধরন কিংবা ডেকোরেশন, অথবা কনের সামনে সাজানো খাবার- সবকিছুতেই আসছে নতুনত্ব। হলুদ আর মেহেদিতে কনের সাজেও থাকতে হয় আভিজাত্যের ছোঁয়া। এই সবকিছুর ঝামেলা যদি চুকে যায় অনলাইনে? কাজের ভার কমে যায় অর্ধেকটা। অনেক পেজই এখন কাজ করছে এসব নিয়ে।
হলুদের ফ্লোরাল গয়নার কথা ভাবলে শুরুতেই যে পেজের নাম আসে, তা হচ্ছে ‘উৎসাহ’। এর উদ্যোক্তা মোনামী সাঞ্জিয়া বড় হয়েছেন খুলনায়। মাকে সেলাইয়ের কাজ করতে দেখে দেখে বড় হয়েছেন তিনি। ফলে শৈশব থেকে আর্ট অ্যান্ড ক্র্যাফটস কিংবা পেইন্টিংয়ের প্রতি তার ঝোঁক। তবে ব্যবসায়িকভাবে কাজের শুরু অনেক পরে। সাত বছরের বেশি সময় ধরে করা অনলাইন ব্যবসায় নানা রকম প্রডাক্ট তৈরি করেন তিনি। একদিন এক আত্মীয়ার জন্য হলুদের ফুলের গয়না খুঁজতে গিয়ে বুঝলেন, রুচিসম্মত ফ্লোরাল জুয়েলারির অভাব কত তীব্র। ২০১৫ সালে শুরু করেন নেপাল থেকে আনা টিবেটান আর এথনিক অর্নামেন্ট বিক্রি। তাদের প্রডাক্ট লাইনের মূল অংশ হলো টিবেটান জুয়েলারি। এসব গয়না বিভিন্ন ডিজাইনের হয়ে থাকে। আর ডিজাইনভেদে দরদামের তারতম্যও লক্ষ করা যায়। সবশেষে প্রডাক্ট লাইনে যোগ করেন আর্টিফিশিয়াল ফুলের গয়না। সব প্রডাক্টেই সমানভাবে সাড়া পায় পেজটি। এর ফলোয়ার ১ লাখ ২৫ হাজারের কাছাকাছি। আউটফিটের সঙ্গে মানিয়ে নিজের পছন্দের গয়না তৈরি করে নেওয়ার জন্য এর চেয়ে ভালো জায়গা কনেরা হয়তো পাবেন না। মোনামী বলেন, ‘একজন কনের বিয়ের স্বপ্নের একটা বড় অংশজুড়ে থাকে ফ্লোরাল ব্রাইডাল জুয়েলারি, তার জীবনের এই সবচেয়ে বড় ইভেন্টের অংশ হতে পারা আমার জন্য অনেক বেশি অনুপ্রেরণার।’
পেজটির ফেসবুক লিঙ্ক: https://www.facebook.com/Utshaho/

এই কাজের অংশ হিসেবে গুলশান-বাড্ডা লিঙ্ক রোডে নিজেদের ওয়ার্কশপে সম্প্রতি করেছেন প্রডাক্ট ডিসপ্লের ব্যবস্থা। অর্থাৎ মূলত অনলাইন শপ হলেও যেসব ক্রেতা একটু দেখে-বুঝে পণ্য কিনতে চান, এই তাদের জন্য। মোনামী বলেন, ‘এখন অনলাইন পেজের ব্যাপক প্রতিযোগিতার ফলে অনেকেই আমাদের ছবি নিয়ে তাদের নিজেদের পেজে দেন, এ ক্ষেত্রে প্রডাক্টের ম্যাটেরিয়াল আর তৈরির দক্ষতা কখনোই এক হয় না।’ ক্রেতাদের বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। পেজটিতে মালা থেকে শুরু করে চুড়ি- সব ধরনের ফ্লোরাল গয়না পাওয়া যাবে। ব্রাইডাল জুয়েলারি ফুল সেটের দাম পড়বে ডিজাইন ও ম্যাটেরিয়ালভেদে ২৬০০ থেকে ২৮০০ টাকার মধ্যে। এর মধ্যে থাকবে নেক পিস, টায়রা-টিকলি, চোকার, বাজু, হ্যান্ডব্যান্ড, কানের দুল, আংটি ইত্যাদি। এ ছাড়া ব্রাইডসমেটের সেটের দাম শুরু ১৫০০ টাকা থেকে। আর সিঙ্গেল আইটেম কিনতে চাইলে দাম আসবে ৭৫ থেকে ৬৫০ টাকার মধ্যে। গাজরার দাম ৯৫০ থেকে ১০৫০ টাকা।
বিয়ের অনুষ্ঠানের মতো অনেকে হলুদ কিংবা মেহেদিতেও সব কাজের ভার ইভেন্ট ফার্মগুলোকে দেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে খরচ বেড়ে যায় অনেক। অন্যদিকে, ছোটখাটো করে প্রোগ্রাম করলে ডালা-কুলা সাজানো থেকে শুরু করে বউয়ের সামনের খাবারের সাজসজ্জা, মেহেদির ডালা এমনকি ব্রাইডাল মেহেদি দেওয়া- সবকিছুর ভার নেয় অনেক অনলাইন পেজ। এগুলোর একটি ‘ডেকোরেশনস অব হলুদ অ্যান্ড মেহেন্দি’ পেজ। এর ফেসবুক লিঙ্ক: https://www.facebook.com/decorationHM/
পড়ালেখার পাশাপাশি সৃষ্টিশীল কাজ এবং তার থেকে হাতখরচ জোগাড়ের ভাবনা থেকেই ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে এই পেজ খোলেন নুসরাত জাহান। খুব সুন্দর মেহেদি দিতে পারতেন নিজেই, কাছের কিছু বন্ধু জানতেন ফ্রুট কার্ভিং আর ডালা সাজানোর কাজ। ব্যস! সব মিলিয়ে শুরু করে দিলেন এই ই-শপ। বান্ধবী আফসানা তার পেজ পরিচালনার সঙ্গী। দুজন মিলে করে দেন ডালা, কুলা, পানের ডানা, ফ্রুটস কার্ভিং ইত্যাদি। এ ছাড়া ছোট প্রোগ্রামের স্টেজ সাজানো কিংবা টেবিল, এমনকি ফ্লোরাল গয়নার ব্যবস্থাও করে দেন তারা। খুব কম খরচেই। ডালা সাজাতে খরচ ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে, টেবিল ডেকোরেশনের প্যাকেজগুলো ৩০০০ টাকার মধ্যে। এ ছাড়া বাকি সাজসজ্জা কিংবা মেহেদির দাম পড়বে কনের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে, তবে কোনোটাই সাধ্যের বাইরে নয়।
নুসরাতের ইচ্ছা আরও বড় পরিসরে পুরোদস্তুর ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্মে পেজটিকে গড়ে তোলা এবং পেজটিকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া, যাতে বাংলাদেশে হলুদ কিংবা মেহেদির অনুষ্ঠানের ডেকোরেশনের কথা এলেই সবার মাথায় এই পেজের নাম আসে। এই লক্ষ্যে শিগগিরই নিজস্ব অফিস নেওয়ার কথাও ভাবছেন তারা। নুসরাত বলেন, ‘খুব ভালো লাগে যখন পুরোনো অনেক কাস্টমার নতুন কাস্টমারদের কাছে আমাদের কাজ রেফার করে, তাদের ভালো সার্ভিস দেওয়া আমাদের কাছে নতুন একেকটা মাইলফলক তৈরি করে।’

 শিরীন অন্যা
ছবি: উৎসাহ ও ডেকোরেশন এইচএম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top