দর্শকদের নিশ্চয়ই মনে আছে জেমস ক্যামেরন নির্মিত ‘অ্যাভাটার’ চলচ্চিত্রের কথা। ১৩ বছর আগে মুক্তি পাওয়া সেই সিনেমা এ পর্যন্ত চলচ্চিত্র জগতের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি আয়ের রেকর্ড ধরে রেখেছে। ২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়ার পর চলচ্চিত্র জগতে হইচই ফেলে দিয়েছিল ওই সময়ে সম্পূর্ণ নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে নির্মিত ‘অ্যাভাটার’। সিনেমাটি এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ২৮০ কোটি ডলারের বেশি আয় করেছে, যা সর্বকালের সর্বোচ্চ। ওই বছর অস্কারের নয়টি বিভাগে মনোনয়ন পেয়ে তিনটি পুরস্কার জিতে নেয় সিনেমাটি। এরপর থেকেই অগণিত দর্শকের অপেক্ষা পরবর্তী ছবির জন্য। আগামী ১৬ ডিসেম্বর সেই অপেক্ষার অবসান ঘটাতে পর্দায় আসছে নতুন ছবি ‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’। তবে তার আগেই পর্দায় ফিরেছে পুরনো ‘অ্যাভাটার’। ২৩ সেপ্টেম্বর আবারও মুক্তি পেয়েছে রেকর্ড গড়া এই ছবি। এবার ছবিটি দেখানো হবে ফোরকে (৪শ) হাই ডায়নামিক রেঞ্জ ফরম্যাটে। তবে মাত্র দুই সপ্তাহ ছবিটি প্রদর্শনের পরিকল্পনা করেছেন নির্মাতারা। ‘অ্যাভাটার’ ওটিটিতে মুক্তি পেয়েছে বহু বছর আগেই। তবে সিনেমা হলে চলাকালে ছবির ওটিটি স্ট্রিমিং বন্ধ থাকবে বলে জানা গেছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশের স্টার সিনেপ্লেক্সে ছবিটি দেখতে পারবেন দর্শকরা।
জেমস ক্যামেরনের ‘টারমিনেটর টু’ ছবিটি তাবৎ দুনিয়ার বক্সঅফিসে ঝড় তোলার পরপরই পরিচালক ভেবেছিলেন অ্যাভাটার নির্মাণের কথা। ১৯৯৪ সালে এর জন্য ৮০ পৃষ্ঠার একটি চিত্রনাট্য লিখেন ক্যামেরন। কিন্তু ছবিটি বানানোর মতো প্রযুক্তির অভাবে বাক্সবন্দি করেন পরিকল্পনা। নির্মাণ করেন টাইটানিক। রেকর্ড পরিমাণ ব্যবসাসফল এই ছবি জিতে নেয় নয়টি অস্কার। ২০০৫ সালে ক্যামেরনের প্রতীক্ষার অবসান হয়। থ্রি-ডি প্রযুক্তির ভার্চুয়াল ক্যামেরা ও অন্যান্য যন্ত্রানুষঙ্গ চলে আসে হাতের নাগালে। অ্যাভাটার নির্মাণে জেমস ক্যামেরন ব্যবহার করলেন সর্বাধুনিক সিনেমাটিক গ্রাফিক্স। স্টোরিওস্কোপিক সাউন্ড সিস্টেমও এই প্রথম কোনো ছবিতে ব্যবহার করা হলো।
খুব স্বাভাবিকভাবেই এবারের ছবি ‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’ নিয়ে দর্শকদের কৌতুহল এখন চূড়ায়। এবার লড়াই চলবে জলে। সে লড়াই কেমন হবে, তার কিছু ধারণা দর্শকদের দিতে প্রকাশ করা হয়েছে সিনেমার ট্রেইলার। টিজারে দেখা গেছে, জেমস ক্যামেরন এবার একটি জলজ জগত সৃষ্টি করেছেন দর্শকদের জন্য। এ পর্বে আরও বেশি কাল্পনিক চরিত্রের সমাহার ঘটিয়েছেন তিনি। অ্যাভাটারের ভেরিফায়েড ফেসবুকে টিজার প্রকাশের ১৯ ঘণ্টার মধ্যেই তা ভাইরাল হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ব্যাপক প্রশংসা কুড়াচ্ছে এটি। আর এতেই স্পষ্ট কতটা অধীর আগ্রহে সিনেমাটির জন্য অপেক্ষা করছেন ভক্তরা। এই আগ্রহের পালে নতুন করে হাওয়া লেগেছে পুরনো ‘অ্যাভাটার’-এর আবার পর্দায় ফিরে আসার খবরে। ১৩ বছর আগে ছবিটি যারা দেখেছেন তারা যেমন নস্টালজিক হতে পারেন, অন্যদিকে যারা দেখেননি তারা সুযোগটা লুফে নিতে পারেন। এমন একটি ছবি পর্দায় দেখার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবেন না অনেকেই।